ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫ Logo ফরিদপুরে আ.লীগের ব্যানারে মিছিল দেওয়ার প্রস্তুতিকালে বিএনপি নেতার ছেলেসহ আটক ৮ Logo বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন Logo শ্রমিকদল নেতাদের সহযোগীতায় জোরপূর্বক জমি দখলে শসস্ত্র হামলা Logo ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সদের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত Logo ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা Logo আলফাডাঙ্গায় শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক Logo মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ Logo ভূরুঙ্গামারীতে নাশকতা বিরোধী বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

লালপুরে কুল ও পেয়ারা চাষ করে লাখপতি উদ্যোক্তা মহিদুল

রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

 

শখের বসে কুল ও পেয়ারা চাষ করে এখন লাখপতি নাটোরের লালপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো: মহিদুল ইসলাম। গত মৌসুমে (২০২৩-২০২৪) তিনি পেয়ারা বিক্রি করে আয় করেছেন ৪০ লাখ টাকা। চলতি মৌসুমে (২০২৪-২০২৫) তিনি ২০ বিঘা জমিতে পেয়ারা, ৪ বিঘা জমিতে কুল এবং ৬ বিঘা জমিতে পেয়ারা ও কুলের মিশ্র চাষ করছেন।

 

ইতিমধ্যে তিনি ৩০ লাখ টাকার পেয়ারা ও কুল বিক্রি করেছেন। আরো ৩০ লাখ টাকার পেয়ারা ও কুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা ও দশ বিঘা জমিতে আখ ও অন্যান্য ফসল চাষ করছেন। সব মিলিয়ে বছরে তিনি ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আয় করেন। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে ১৫ জন শ্রমিকের। উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের নওপাড়া পদ্মার চরে তার ফল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাগিং করা সতেজ পেয়ারা আর বন সুন্দরী ও ভারত সুন্দরী জাতের রঙিন কুলে ভরে গেছে তার বাগান। পেয়ারা ও কুল গাছের মাঝের ফাঁকা জায়গায় আবার লাগানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের সবজি গাছ। বাগানের ফল আর চরের অপরূপ মিল বন্ধন দেখে যে কারো মন ভরে যাবে।

 

বাগান পরিচর্যার ফাঁকে প্রতিনিধিকে বাগান শুরুর কাহিনী শোনান মহিদুল। বলেন- নওপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছোট ছেলে তিনি। ২০১২ সালে চ্যানেল আই-এ শাইখ সিরাজ স্যারের কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তখন থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেন একটি কৃষি বাগান গড়ে তোলার। ২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর তিনি মনের শখকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য পদ্মা নদীর চরে বাবার ১০ বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করেন। সাথে সাথী ফসল হিসেবে রবি শস্য মসুর চাষ করেন। মসুর উঠে যাওয়ার পর এক আত্মীয়র পরামর্শে তিনি ওই জমিতে লাগান কচু। মসুর ও কচু থেকে ১০ মাসে তিনি আয় করেন ৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে কুলগাছে ফল ধরা শুরু হয়।

 

প্রথম বছরেই ১২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেন তিনি। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাগানের আয় থেকে তিনি পদ্মার চরে ক্রয় করেছেন কোটি টাকার মূল্যের ২০ বিঘা জমি। তার এ সফলতা দেখে আশেপাশের আরো কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন।

 

এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার সফলতা দেখে ও পরামর্শ নিয়ে আব্দুস সালাম, আমানুল্লাহ, আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন ও আজদার হোসেন পেয়ারা ও কুলের বাগান করে সফল হয়েছেন। প্রতিযোগিতার এই যুগে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, মহিদুল ইসলাম একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। উপজেলা কৃষি অফিস নিয়মিত তার বাগান পরিদর্শন করে ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। তার দেখাদেখি অন্যরাও কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাইলে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫

error: Content is protected !!

লালপুরে কুল ও পেয়ারা চাষ করে লাখপতি উদ্যোক্তা মহিদুল

আপডেট টাইম : ০১:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি :

রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

 

শখের বসে কুল ও পেয়ারা চাষ করে এখন লাখপতি নাটোরের লালপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো: মহিদুল ইসলাম। গত মৌসুমে (২০২৩-২০২৪) তিনি পেয়ারা বিক্রি করে আয় করেছেন ৪০ লাখ টাকা। চলতি মৌসুমে (২০২৪-২০২৫) তিনি ২০ বিঘা জমিতে পেয়ারা, ৪ বিঘা জমিতে কুল এবং ৬ বিঘা জমিতে পেয়ারা ও কুলের মিশ্র চাষ করছেন।

 

ইতিমধ্যে তিনি ৩০ লাখ টাকার পেয়ারা ও কুল বিক্রি করেছেন। আরো ৩০ লাখ টাকার পেয়ারা ও কুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা ও দশ বিঘা জমিতে আখ ও অন্যান্য ফসল চাষ করছেন। সব মিলিয়ে বছরে তিনি ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আয় করেন। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে ১৫ জন শ্রমিকের। উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের নওপাড়া পদ্মার চরে তার ফল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাগিং করা সতেজ পেয়ারা আর বন সুন্দরী ও ভারত সুন্দরী জাতের রঙিন কুলে ভরে গেছে তার বাগান। পেয়ারা ও কুল গাছের মাঝের ফাঁকা জায়গায় আবার লাগানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের সবজি গাছ। বাগানের ফল আর চরের অপরূপ মিল বন্ধন দেখে যে কারো মন ভরে যাবে।

 

বাগান পরিচর্যার ফাঁকে প্রতিনিধিকে বাগান শুরুর কাহিনী শোনান মহিদুল। বলেন- নওপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছোট ছেলে তিনি। ২০১২ সালে চ্যানেল আই-এ শাইখ সিরাজ স্যারের কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তখন থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেন একটি কৃষি বাগান গড়ে তোলার। ২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর তিনি মনের শখকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য পদ্মা নদীর চরে বাবার ১০ বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করেন। সাথে সাথী ফসল হিসেবে রবি শস্য মসুর চাষ করেন। মসুর উঠে যাওয়ার পর এক আত্মীয়র পরামর্শে তিনি ওই জমিতে লাগান কচু। মসুর ও কচু থেকে ১০ মাসে তিনি আয় করেন ৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে কুলগাছে ফল ধরা শুরু হয়।

 

প্রথম বছরেই ১২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেন তিনি। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাগানের আয় থেকে তিনি পদ্মার চরে ক্রয় করেছেন কোটি টাকার মূল্যের ২০ বিঘা জমি। তার এ সফলতা দেখে আশেপাশের আরো কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন।

 

এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার সফলতা দেখে ও পরামর্শ নিয়ে আব্দুস সালাম, আমানুল্লাহ, আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন ও আজদার হোসেন পেয়ারা ও কুলের বাগান করে সফল হয়েছেন। প্রতিযোগিতার এই যুগে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, মহিদুল ইসলাম একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। উপজেলা কৃষি অফিস নিয়মিত তার বাগান পরিদর্শন করে ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। তার দেখাদেখি অন্যরাও কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাইলে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।


প্রিন্ট