মোঃ রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি
মাগুরা সদর উপজেলা চাউলিয়া ইউনিয়নের জুইতাড়া গ্রাম থেকে সরকারি রাস্তার কাটা গাছ উদ্ধার করলেও গ্রেপ্তার কৃতদের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। গত বুধবার, ২২ জানুয়ারি, মাগুরা সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি রাস্তার পাশে কাটা গাছের ঘটনায় গাছব্যাপারী আকরামকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়, তবে এখনো পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুইতাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল বিশ্বাসের পুত্র হাফিজার বিশ্বাস এবং শহরের আনসার কলোনির বিষ্ণু মাস্টারের পুত্র কৃষ্ণ মিলে সরকারি রাস্তার পাশে বড় রেন্টি কড়াই গাছ, মেহগনি গাছ ও বেল গাছ কাটে এবং বিক্রি করে। এই গাছগুলো ক্রয় করেন জুইতাড়া গ্রামের নব শেখের পুত্র কবির শেখ এবং রুমেল নামে এক ব্যক্তি।
হাফিজার বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এটা আমার জায়গার গাছ, আমি কাটবো এবং বিক্রি করবো, এতে ইউএনও বা এসিল্যান্ডের কী, তারা কি ওই গাছের মালিক?”—এভাবে আইনকে উপেক্ষা করেন তিনি।
ঘটনাটি জানানো হলে, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ও এসিল্যান্ড দেওয়ান আসিফ পেলে মাগুরা সদর থানাকে অবগত করেন এবং গাছগুলো জব্দ করার নির্দেশ দেন। মাগুরা সদর থানার এসআই শফিয়ার এবং মালিকগ্রাম ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সোনিয়া আক্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাছগুলো জব্দ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সাইফুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের চাউলিয়া ইউনিয়ন সেক্রেটারি আবেদ আলী, যুবদলের সাবেক নেতা কামরুল মন্ডল সহ স্থানীয় নেতারা।
স্বেচ্ছাসেবক দলের চাউলিয়া ইউনিয়ন সেক্রেটারি আবেদ আলী অভিযোগ করেন, “হাফিজার বিশ্বাস আওয়ামী লীগের লোক, সে জানতো বিএনপির লোকজন এই গাছগুলো কাটতে বাধা দেবে, তাই সে কৃষ্ণের সাথে মিলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গাছগুলো বিক্রি করেছে।”
এসআই শফিয়ার জানান, “সহকারী দায়রা জজ কুষ্টিয়া রাজা মোবাইল ফোনে জানান তার ভাই এই গাছগুলো ক্রয় করেছেন। এরপর আকরাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।” তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর আগেও জুইতাড়া গ্রামের নাদের বিশ্বাস, রাশেদ বিশ্বাস, মিজান বিশ্বাস এবং আজিজার ফকির রাস্তার পাশের সরকারি গাছগুলো কাটেছে।
এদিকে, পরিবেশ রক্ষা এবং সরকারি সম্পদ সুরক্ষায় গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্ন উঠিয়েছে। প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানালেন, “গাছগুলো জব্দ করা হয়েছে, তবে এখনো মামলা হয়নি।” মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান জানান, “আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি, তবে এখনই কোন মামলা হয়নি।” তবে প্রশ্ন উঠছে, সরকারী সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ কেন আইনি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করছে?
প্রিন্ট