ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সদরপুরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে কালো সোনা বলে খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।

 

একসময় পিঁয়াজের দানা বিদেশ থেকে আমদানী করে আবাদ করা হতো। কিন্ত এখন আর আমদানী করতে হয়না। আমাদের দেশেই প্রচুর পরিমানে চাষ হয় পিঁয়াজ এবং পিঁয়াজ বিজের। যা দেশের চাহিদা পুরণ করার পরেও রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

 

সারাদেশের মধ্যে ফরিদপুরে সবচেয়ে বেশি চাষ এবং উৎপাদিত হয় এই কালোসোনা বলে খ্যাত পিঁয়াজের দানার। উপযোগী আবহাওয়া এবং মাটির উর্বরতা ভালো থাকায় ফরিদপুরে পিঁয়াজ উৎপাদনের সুনাম রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে পিঁয়াজ বিজ্বের। সঠিক পরিচর্যা এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে পিঁয়াজ বিজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় হাসি ফুটে উঠেছে স্থানীয় কৃষকদের মুখে।

 

কালো সোনা বলে খ্যাত পিঁয়াজ বীজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে অন্যতম স্থান হিসেবে পরিচিতি রয়েছে ফরিদপুর জেলা। প্রতি বছরই প্রচুর পরিমান পিঁয়াজ এবং পিঁয়াজের বিজ্ব উৎপাদিত হয়ে আসছে ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায়।

 

তবে স্থানীয় হাট বাজার গুলোতে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট থাকার কারনে পিঁয়াজের নেয্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারনে কিছুটা চাপা ক্ষোপ রয়েছে বলে জানান স্থানীয় পিঁয়াজ চাষীরা। তবে উৎপাদন ভালো হওয়ায় প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে পিঁয়াজের আবাদ এমুনটাও বলছেন অনেক কৃষক।

 

সদরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় জানান, চলতি মৌসুমে সদরপুর উপজেলায় মোট ৩ শত ৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে পিঁয়াজ বীজের। যা গত বছরের চাইতে ৫০ হেক্টর বেশি। তিনি আরো বলেন, পিঁয়াজের দানা চাষ অব্যাহত রাখতে পিঁয়াজ চাষীদের সার্বিক সহযোগিতা, বীনামুল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা ছারাও কৃষকদের দেওয়া হয়েছে মৌলিক প্রশিক্ষণ।

 

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং সময় মতো বীজ্ব বপন, সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ করা এবং কৃষি অফিসের তদারকির কারনে সদরপুর উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে বাতাসের সাথে দোল খাচ্ছে সাদা সাদা পিঁয়াজের ফুল। তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে কালো সোনা বলে খ্যাত পিঁয়াজ বীজ্ব। আর এই বীজের মধ্যেই লুকিয়ে আছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। কথা হয় সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া,আমিরাবাদ,চরবিষ্ণুপুর গ্রামের একাধিক কৃষকের সাথে।

তারা জানান, প্রতি বিঘা (৪২শতক) জমিতে ৮/৯ মন পিঁয়াজের গুটি বপন করতে হয়। সার, বিজ ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা মিলিয়ে মোট খরচ হয় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় পিঁয়াজ বীজ উৎপাদিত হয় প্রায় ৫ থেকে ৬ মন। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা। অন্যান্ন ফসলের চাইতে লাভ বেশী হওয়ার কারনে কৃষকরা ঝুকছেন পিঁয়াজ বীজ উৎপাদনে। উপজেলার পিঁয়াজ চাষীরা বলেন, গত বছর পিঁয়াজ বীজের মূল্য বেশী পাওয়ার কারনে এ বছর চাষীরা আরো বেশি পরিমান জমিতে পিঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন।

 

তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট থাকার কারণে নেয্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার সংকায় রয়েছেন এমুন অভিযোগও করেছেন অনেক পিঁয়াজ বিজ্ব উৎপাদন কারী চাষীরা।

 

তাঁরা বলছেন, যদি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সু-দৃষ্টি দেন তবে, আগামীতে আরো বেশি জমিতে পিঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবেন তারা। চলতি মৌসুমে পিঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার পিঁয়াজ চাষীরা।

 

এ বছর উৎপাদন ভালো হবে এই আশায় বুক বেধে আছেন সদরপুরের পিঁয়াজ চাষীরা। তাদের স্বপ্ন যাতে ভেঙ্গে না যায় সেজন্য স্থানীয় হাট বাজার গুলোতে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সদরপুর উপজেলার পিঁয়াজ চাষীদের।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

সদরপুরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

আপডেট টাইম : ৯ ঘন্টা আগে
স্টাফ রিপোর্টার :

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে কালো সোনা বলে খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।

 

একসময় পিঁয়াজের দানা বিদেশ থেকে আমদানী করে আবাদ করা হতো। কিন্ত এখন আর আমদানী করতে হয়না। আমাদের দেশেই প্রচুর পরিমানে চাষ হয় পিঁয়াজ এবং পিঁয়াজ বিজের। যা দেশের চাহিদা পুরণ করার পরেও রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

 

সারাদেশের মধ্যে ফরিদপুরে সবচেয়ে বেশি চাষ এবং উৎপাদিত হয় এই কালোসোনা বলে খ্যাত পিঁয়াজের দানার। উপযোগী আবহাওয়া এবং মাটির উর্বরতা ভালো থাকায় ফরিদপুরে পিঁয়াজ উৎপাদনের সুনাম রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে পিঁয়াজ বিজ্বের। সঠিক পরিচর্যা এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে পিঁয়াজ বিজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় হাসি ফুটে উঠেছে স্থানীয় কৃষকদের মুখে।

 

কালো সোনা বলে খ্যাত পিঁয়াজ বীজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে অন্যতম স্থান হিসেবে পরিচিতি রয়েছে ফরিদপুর জেলা। প্রতি বছরই প্রচুর পরিমান পিঁয়াজ এবং পিঁয়াজের বিজ্ব উৎপাদিত হয়ে আসছে ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায়।

 

তবে স্থানীয় হাট বাজার গুলোতে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট থাকার কারনে পিঁয়াজের নেয্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারনে কিছুটা চাপা ক্ষোপ রয়েছে বলে জানান স্থানীয় পিঁয়াজ চাষীরা। তবে উৎপাদন ভালো হওয়ায় প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে পিঁয়াজের আবাদ এমুনটাও বলছেন অনেক কৃষক।

 

সদরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় জানান, চলতি মৌসুমে সদরপুর উপজেলায় মোট ৩ শত ৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে পিঁয়াজ বীজের। যা গত বছরের চাইতে ৫০ হেক্টর বেশি। তিনি আরো বলেন, পিঁয়াজের দানা চাষ অব্যাহত রাখতে পিঁয়াজ চাষীদের সার্বিক সহযোগিতা, বীনামুল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা ছারাও কৃষকদের দেওয়া হয়েছে মৌলিক প্রশিক্ষণ।

 

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং সময় মতো বীজ্ব বপন, সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ করা এবং কৃষি অফিসের তদারকির কারনে সদরপুর উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে বাতাসের সাথে দোল খাচ্ছে সাদা সাদা পিঁয়াজের ফুল। তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে কালো সোনা বলে খ্যাত পিঁয়াজ বীজ্ব। আর এই বীজের মধ্যেই লুকিয়ে আছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। কথা হয় সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া,আমিরাবাদ,চরবিষ্ণুপুর গ্রামের একাধিক কৃষকের সাথে।

তারা জানান, প্রতি বিঘা (৪২শতক) জমিতে ৮/৯ মন পিঁয়াজের গুটি বপন করতে হয়। সার, বিজ ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা মিলিয়ে মোট খরচ হয় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় পিঁয়াজ বীজ উৎপাদিত হয় প্রায় ৫ থেকে ৬ মন। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা। অন্যান্ন ফসলের চাইতে লাভ বেশী হওয়ার কারনে কৃষকরা ঝুকছেন পিঁয়াজ বীজ উৎপাদনে। উপজেলার পিঁয়াজ চাষীরা বলেন, গত বছর পিঁয়াজ বীজের মূল্য বেশী পাওয়ার কারনে এ বছর চাষীরা আরো বেশি পরিমান জমিতে পিঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন।

 

তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট থাকার কারণে নেয্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার সংকায় রয়েছেন এমুন অভিযোগও করেছেন অনেক পিঁয়াজ বিজ্ব উৎপাদন কারী চাষীরা।

 

তাঁরা বলছেন, যদি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সু-দৃষ্টি দেন তবে, আগামীতে আরো বেশি জমিতে পিঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবেন তারা। চলতি মৌসুমে পিঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার পিঁয়াজ চাষীরা।

 

এ বছর উৎপাদন ভালো হবে এই আশায় বুক বেধে আছেন সদরপুরের পিঁয়াজ চাষীরা। তাদের স্বপ্ন যাতে ভেঙ্গে না যায় সেজন্য স্থানীয় হাট বাজার গুলোতে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সদরপুর উপজেলার পিঁয়াজ চাষীদের।


প্রিন্ট