আচ্ছালামু আলাইকুম- আমি মোঃ আকরাম হোসেন, হাতিয়া পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক, পিতা: মাহফুজুর রহমান হাসু, ৭নং ওয়ার্ড, হাতিয়া পৌরসভা, হাতিয়া, নোয়াখালী। দাদা মুজাফ্ফর আহাম্মদ, তৎকালীন গ্রাম সরকারের দায়িত্ব পালন করেন। চাচা জসিম উদ্দিন, ছাত্রদল ও যুবদলের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন। চাচা আকতার হোসেন, চরঈশ^র ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজের ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। বর্তমানে পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক। বড় ভাই মিরাজ উদ্দিন, পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড যুবদলের নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মেঝো ভাই নিজাম উদ্দিন, দলের সক্রিয় কর্মী। ছোট ভাই মুফতি হাবিবুর রহমান সোহেল, নব নির্বাচিত হাতিয়া উপজেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব এর দায়িত্ব পালন করেন।
আমার রাজনৈতিক জীবনের পদযাত্রা ২০০৯সালে ওয়ার্ড ছাত্রদলের একজন সমর্থক হিসেবে। আমার পরিবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আদর্শিত এবং ১৯ দফা কর্মসূচীর প্রতি বিশ্বাসী আমার পরিবার, সেই পরিবারের আমার জন্ম। যার কারণে আমার রক্তে মিশে ছিলো শহীদ জিয়ার আদর্শ। দেশের পরিবর্তীত পরিস্থিতির কারণে আমার পরিবার রাজনীতির প্রতি অনিহা থাকার পরেও আমি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ি।
পরিবারের বিরোধীতার কারণে আমাকে বাড়ী থেকেও বের হয়ে যেতে হয় এবং আমার স্থান হয় তখনকার সময় হাতিয়া উপজেলা বিএনপি’র নেতা প্রকৌশলী আমিরুল মোমিন বাবলু সাহেবের বাসা (বিএনপি’র কার্যালয়) অবস্থান করতে হয়। সেখান থেকে আমি আরো বেশি করে দলীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ি। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চক্রের রোশানলে তাদের এই দুঃশাসনে আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও করা হয়। নোয়াখালী এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অনেক কারা ভোগ করতে হয়। এমনকি আমার ডিগ্রী পরীক্ষার সময়ও পুলিশী হয়রানীর স্বীকার হতে হয়।
হাতিয়ার তৎকালীন আওমীলীগের ক্ষমতাদর ব্যক্তি মোহাম্মদ আলীর বিপক্ষে ভোট করায় পৌরসভা নির্বাচনের দেড় মাস পরে তার লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী বাহিনী আমার উপর হামলা করে। মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে আমার দুই পা এক হাতসহ আমার সারা শরীর ক্ষত বিক্ষত করে ফেলে। সাবেক হাতিয়া পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি মাষ্টার গিয়াস উদ্দিন সাহেবের বাড়ীর বাগানের এক কোনে আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসী ও আমার দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সাথে সাথে আমাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। যার কারণে আমাকে দীর্ঘ ৩ মাস ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। সেখানে আমাকে হাসপাতালে জেলা এবং কেন্দ্রীয় অনেক নেতৃবৃন্দ দেখতে আসে এবং আমাকে আশ^স্ত করে বিএনপি’র সুদিনে আমাকে এর প্রতিদান দেওয়া হবে।
২০০৯-২০২৫ সাল পর্যন্ত আমার এই বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে কখনো ছাত্রদল কখনো স্বেচ্ছাসেবক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করছি। ২০১১ সালে হাতিয়া পৌরসভার ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এবং পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব পালন করি। ২০১৪ সালে হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করি। অন্যদিকে জনাব মুহাম্মদ ফাহিম উদ্দিনকে আহবায়ক করে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করার পর কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কসহ একাধিক নেতাকর্মী নিস্ক্রিয় হওয়ার কারণে আমি উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করি। হাতিয়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ছাত্রদলের কমিটি গুলো সম্মেলনের মাধ্যমে আমার ও ফাহিমের যৌথ স্বাক্ষরে অনুমোদিত হয়। দলের এই দুঃসময়ে আমরা হাতে গনা ২/৪ জন ছাত্রনেতা দলের দায়িত্ব পালন করছি।
ফ্যাসিষ্ট খুনি হাসিনার নির্দেশে আপোষহীন নেত্রী, দেশনেত্রী সাবেক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে তাঁর বাড়ী থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক আমরা বৃহত্তর নোয়াখালীর মধ্যে শতাধিক ছাত্রনেতাকে নিয়ে সর্বপ্রথম হাতিয়া উপজেলাতে অশ্রুসিক্ত নয়নে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় অবস্থান নিই। এমন মুহুর্তে খুনি হাসিনার গুন্ডা বাহিনী ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এমনকি পুলিশলীগ আমাদের উপর বেদম লাঠি চার্জ করে ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
২০২১ সালে আমার জনপ্রিয়তার কারণে হাতিয়া পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড হতে হাতিয়া উপজেলা বিএনপি আমাকে কমিশনার পদে মনোনয়ন দান করে। আমিও বিএনপি’র আদর্শে আদর্শিত হয়ে আমার ওয়ার্ডের জনগনকে নিয়ে ভোট যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি। আমার প্রতিপক্ষ হিসেবে হাতিয়া আওমীলীগের নেতা সন্ত্রাসী মোহাম্মদ আলীর বাল্যবন্ধু আরেক সন্ত্রাসী দিদারুল ইসলাম খান টুনুকে আমার বিপক্ষে দাড় করায়। দীর্ঘ ২ মাস ভোট নয়। যেন এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। ভোটের আগের রাত্রে রাত ২টার সময় হাতিয়ার বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে মোহাম্মদ আলীর প্রায় ২ হাজার সন্ত্রাসী নিয়ে আমার বাড়ী ঘেরাও করে ফেলে। এলাকাবাসীর সহযোগিতা এবং আমার কর্মী সমর্থকদের প্রতিরোধের মুখে তারা পিচু হটতে বাধ্য হয়। এক পর্যায়ে তারা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে, এবং আমার জন্মদাতা পিতা ও মাতার গায়ে হাত দিতে দ্বিধাবোধ করেনি। পরদিন সকাল যখন ভোট শুরু হয় তারা আমার সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল করে। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া। এক পর্যায়ে তারা অস্ত্রের মুখে জনগনের অধিকার ভোট কেড়ে নেয়।
বরাবরই আমি একটি নীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম। বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। তাই আমি যথাযথভাবে সে নিয়ম পালন করে আসছি। আমি সাংগঠনিক রাজনীতির পক্ষে ছিলাম সবসময়। তাই অনেক সময় ব্যক্তির আস্তাভাজন হতে পারি নাই। প্রকাশ থাকে যে, আমি যখন নোয়াখালী জেলে ছিলাম তখন আমাকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এবং নজরুল ইসলাম আদনানকে সদস্য সচিব করে জেলা নেতৃবৃন্দ একটি কমিটি ঘোষনা করেন। কমিটির কাগজপত্র এখানো আমার কাছে রক্ষিত আছে। জেলে থাকাবস্থায় কিছু দিন পর পুনরায় জানতে পারলাম আমাকে উপজেলা থেকে বাদ দিয়ে পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক করা হয়েছে। এটা ছিল আমার নিয়তি।
বিএনপি’র আগামীর ভবিষ্যত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ও বেগম খালেদা জিয়ারযোগ্য উত্তোরসরি দেশনেতা জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য রেখে বাকী জীবন কাটিয়ে দিতে চাই। আমার একটি আবেদন থাকবে, যারা দলের দুঃসময়ে নির্যাচিত ছিলেন তাদেরকে যেন আগামী দিনে মূল্যায়ন করা হয়। একটি কথা না বললে নয় যে বা যারা বিগত দিনে এমপি ছিলেন তাদের কাছে কারণে অকারণে হাতিয়া দ্বীপের মানুষ যেতে বাধ্য ছিল, অথবা বাধ্য করা হয়েছিল। এতে সাধারণ মানুষের কোন অপরাধ নেই। সামনে যিনি সংসদ সদস্য হবেন তার কাছেও মানুষ যাবে। তবে মূল্যায়ন করতে হবে, কে অপকর্ম করেছেন, কে বা সঠিক কর্ম করেছেন। সেভাবে বিচার করা। আমি রাজনৈতিক দলের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে এটা আমার মুল্যায়ন।
হাতিয়া উপজেলা পৌরসভা বিএনপি’র ৫% নেতাও খুজে পাওয়া যাবে না যারা মোহাম্মদ আলীর কাছে যায়নি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলা ও বুঝার তাওফিক দান করুন। আমি পৌরসভা বিএনপি’র সদস্য সচিব পদপ্রার্থী। আমার দলের সকল স্তরের নেতাকর্মী এবং পৌরসভাবাসীর নিকট দোয়া চাই।
প্রিন্ট