আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার আলু চাষিরা (কোল্ডস্টোর) হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহাসড়কে আলু ফেলে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারী রোববার দুপুরে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে আলু ফেলে তারা এসব কর্মসূচি পালন করেন। এসময় ভাড়া কমিয়ে পূর্বের মূল্য বহাল রাখতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।
এদিকে এর আগে, কৃষকরা বেলা ১১টা থেকে মোহনপুর উপজেলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় অনেক কৃষককে আহাজারি করতেও দেখা যায়। কৃষকরা জানান, এবছর আলু চাষ করতে গিয়ে কয়েকগুণ উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, জমি ইজারা ও শ্রমিকসহ অন্যান্য উপাদানের দাম গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। এখন আবার কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখার ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত বছর কোল্ড স্টোরেজে ৭০ কেজির আলুর বস্তা রাখার ভাড়া বাবদ ২৮০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এবছর একই পরিমাণ আলু রাখার জন্য কৃষককে গুণতে হবে ৫৬০ টাকা।
তানোর উপজেলার আলুচাষি লিমন আহমেদ বলেন, রাজশাহীতে ৩৬টি কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখা যায় ৯২ লাখ বস্তা। অর্থাৎ এক বস্তা আলু থেকে ২৮০ টাকা লাভ করলে তারা কৃষকদের কাছ থেকে এই মৌসুমে ২৫৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিবে। কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। তিনি এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়ন ইউপি বিএনপির সম্পাদক ও আলুচাষী ইউনুস আলী বলেন, ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভাড়া কমিয়ে পূর্বের ভাড়া নির্ধারণ করা না হলে আমরা আবার আমাদের কর্মসূচি পালন করবো। এ বছর আলু উৎপাদনে কেজি প্রতি খরচ হয়েছে ২২ টাকা। এখন পাইকারি আলু কেজি প্রতি ১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই কৃষকদের লোকসান হচ্ছে। সেখানে কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের আলু রাখার ভাড়া বৃদ্ধি অযৌক্তিক ও অনৈতিক।
তানোরের আলুচাষি গোলাম রাব্বানী বলেন, কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের টার্গেট হচ্ছে কৃষকরা আলু না রাখতে পারার কারণে দাম কমে গেলে তখন তারা কম দামে আলু কিনে কোল্ড স্টোরেজে রাখবে এবং পরে কৃষকদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করবে। এটা কখনো হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, প্রয়োজনে তারা লাগাতার কর্মসুচি দিবেন।
প্রিন্ট