ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo জাতীয় অপরাজিতা পুরস্কার লাভ করেন নলছিটির নাজনীন আক্তার নিপা Logo চরভদ্রাশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ Logo “আমরা আমতলীবাসী” সংগঠনের উদ্যোগে স্যালাইন, শরবত ও ঠান্ডা পানি বিতরণ Logo তীব্র তাপপ্রবাহে গোয়ালন্দে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট-ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা Logo বোয়ালমারীতে ৫ লাখ টাকার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস Logo তীব্র তাপদাহে গোপালগঞ্জ পুলিশের মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন Logo কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী বৃহৎ উপজেলা দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা Logo নাটোরে বাগাতিপাড়ায় কয়েলের আগুনে গবাদিপশু সহ ঘর পুড়ে ছাই Logo দৌলতপুরে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে পদ্মা চরের বাদাম ক্ষেত Logo কৃষ্ণপুরে সামাজিক সম্প্রীতি মিটিং অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পাংশায় প্রখ্যাত আলেম আলহাজ্ব তাজুল ইসলামের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউপির ঐতিহ্যবাহী বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ তাজুল ইসলামের (ছোট হুজুর) বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শুক্রবার ৯ জুলাই পাংশা সাব রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন জামে মসজিদ, কুড়াপাড়া ছাপড়া জামে মসজিদ, মাগুড়াডাঙ্গী দরগাবাড়ী জামে মসজিদ ও পাংশা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এবং পাট্টা, মৃগী ও সাওরাইল ইউপিসহ পাংশা-কালুখালী উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পাংশা সাব রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন জামে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রায়নগর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ লুৎফর রহমান। পাংশা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাংশা শাহজুই (রঃ) কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মুহাঃ আবু মুসা আশয়ারী। মাগুড়াডাঙ্গী দরগাবাড়ী জামে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পরানপুর দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।

জানা যায়, আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ তাজুল ইসলাম গত ৫ জুলাই সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে পাংশা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

৬ জুলাই বিকেলে পাংশা হাসপাতাল থেকে রওয়ানা হয়ে রাত পৌনে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২নং গেটে পৌঁছিলে সেখানে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কিডনী, হার্ট ও ডায়াবেটিস রোগ ছিল তার। পরে তার ব্রেনে রক্তক্ষরণ ধরা পরে। ওইদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শাহরিয়ার সেখানে আলহাজ্ব তাজুল ইসলামের চিকিৎসার পূর্ব প্রস্তুতি রেখেছিলেন।

কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২নং গেটে পৌঁছিলে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। গত ৭ জুলাই সকাল সাড়ে আটটায় তার কর্মস্থল বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসা প্রাঙ্গনে জানাজার নামাজ শেষে বয়রাট মাঝাইল গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার পুত্র ও তিন কন্যা সন্তান, বহু আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

জানা যায়, মাওলানা তাজুল ইসলামের পৈত্রিক বাড়ী বর্তমান লক্ষèীপুর জেলা সদরের হাজিরপাড়া গ্রামের মৌলভীবাড়ী। মাওলানা তাজুল ইসলামের পিতা মরহুম মাওলানা সাঈদ আহমেদ বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।

জনশ্রুতি আছে- ১৯৬৯ সালে ঢাকায় যাওয়ার পথে মানিকগঞ্জের তরাঘাটে লঞ্চডুবিতে মাওলানা সাঈদ আহমেদ মারা যান।

নদীতে বেশ কয়েকদিন পর টুপি মাথায়, ব্যাগ কাঁধে তার মৃতদেহ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ জাতীয় গোরস্থানে তার দাফন করা হয়। তিনি কামিল ও বুজুর্গ লোক ছিলেন।

আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হিসেবে তিনি সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মাওলানা তাজুল ইসলাম লেখাপড়া শেষ করে বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসায় শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। বিভিন্ন সময়ে মাদরাসার গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা তাজুল ইসলাম।

সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী অবসরগ্রহণ করেন তিনি। এলাকার আলেম সমাজে তিনি ছোটহুজুর নামে পরিচিত ছিলেন। পিতারমত তিনিও ইসলামী চিন্তাবিদ ও বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন।

উল্লেখ্য, মাওলানা তাজুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে বয়রাটে নারীদের মাঝে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে চারতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ এবং সেখানে তাহফিজুল কোরআন ও কেরাতুল কোরআন শিক্ষা চালু করেন। তিনি রসুলপুর বায়তুল উলুম দাওরায়ে হাদিস মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক হাফেজ আব্দুল মতিন নেছারী ( পীর সাহেব, রসুলপুর)-এর অন্যতম খলিফা ছিলেন।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় অপরাজিতা পুরস্কার লাভ করেন নলছিটির নাজনীন আক্তার নিপা

error: Content is protected !!

পাংশায় প্রখ্যাত আলেম আলহাজ্ব তাজুল ইসলামের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া

আপডেট টাইম : ০৯:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউপির ঐতিহ্যবাহী বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ তাজুল ইসলামের (ছোট হুজুর) বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শুক্রবার ৯ জুলাই পাংশা সাব রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন জামে মসজিদ, কুড়াপাড়া ছাপড়া জামে মসজিদ, মাগুড়াডাঙ্গী দরগাবাড়ী জামে মসজিদ ও পাংশা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এবং পাট্টা, মৃগী ও সাওরাইল ইউপিসহ পাংশা-কালুখালী উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পাংশা সাব রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন জামে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রায়নগর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ লুৎফর রহমান। পাংশা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাংশা শাহজুই (রঃ) কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মুহাঃ আবু মুসা আশয়ারী। মাগুড়াডাঙ্গী দরগাবাড়ী জামে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পরানপুর দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।

জানা যায়, আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ তাজুল ইসলাম গত ৫ জুলাই সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে পাংশা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

৬ জুলাই বিকেলে পাংশা হাসপাতাল থেকে রওয়ানা হয়ে রাত পৌনে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২নং গেটে পৌঁছিলে সেখানে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কিডনী, হার্ট ও ডায়াবেটিস রোগ ছিল তার। পরে তার ব্রেনে রক্তক্ষরণ ধরা পরে। ওইদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শাহরিয়ার সেখানে আলহাজ্ব তাজুল ইসলামের চিকিৎসার পূর্ব প্রস্তুতি রেখেছিলেন।

কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২নং গেটে পৌঁছিলে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। গত ৭ জুলাই সকাল সাড়ে আটটায় তার কর্মস্থল বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসা প্রাঙ্গনে জানাজার নামাজ শেষে বয়রাট মাঝাইল গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার পুত্র ও তিন কন্যা সন্তান, বহু আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

জানা যায়, মাওলানা তাজুল ইসলামের পৈত্রিক বাড়ী বর্তমান লক্ষèীপুর জেলা সদরের হাজিরপাড়া গ্রামের মৌলভীবাড়ী। মাওলানা তাজুল ইসলামের পিতা মরহুম মাওলানা সাঈদ আহমেদ বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।

জনশ্রুতি আছে- ১৯৬৯ সালে ঢাকায় যাওয়ার পথে মানিকগঞ্জের তরাঘাটে লঞ্চডুবিতে মাওলানা সাঈদ আহমেদ মারা যান।

নদীতে বেশ কয়েকদিন পর টুপি মাথায়, ব্যাগ কাঁধে তার মৃতদেহ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ জাতীয় গোরস্থানে তার দাফন করা হয়। তিনি কামিল ও বুজুর্গ লোক ছিলেন।

আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হিসেবে তিনি সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মাওলানা তাজুল ইসলাম লেখাপড়া শেষ করে বয়রাট মাঝাইল ফাজিল মাদরাসায় শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। বিভিন্ন সময়ে মাদরাসার গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা তাজুল ইসলাম।

সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী অবসরগ্রহণ করেন তিনি। এলাকার আলেম সমাজে তিনি ছোটহুজুর নামে পরিচিত ছিলেন। পিতারমত তিনিও ইসলামী চিন্তাবিদ ও বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন।

উল্লেখ্য, মাওলানা তাজুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে বয়রাটে নারীদের মাঝে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে চারতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ এবং সেখানে তাহফিজুল কোরআন ও কেরাতুল কোরআন শিক্ষা চালু করেন। তিনি রসুলপুর বায়তুল উলুম দাওরায়ে হাদিস মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক হাফেজ আব্দুল মতিন নেছারী ( পীর সাহেব, রসুলপুর)-এর অন্যতম খলিফা ছিলেন।