আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরের কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা বিরাজমান থাকলেও সব প্রতিকুলতা মোকাবেলা করে শিক্ষা বিস্তারে ভুমিকা রাখছে।
বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরী ও সীমানা প্রাচীর প্রয়োজন। এখানো ঝুঁকিপুর্ণ মাটির ঘরে পাঠদান চলছে। এসব নানা প্রতিকুলতা স্বত্ত্বেও গ্রামীণ জনপদের অধিবাসিদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মাঝে
শিক্ষা বিস্তারে অনন্য অবদান রেখে চলেছে কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়। গ্রামীণ পরিবেশেও শহরের মতো আধূনিক পাঠদান দেয়া হচ্ছে।অত্যন্ত মনোরম ও নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো হৈহুল্লোড়, নেই কোনো কোলাহল একদম নিরব-নিস্তব্ধ।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে কৃষ্ণপুর বাজার সংলগ্ন অবস্থান প্রতিষ্ঠানটির। গ্রামীণ পরিবেশ তবে শহরের মতো আধূনিক মানসম্মত পাঠদানের কোনো কমতি নেই। শহরের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানের যেসব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বা উপকরণ থাকে সেই সুযোগ-সুবিধা বা উপকরণ হয়তো বা এখানে নাই। তবে পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের থেকে তারা কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। এখানে তার যেনো পুরোটাই রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে একদল দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী। যারা বিষয় ভিত্তিক মানসম্মত আধূনিক পাঠদানের মাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রেখেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানীর আন্তরিক প্রচেস্টা, পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহায়তায় বিদ্যালয়ে সেই সম্ভবনা তৈরী হয়েছে। প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেস্টায় সম্ভব হচ্ছে শতভাগ উপস্থিতিতে টেকশই পাঠদান মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবক পর্যায়ে স্বপ্ন বিনির্মাণ। উন্নত ও বাস্তব সম্মত শিক্ষার জন্য চলছে, প্রশিক্ষণ ও বিশ্লেষণ।
জানা গেছে ১৯৬৭ সালে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষ্ণপুর গ্রামে এক একর জমির উপর কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন ও ১৯৮০ সালে এমপিওভুক্তকরণ হয়। বিদ্যালয়ে ১৩ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারী এবং প্রায় ৩৮৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
গত শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষায় ৯৭ জন পরীক্ষার্থীর ৯৭ জনই উত্তীর্ণ হয়েছে,এর মধ্যে ১০ জন এপ্লাস পেয়েছেন,পাশের হার শতভাগ। চলতি শিক্ষাবর্ষে ৫৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবেন।
জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় গ্রামীণ জনপদের ছেলেমেয়েদের ঘরের পাশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃস্টি করে দিয়েছে। শহর বা গ্রাম বলে কোনো কথা নয় প্রতিষ্ঠান প্রধানের সদিচ্ছা থাকলে যে কোনো স্থানে সুন্দর পরিবেশে সৃষ্টি ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখা যায় কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত বিতর্ক প্রতিযোগীতা, চিত্রাঙ্কন, খেলা-ধূলা ও বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয় এতে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে সৃজনশীল ও মননশীল হিসেবে গড়ে উঠছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানী বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, তাদের একটা একাডেমিক ভবন প্রয়োজন, এছাড়াও বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরী ও সীমানা প্রচীর প্রয়োজন। তাহলে তারা শিক্ষা বিস্তারে আরো বেশী অবদান রাখতে পারবেন।
প্রিন্ট