মোঃ আলম মৃধাঃ
নরসিংদীতে অবৈধ গ্যাস বিক্রি বন্ধের দাবিতে ও প্রশাসনের পদক্ষেপ কামনায় পুনরায় মানববন্ধন করেছে নরসিংদী জেলা রেন্ট-এ-কার মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন ও মাইক্রোবাস চালকেরা। গত (৩ মার্চ) সোমবার নরসিংদী সদর উপজেলার মোড়ে প্রেসক্লাবের সামনে “সবাই মিলে শপথ করি, অবৈধ গ্যাস সিন্ডিকেট বন্ধ করি” এই স্লোগানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে, নরসিংদী জেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন সিএনজি পাম্পে গিয়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটানোর সতর্কবার্তা দেন তারা। সোনারগাঁ ফিল্ম স্টেশন নামে সিএনজি পাম্পে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি করছে স্থানীয় বেশিরভাগ সিএনজি পাম্পগুলো। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম পেয়ে শতাধিকের বেশি সিলিন্ডার লাগানো কন্টেনারে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। এবং এই অবৈধ গ্যাস বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হচ্ছে সিলিন্ডার লাগানো কন্টেনারগুলোর মাধ্যমে।
তারা আরো বলেন, এইসব কন্টেনারে থাকা সিলিন্ডার যদি বিস্ফোরিত হয়, আশেপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কিছু থাকবে না, সবকিছু মাটির সাথে বিলীন হয়ে যাবে। এতে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এই দায় কে নেবে?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কন্টেনারে অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে শিবপুরের পাঠান সিএনজি, মাধবদীর এম এম কে সিএনজি ফলিং স্টেশন, নরসিংদীর ভুঁইয়া সিএনজি, সোনারগাঁও সিএনজি, হান্নান সিএনজি, স্টার সিএনজিসহ একাধিক সিএনজি পাম্পে। এই গ্যাসগুলো কন্টেনারে করে নরসিংদী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজার, গাজীপুরসহ বিভিন্ন কারখানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, এসব কন্টেনারে শতাধিক সিলিন্ডার থাকে, যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা। এতে পানির মতো ক্ষতি হতে পারে শত শত সাধারণ মানুষের। অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি যাতে বন্ধ না হয়, সে কারণে সোমবার বিকাল থেকে জেলার ২২টি ফিলিং স্টেশনে সেবা দেওয়া বন্ধ রাখে স্টেশন মালিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, অবৈধ গ্যাস বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ী। মোটা অংকের খামের বিনিময়ে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। এই কারণেই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ কন্টেনারে গ্যাস বিক্রি।
গত (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর সাহেপ্রতাব মোড়ে অবৈধভাবে কন্টেনারে গ্যাস বিক্রি বন্ধে মানববন্ধন ও কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় এলাকাবাসী, শ্রমিক ইউনিয়ন, বিভিন্ন গাড়ির মালিক ও ড্রাইভাররা। ওই সময় মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। এইসব কন্টেনারে গ্যাস দেওয়ার কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়, ফলে সাধারণ মানুষ ও অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন। তাই অবৈধ কন্টেনারে গ্যাস বিক্রি বন্ধে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সুশীল সমাজ ও সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা।
প্রিন্ট