ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মঙ্গলকোটে মঙ্গলচণ্ডী পুজোয় পুলিশের জলছত্র Logo কুড়ানো আলুই ওদের সারা বছরের খাবার ! Logo সংকট উত্তরণে এখনই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেইঃ -নার্গিস বেগম Logo ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ প্যারাসিটামল ,কলেরা স্যালাইন ও এক্সরে ফিল্ম নেই Logo দৌলতপুরে জামায়াতের ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ Logo মধুখালীতে শয়তানের নিঃশ্বাস পার্টি চক্রের দুই সদস্য আটক Logo রায়পুরায় তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণের পর প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ Logo ১৬ বছর বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনের বীজ বপন করেছে বিধায় হাসিনার পতন হয়েছেঃ-মাহবুবের রহমান শামীম Logo লালপুরে জামাতের ইফতার মাহফিল Logo সুদৃঢ় ঐক্যের মাধ্যেম সকল ষড়যন্ত্র মুছতে হবেঃ -হারুন অর রশীদ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তানোরে চাবি জালে সৌখিন মাছ শিকারীদের বোয়াল শিকারের উৎসব

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহীর তানোর এবং মোহনপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে চলেছে বিল কুমারী (শিবনদী)। বিলের এক পাশে তানোর, অন্যপাশে মোহনপুর। শিব নদীতে (বিলকুমারী বিল) চাবি জালে বোয়াল শিকারের উৎসবে মাতোয়ারা সৌখিন মাছ শিকারী ও মৎস্যজীবীরা।

 

জানা গেছে, ফালগুনের শুরুতে নদীর পানি কমে যাওয়ায় প্রতি বছরের মতো এবারও চাবি জাল দিয়ে মাছ শিকারের এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন নানা শ্রেণী-পেশার নানা বয়সের সৌখিন মাছ শিকারী ও মৎস্যজীবীরা। প্রতি বছর শীতের শেষে ও বসন্তের শুরুতে নদীর উজানে পানি কমে যায়। এসময় স্থানীয় মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি তানোর, মান্দা, পবা, মোহনপুর, গোদাগাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার দূর-দূরান্ত থেকে এসে সৌখিন মাছ শিকারীরা ঐতিহ্যবাহী চাবি জাল দিয়ে মাছ ধরার উৎসবে অংশ নেন।

 

এদিকে গত ৩ মার্চ সোমবার সরেজমিন তানোরের বুরুজঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের অনেক মানুষ একসঙ্গে নদীর দুই ধারে এক লাইনে দাঁড়িয়ে চাবি জাল দিয়ে নদীতে নেমে মাছ শিকার করছেন। সম্মিলিত এই মাছ শিকার উৎসব দেখতে বিল পাড়ে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক মানুষ। এসময় কারো চাবি জালে বড় মাছ ধরা পড়া মাত্র হই-হই কলরবে মুখরিত হয়ে উঠছে বিল পাড়ের পুরো এলাকা।

 

সৌখিন এসব শিকারিরা জানান, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেই প্রতিবছর এই সময় প্রায় দিন এই জমায়েত হয়। যে মাছ শিকার করা হয় তা বিক্রির জন্য নয়। তবে অনেক বেশি মাছ পাওয়া গেলে কেউ কেউ কিছু মাছ বিক্রি করে। যারা মাছ শিকার করতে আসেন, তাদের সিংহভাগ পেশাদার জেলে নয়। শুধুমাত্র শখের বশে নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ একসঙ্গে নামেন নদীতে। শখের মাছ যায় ঘরে।

 

তানোর উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) আজিপুর গ্রামের ফজর আলীর পুত্র রফিকুল ইসলাম (৪৫), আবুল কালামের পুত্র মুক্তার হোসেন (৪০) এবং আবেদ প্রামানিকের পুত্র মিরাজ প্রামানিক জানান, শিব নদীতে পানি কমে আসলেই আমরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে একটি দিন তারিখ ঠিক করি। পরে একসঙ্গে নেমে পড়ি নদীতে। বেশিরভাগই চাবি জাল নিয়ে আসেন মাছ ধরতে। কেউ কেউ অন্য জালও আনেন। আমরা শিব নদীতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নানা বয়সের প্রায় ৩৫ জন মানুষ একসঙ্গে মাছ ধরতে এসেছি এবং প্রত্যেকেই যথেষ্ট মাছ পেয়েছি, বেশি পেয়েছি বোয়াল মাছ। তবে কেউ কেউ মাছ কম পেয়েছে। প্রতি বছর নদীতে একসঙ্গে মাছ ধরা আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

 

তারা আরও বলেন, আমরা এই চাবি জাল দিয়ে শিব নদীতে বড় রুই, কাতল, বোয়াল, গজার, টেংরা, বাইম, পুঁটিসহ নানা প্রজাতির ছোট মাছও শিকার করে ঘরে নিয়ে যায়। তবে গতকাল আমরা কমবেশি সকলেই বোয়াল মাছ বেশি পেয়েছি। বর্তমানে বোয়াল মাছের চাহিদা অনেক। আমরা বেশি বেশি বোয়াল মাছ ধরতে পেরে খুব খুশি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মঙ্গলকোটে মঙ্গলচণ্ডী পুজোয় পুলিশের জলছত্র

error: Content is protected !!

তানোরে চাবি জালে সৌখিন মাছ শিকারীদের বোয়াল শিকারের উৎসব

আপডেট টাইম : ১২:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহীর তানোর এবং মোহনপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে চলেছে বিল কুমারী (শিবনদী)। বিলের এক পাশে তানোর, অন্যপাশে মোহনপুর। শিব নদীতে (বিলকুমারী বিল) চাবি জালে বোয়াল শিকারের উৎসবে মাতোয়ারা সৌখিন মাছ শিকারী ও মৎস্যজীবীরা।

 

জানা গেছে, ফালগুনের শুরুতে নদীর পানি কমে যাওয়ায় প্রতি বছরের মতো এবারও চাবি জাল দিয়ে মাছ শিকারের এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন নানা শ্রেণী-পেশার নানা বয়সের সৌখিন মাছ শিকারী ও মৎস্যজীবীরা। প্রতি বছর শীতের শেষে ও বসন্তের শুরুতে নদীর উজানে পানি কমে যায়। এসময় স্থানীয় মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি তানোর, মান্দা, পবা, মোহনপুর, গোদাগাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার দূর-দূরান্ত থেকে এসে সৌখিন মাছ শিকারীরা ঐতিহ্যবাহী চাবি জাল দিয়ে মাছ ধরার উৎসবে অংশ নেন।

 

এদিকে গত ৩ মার্চ সোমবার সরেজমিন তানোরের বুরুজঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের অনেক মানুষ একসঙ্গে নদীর দুই ধারে এক লাইনে দাঁড়িয়ে চাবি জাল দিয়ে নদীতে নেমে মাছ শিকার করছেন। সম্মিলিত এই মাছ শিকার উৎসব দেখতে বিল পাড়ে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক মানুষ। এসময় কারো চাবি জালে বড় মাছ ধরা পড়া মাত্র হই-হই কলরবে মুখরিত হয়ে উঠছে বিল পাড়ের পুরো এলাকা।

 

সৌখিন এসব শিকারিরা জানান, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেই প্রতিবছর এই সময় প্রায় দিন এই জমায়েত হয়। যে মাছ শিকার করা হয় তা বিক্রির জন্য নয়। তবে অনেক বেশি মাছ পাওয়া গেলে কেউ কেউ কিছু মাছ বিক্রি করে। যারা মাছ শিকার করতে আসেন, তাদের সিংহভাগ পেশাদার জেলে নয়। শুধুমাত্র শখের বশে নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ একসঙ্গে নামেন নদীতে। শখের মাছ যায় ঘরে।

 

তানোর উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) আজিপুর গ্রামের ফজর আলীর পুত্র রফিকুল ইসলাম (৪৫), আবুল কালামের পুত্র মুক্তার হোসেন (৪০) এবং আবেদ প্রামানিকের পুত্র মিরাজ প্রামানিক জানান, শিব নদীতে পানি কমে আসলেই আমরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে একটি দিন তারিখ ঠিক করি। পরে একসঙ্গে নেমে পড়ি নদীতে। বেশিরভাগই চাবি জাল নিয়ে আসেন মাছ ধরতে। কেউ কেউ অন্য জালও আনেন। আমরা শিব নদীতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নানা বয়সের প্রায় ৩৫ জন মানুষ একসঙ্গে মাছ ধরতে এসেছি এবং প্রত্যেকেই যথেষ্ট মাছ পেয়েছি, বেশি পেয়েছি বোয়াল মাছ। তবে কেউ কেউ মাছ কম পেয়েছে। প্রতি বছর নদীতে একসঙ্গে মাছ ধরা আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

 

তারা আরও বলেন, আমরা এই চাবি জাল দিয়ে শিব নদীতে বড় রুই, কাতল, বোয়াল, গজার, টেংরা, বাইম, পুঁটিসহ নানা প্রজাতির ছোট মাছও শিকার করে ঘরে নিয়ে যায়। তবে গতকাল আমরা কমবেশি সকলেই বোয়াল মাছ বেশি পেয়েছি। বর্তমানে বোয়াল মাছের চাহিদা অনেক। আমরা বেশি বেশি বোয়াল মাছ ধরতে পেরে খুব খুশি।


প্রিন্ট