আকাশ যেন নক্ষত্রহীন হয়ে গেলো! গাঁয়ের পথ ধরে আর হাঁটবেন না তিনি। কাঁধে ঝোলানো ওষুধের ব্যাগ আর মোটরবাইক নিয়ে হাসিমুখে ছুটে যাবেন না কোরো ডাকে। গভীর রাতে দরজায় কড়া নাড়লে বিরক্ত না হয়ে সান্ত্বনা মিশ্রিত কণ্ঠে আর বলবেন না‘ কোথায় রোগী? চিন্তা করো না, আমি দেখছি!’ রাতের আঁধারে যখন কারও জ্বর আসে, শিশু কাঁদতে থাকে, বৃদ্ধের কাশির পিনিক থামতে চায় না তখন অন্ধকার চিরে যে আলো এসে দাঁড়াতো, প্রকৃত সেবক, মানবতার ফেরিওয়ালা সেই এলাকায় আলো আজ নিভে গেছে চিরতরে!
ডা. তাজু আর নেই; গত ২ মার্চ ২০২৫ রবিবার এলাকাবাসীকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে! এই মানুষটিকে হারিয়ে যেন এই কথাটা বিশ্বাস করতে আর মনকে বোঝাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তিনি ছিলেন আমাদের গাও গ্রামের প্রাণ ব্যথার মাঝেও শান্তির নাম, অসুখের মাঝেও নির্ভরতার প্রতীক গ্রামের প্রত্যেকটি ঘরের কেউ না কেউ তাঁর ছোঁয়া পেয়েছে কখনো চিকিৎসার, কখনো সান্ত্বনার, কখনো বা ভালোবাসার, এই মানুষটার জীবনে ছিলো না কোনো ক্লান্তি, ছিলো না বিরক্তি, ফোন করে কেউ বলল ডাক্তার সাহেব, একটু দেখতে আসবেন তখনই শত ব্যস্ততা বা বিশ্রাম ভুলে ছুটে গেছেন সে ডাক দেয়া রোগীর পাশে ।
কিন্তু আজ তিনি চলে গেলেন! রেখে গেলেন অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা আর হাহাকার! তিনি ছিলেন এলাকার সবার জন্য চিকিৎসা জগতের এক অলিখিত অভিভাবক। অথচ আজ সবাই অভিভাবকহীন হয়ে গেলেন! জীবনের নিষ্ঠুর জগত থেকে সবার সাথে সত্য এমন মানুষরাও একদিন চলে যেতে হবে । বোয়াল খালী উপজেলার চরন্দ্বীপ গ্রামের হাজীপাড়া সৈয়দ ঈদুল হাজী জামে মসজিদ কমপ্লেক্সের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও চরনদ্বীপ ইউ সি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মরহুম হাজী ডাঃ তাজুল ইসলাম (৪৪)।
মৃত্যকালে স্ত্রী, এক ছেলে এক মেয়ে সহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে যান। মরহুম হাজী ডাঃ তাজুল ইসলাম ১৯ ৯৭ সালে কৃতিত্বর সাথে চরনদ্বীপ ইউ সি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তীতে ডিপ্লোমা করে পল্লী চিকিৎসক কোর্স শেষ করে এলাকায় সুনামের সাথে চিকিৎসা পেশায় নিজেকে আত্ব নিয়োগ করেন।
প্রিন্ট