রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
শখের বসে কুল ও পেয়ারা চাষ করে এখন লাখপতি নাটোরের লালপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো: মহিদুল ইসলাম। গত মৌসুমে (২০২৩-২০২৪) তিনি পেয়ারা বিক্রি করে আয় করেছেন ৪০ লাখ টাকা। চলতি মৌসুমে (২০২৪-২০২৫) তিনি ২০ বিঘা জমিতে পেয়ারা, ৪ বিঘা জমিতে কুল এবং ৬ বিঘা জমিতে পেয়ারা ও কুলের মিশ্র চাষ করছেন।
ইতিমধ্যে তিনি ৩০ লাখ টাকার পেয়ারা ও কুল বিক্রি করেছেন। আরো ৩০ লাখ টাকার পেয়ারা ও কুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা ও দশ বিঘা জমিতে আখ ও অন্যান্য ফসল চাষ করছেন। সব মিলিয়ে বছরে তিনি ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আয় করেন। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে ১৫ জন শ্রমিকের। উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের নওপাড়া পদ্মার চরে তার ফল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাগিং করা সতেজ পেয়ারা আর বন সুন্দরী ও ভারত সুন্দরী জাতের রঙিন কুলে ভরে গেছে তার বাগান। পেয়ারা ও কুল গাছের মাঝের ফাঁকা জায়গায় আবার লাগানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের সবজি গাছ। বাগানের ফল আর চরের অপরূপ মিল বন্ধন দেখে যে কারো মন ভরে যাবে।
বাগান পরিচর্যার ফাঁকে প্রতিনিধিকে বাগান শুরুর কাহিনী শোনান মহিদুল। বলেন- নওপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছোট ছেলে তিনি। ২০১২ সালে চ্যানেল আই-এ শাইখ সিরাজ স্যারের কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান 'হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তখন থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেন একটি কৃষি বাগান গড়ে তোলার। ২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর তিনি মনের শখকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য পদ্মা নদীর চরে বাবার ১০ বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করেন। সাথে সাথী ফসল হিসেবে রবি শস্য মসুর চাষ করেন। মসুর উঠে যাওয়ার পর এক আত্মীয়র পরামর্শে তিনি ওই জমিতে লাগান কচু। মসুর ও কচু থেকে ১০ মাসে তিনি আয় করেন ৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে কুলগাছে ফল ধরা শুরু হয়।
প্রথম বছরেই ১২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেন তিনি। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাগানের আয় থেকে তিনি পদ্মার চরে ক্রয় করেছেন কোটি টাকার মূল্যের ২০ বিঘা জমি। তার এ সফলতা দেখে আশেপাশের আরো কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার সফলতা দেখে ও পরামর্শ নিয়ে আব্দুস সালাম, আমানুল্লাহ, আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন ও আজদার হোসেন পেয়ারা ও কুলের বাগান করে সফল হয়েছেন। প্রতিযোগিতার এই যুগে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, মহিদুল ইসলাম একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। উপজেলা কৃষি অফিস নিয়মিত তার বাগান পরিদর্শন করে ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। তার দেখাদেখি অন্যরাও কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাইলে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ (লিটু সিকদার), মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha