ঢাকা , সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভেড়ামারায় স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

ইস্রাফিল হোসেন ইমন, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নিজ ঘর থেকে স্বামী- স্ত্রী ফরিদ হােসন (৭৫) ও রাবেয়া খাতুন (৬৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীর লাশ বিছানায় ও স্বামীর মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় রশি নিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২টার সময় ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের চর দামুকদিয়া মহিষাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাটি ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ শহিদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

 

ছেলের বেটার বউ তাপসী জানায়, বেলা বারোটা বেজে যাচ্ছে ঘরের দরজা বন্ধ । শশুর – শাশুড়ি ঘুম থেকে উঠছে না। একথা মনে করে ঘরের সামনে এসে ডাকা-ডাকি শুরু করেন। ভিতর থেকে কোন সারা শব্দ না পেলে ,ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখে শশুরের গলায় দড়িতে ঝুলছে ‌। শশুরের লাশ দেখে তখন আত্মচিৎকার দিলে বাড়ির আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে পুলিশকে সংবাদ দিলে থানার ওসি এবং ওসি তদন্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে দেখে ঘরের ডাবের সাথে শশুরের গলায় দড়িতে ঝুলছে এবং শাশুড়ির বিছানায় লেপ গায়ে দেওয়া অবস্থায় পড়ে আছে খাটের উপর লাশ।

 

নিহতর ছেলে শরিফুল ইসলাম জানায়, প্রায় ১৭ বছর আগে নাটোর গুরুদাসপুর গ্রামের ফরিদ হোসেনের সাথে আমার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা আমার নানার নিজ জমিতে এই এলাকায় বসবাস করতে থাকে। মাঝেমধ্যেই আমার মায়ের সাথে বাবার দ্বন্দ্ব লাগতো। গতকালকে মা রাবেয়া খাতুন বাড়ির পাশেই মোহাম্মদ আলীর ডাল মেলে কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরেন। বাবা ফরিদ হোসেন তিনিও শহরের একটি এলমনিয়াম সিলভারের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরেন। স্বামী স্ত্রী উভয় রাতে একই ঘরে শুয়ে পড়েন। ঘটনার আগের দিন স্বামী স্ত্রীর উভয় মধ্যে ঝরগা বিবাদ লেগেছিল। সকালে দেখতে পাই ঘরের মধ্যে ছিটকানি লাগানো উভয়ের লাশ । যা পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দুজনার লাশ উদ্ধার করেন।

 

নিহতর ছেলে রাজিব জানায় মায়ের লাশ ঘরের চৌকির বিছানায় এবং বাবা আড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। ধারণা করছি, কোনও বিষয় নিয়ে রাতে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার জেরে উভয়েই আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।

 

বাহিরচর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রওশনারা বেগম ঘটনা স্থলে উপস্থিত থেকে জানান, শুনেছি মাঝেমধ্যে স্বামী স্ত্রীর অন্তত দ্বন্দ্ব ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকতো। ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা, ও পরে স্বামী নিজেই গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তাছাড়া যতটুকু শুনেছি ছেলে এবং ছেলের বেটার বউদের সাথে তাদের কোন বিবাদ ছিল না এমনটা তার পার্শ্ববর্তী লোকজনও আমাকে বলেছে।

 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ শহিদুল ইসলাম ও ওসি তদন্ত রাকিব হোসেন জানান স্বামী স্ত্রীর অন্তদ্বন্দ্বের কারণে প্রথমে স্ত্রী খুন হয় পরে স্বামী গলায় রশি নিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে।

 

পুলিশ স্বামী স্ত্রীর দুইটি লাশ উদ্ধার করে,কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেছে। এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

ভেড়ামারায় স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

আপডেট টাইম : ০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ইস্রাফিল হোসেন ইমন, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

ইস্রাফিল হোসেন ইমন, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নিজ ঘর থেকে স্বামী- স্ত্রী ফরিদ হােসন (৭৫) ও রাবেয়া খাতুন (৬৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীর লাশ বিছানায় ও স্বামীর মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় রশি নিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২টার সময় ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের চর দামুকদিয়া মহিষাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাটি ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ শহিদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

 

ছেলের বেটার বউ তাপসী জানায়, বেলা বারোটা বেজে যাচ্ছে ঘরের দরজা বন্ধ । শশুর – শাশুড়ি ঘুম থেকে উঠছে না। একথা মনে করে ঘরের সামনে এসে ডাকা-ডাকি শুরু করেন। ভিতর থেকে কোন সারা শব্দ না পেলে ,ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখে শশুরের গলায় দড়িতে ঝুলছে ‌। শশুরের লাশ দেখে তখন আত্মচিৎকার দিলে বাড়ির আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে পুলিশকে সংবাদ দিলে থানার ওসি এবং ওসি তদন্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে দেখে ঘরের ডাবের সাথে শশুরের গলায় দড়িতে ঝুলছে এবং শাশুড়ির বিছানায় লেপ গায়ে দেওয়া অবস্থায় পড়ে আছে খাটের উপর লাশ।

 

নিহতর ছেলে শরিফুল ইসলাম জানায়, প্রায় ১৭ বছর আগে নাটোর গুরুদাসপুর গ্রামের ফরিদ হোসেনের সাথে আমার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা আমার নানার নিজ জমিতে এই এলাকায় বসবাস করতে থাকে। মাঝেমধ্যেই আমার মায়ের সাথে বাবার দ্বন্দ্ব লাগতো। গতকালকে মা রাবেয়া খাতুন বাড়ির পাশেই মোহাম্মদ আলীর ডাল মেলে কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরেন। বাবা ফরিদ হোসেন তিনিও শহরের একটি এলমনিয়াম সিলভারের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরেন। স্বামী স্ত্রী উভয় রাতে একই ঘরে শুয়ে পড়েন। ঘটনার আগের দিন স্বামী স্ত্রীর উভয় মধ্যে ঝরগা বিবাদ লেগেছিল। সকালে দেখতে পাই ঘরের মধ্যে ছিটকানি লাগানো উভয়ের লাশ । যা পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দুজনার লাশ উদ্ধার করেন।

 

নিহতর ছেলে রাজিব জানায় মায়ের লাশ ঘরের চৌকির বিছানায় এবং বাবা আড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। ধারণা করছি, কোনও বিষয় নিয়ে রাতে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার জেরে উভয়েই আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।

 

বাহিরচর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রওশনারা বেগম ঘটনা স্থলে উপস্থিত থেকে জানান, শুনেছি মাঝেমধ্যে স্বামী স্ত্রীর অন্তত দ্বন্দ্ব ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকতো। ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা, ও পরে স্বামী নিজেই গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তাছাড়া যতটুকু শুনেছি ছেলে এবং ছেলের বেটার বউদের সাথে তাদের কোন বিবাদ ছিল না এমনটা তার পার্শ্ববর্তী লোকজনও আমাকে বলেছে।

 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ শহিদুল ইসলাম ও ওসি তদন্ত রাকিব হোসেন জানান স্বামী স্ত্রীর অন্তদ্বন্দ্বের কারণে প্রথমে স্ত্রী খুন হয় পরে স্বামী গলায় রশি নিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে।

 

পুলিশ স্বামী স্ত্রীর দুইটি লাশ উদ্ধার করে,কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেছে। এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।


প্রিন্ট