ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

লালপুরে মাদকের ভয়াল থাবায় ঝুঁকিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম

রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ

 

নাটোরের লালপুরে মাদকের ভয়াল থাবায় মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত এই জনপদের অসংখ্য মানুষ এখন নেশায় আসক্ত। নেশার টাকা যোগান দিতে ঘটছে চুরি, ডাকাতি, মারামারি, ছিনতাই, অবৈধ হ্যাকিং ও হত্যার মতো ঘটনা। গত ১ মাসে উপজেলায় মাদক বিক্রয় ও সেবনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে সুকুমার নামে একজন দিবালোকে খুন হয়েছেন।

 

ফেনসিডিলসহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২ ইমো হ্যাকার। স্কুলের ছাদে মাদক সেবনে নিষেধ করায় চকনাজিরপুরে ২ জনকে গুরুতর জখম করা হয়েছে। চুরি হয়েছে চার্জার ভ্যানের ব্যাটারি, গোপালপুরে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক নারী। শনিবার (১ মার্চ) খোলা মাঠে একদল কিশোরের গাঁজা সেবনের ভিডিও হয়েছে ভাইরাল।

 

জানা যায়, বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নেশায় আসক্ত। শাসন করায় সে ইতিমধ্যে ২ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তার বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, “বড় ছেলেটা নেশায় আসক্ত। ছোট ছেলেটাও স্কুল পড়ুয়া সমবয়সীদের সাথে ধুমপান করতে করতে এখন গাঁজায় আসক্ত।”

 

উপজেলার দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির ছেলে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রায় ৬৫% বন্ধু ধুমপানে আসক্ত। তাদের মধ্যে ২৫% গাঁজা কিংবা অন্য নেশায় আসক্ত।

 

স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হাত বাড়ালেই এখন মাদক পাওয়া যায়। সরেজমিনে উপজেলার ছোট-বড় অধিকাংশ বাজার সংলগ্ন পরিত্যক্ত জায়গায় আমদানি নিষিদ্ধ ফেনসিডিলের খালি বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সামাজিক অবক্ষয়, নৈতিকতার স্খলন, অবৈধ হ্যাকিং ও অভিভাবকদের অসচেতনতার পাশাপাশি মাদকের সহজলভ্যতা এ অঞ্চলে মাদক সেবন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয় নাগরিকবৃন্দ। তারা মাদক নির্মূলে শুধু লোক দেখানো অভিযান না চালিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।

 

লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৯টি মামলা হয়েছে। (র‍্যাব ২টি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ১টি, লালপুর থানা পুলিশ ৬টি মামলা করেছেন)।

 

এ বিষয়ে লালপুর থানার ওসি মো. নাজমুল হক বলেন, “মাদক নির্মূলে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। অচিরেই আমরা মাদক নির্মূলের সফল হবো।” ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, “মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

হরিপরে বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত

error: Content is protected !!

লালপুরে মাদকের ভয়াল থাবায় ঝুঁকিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম

আপডেট টাইম : ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি :

রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ

 

নাটোরের লালপুরে মাদকের ভয়াল থাবায় মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত এই জনপদের অসংখ্য মানুষ এখন নেশায় আসক্ত। নেশার টাকা যোগান দিতে ঘটছে চুরি, ডাকাতি, মারামারি, ছিনতাই, অবৈধ হ্যাকিং ও হত্যার মতো ঘটনা। গত ১ মাসে উপজেলায় মাদক বিক্রয় ও সেবনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে সুকুমার নামে একজন দিবালোকে খুন হয়েছেন।

 

ফেনসিডিলসহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২ ইমো হ্যাকার। স্কুলের ছাদে মাদক সেবনে নিষেধ করায় চকনাজিরপুরে ২ জনকে গুরুতর জখম করা হয়েছে। চুরি হয়েছে চার্জার ভ্যানের ব্যাটারি, গোপালপুরে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক নারী। শনিবার (১ মার্চ) খোলা মাঠে একদল কিশোরের গাঁজা সেবনের ভিডিও হয়েছে ভাইরাল।

 

জানা যায়, বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নেশায় আসক্ত। শাসন করায় সে ইতিমধ্যে ২ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তার বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, “বড় ছেলেটা নেশায় আসক্ত। ছোট ছেলেটাও স্কুল পড়ুয়া সমবয়সীদের সাথে ধুমপান করতে করতে এখন গাঁজায় আসক্ত।”

 

উপজেলার দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির ছেলে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রায় ৬৫% বন্ধু ধুমপানে আসক্ত। তাদের মধ্যে ২৫% গাঁজা কিংবা অন্য নেশায় আসক্ত।

 

স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হাত বাড়ালেই এখন মাদক পাওয়া যায়। সরেজমিনে উপজেলার ছোট-বড় অধিকাংশ বাজার সংলগ্ন পরিত্যক্ত জায়গায় আমদানি নিষিদ্ধ ফেনসিডিলের খালি বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সামাজিক অবক্ষয়, নৈতিকতার স্খলন, অবৈধ হ্যাকিং ও অভিভাবকদের অসচেতনতার পাশাপাশি মাদকের সহজলভ্যতা এ অঞ্চলে মাদক সেবন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয় নাগরিকবৃন্দ। তারা মাদক নির্মূলে শুধু লোক দেখানো অভিযান না চালিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।

 

লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৯টি মামলা হয়েছে। (র‍্যাব ২টি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ১টি, লালপুর থানা পুলিশ ৬টি মামলা করেছেন)।

 

এ বিষয়ে লালপুর থানার ওসি মো. নাজমুল হক বলেন, “মাদক নির্মূলে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। অচিরেই আমরা মাদক নির্মূলের সফল হবো।” ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, “মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।”


প্রিন্ট