ইসমাইল হােসেন বাবু, ষ্টাফ রিপােটার
কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যুতে লাইভ চলাকালে কুষ্টিয়ার স্থানীয় দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এজাহার নিতে গড়িমসি এবং দেরি করায় মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেহাবুর রহমানকে গতকাল সোমবার রাতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার ১ দিন পার হলেও চিহ্নিত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কে কাউকেই পুলিশ আটক করতে পারেনি।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে গতকাল সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার সময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-মামুন সাগরের সভাপতিত্বে ও বাংলাভিশন ও দেশ রূপান্তরের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসান আলীর সঞ্চালনায় এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান লাকি, নাহিদ হাসান তিতাস, নুরুন্নবী বাবু, মুন্সী শাহিন আহমেদ জুয়েল।
কর্মসূচি থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেন সাংবাদিকরা।
এ সময় সাংবাদিক নেতারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে দেশে একের পর এক সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন, হামলা, মামলা ও হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এভাবে চলতে পারে না। সাংবাদিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক ইমরানের ওপর চিহ্নিত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কে গ্রেপ্তার করা না হলে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেন। বিচার না পেলে কুষ্টিয়া থেকে দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলনের ঘোষণা দেন সাংবাদিক নেতারা।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ায় ট্রলিচাপায় স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনা নিয়ে লাইভ ভিডিও ধারণকালে স্থানীয় দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার ফটো সংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর হামলা চালানো হয়। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার ফুলতলা প্রতীতি বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই সাংবাদিকের কাছে থাকা ভিডিও ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। ঘটনার পর ইমরান হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ইমরান বলেন, স্কুলছাত্রের নিহতের ঘটনা নিয়ে দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভ করার সময় কুষ্টিয়া পৌরসভার কাস্টম মোড়ের হাশেম ডাক্তারের গলির চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী রকি ও আরিফুলসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন আমার ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার নাক, পিঠ ও মাথা কেটে গিয়ে গেছে।
এই হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, হামলার সময় সন্ত্রাসীরা ইমরান হোসেনের কাছে থাকা প্যানাসনিক পিভি-১০০ মডেলের একটি ভিডিও ক্যামেরা ও ক্যামেরার বয়া ছিনিয়ে নেয়। হামলার পর অন্য সাংবাদিকরা তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মামলা নিতে গড়িমসি করায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিহাবুরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং রাতেই এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
প্রিন্ট