রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে একযোগে রেল ও সড়ক পথ উদ্বোধন করা হবে। আমরা আশা করছি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের শুরুতে যেন সড়কপথের পাশাপাশি ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচল করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুতে সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইনের কাজ ইতোমধ্যে বেশিরভাগই হয়ে গেছে বলে জানান রেলমন্ত্রী।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অবস্থিত রেল সংযোগ প্রকল্পের স্লিপার কারখানার উৎপাদন পরিদর্শনকালে নূরুল ইসলাম সুজন এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৮ কিলোমিটার রেললাইনের স্লিপার চীনের এই কোম্পানি থেকেই তৈরি হবে। স্লিপার কোম্পানির বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে কাজের মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন রেলপথ মন্ত্রী।
সিআরইসির প্রকল্প পরিচালক ওয়াং কুন রেলমন্ত্রী ও আগত অতিথিদের জানান, স্লিপার লেইং সেটিংয়ে বর্তমানে ২০০ স্থানীয় কর্মী কাজ করছেন। তারা সিআরইসির সিনিয়র চীনা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পেশাদার প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন।
চলতি বছরের ২২ আগস্ট থেকে কারখানাটি ছোট পরিসরে উৎপাদন শুরু করে। এখন পর্যন্ত কারখানাটি ভালোভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক ওয়াং কুন।
সিআরইসির তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন বাংলাদেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা পরিদর্শনকালে রেলপথ মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন- রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক শামসুজ্জামান, পিবিআরএলপি প্রকল্প পরিচালক ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সিআরইসির প্রকল্প পরিচালক ওয়াং কুন, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-আমিন মিয়া, ভাঙ্গা থানার ওসি লুৎফর রহমানসহ কর্মকর্তারা।
ফরিদপুরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (১ম ও ২য় পর্যায়) এবং পাচ্চর-ভাঙ্গা মহাসড়ক চার লেনে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের মাঝে ক্ষতিপূরণের ১২ কোটি ৩৪ লাখ ৫৮০ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ফরিদপুরের তিনটি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিকদের মাঝে প্রায় ৪৬৮ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
সর্বশেষ বুধবার বিকালে জেলার ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৩০০ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির মাঝে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জমি অধিগ্রহণের চেক বিতরণ করা হয়।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা, ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুর রহমান খান, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. আসাদুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আল-আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ১ম ও ২য় পর্যায়ে সবমিলিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা, নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার প্রায় ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ পর্যন্ত এসব জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রথম পর্যায়ে ২৭০ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। এর বাইরে বুধবার আরও ৩০০ জনের মাঝে এ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হল।
জমি অধিগ্রহণের এসব চেক বিতরণে অযথা দুর্ভোগ লাঘবের উদ্দেশ্যে এখন থেকে প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা হতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চেক বিতরণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
প্রিন্ট