মোঃ রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধিঃ
মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবীর অভিযোগ উঠেছে। ১৭ লাখ টাকার একটি বকেয়া বিলের প্রদত্ত চেকের ফান্ড ট্রান্সফারে তিনি এই টাকা দাবী করেন। বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে তিনি নিজেকে বাঁচানোর জন্য পৌরসভার কার্যক্রম বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করেন।
ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে মাগুরা পৌরসভার ঠিকাদার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আশরাফুজ্জামান শামীম জানান, তিনি আজ থেকে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে মাগুরা বাস টার্মিনালের ঠিকাদারি কাজ করেন। সেই কাজের বকেয়া বিল ছিল ১৭ লাখ টাকা। আওয়ামী লীগের পতন হবার পর তিনি সেই বকেয়া বিল তুলতে সচেষ্ট হন। পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুলের সাক্ষরিত চেকে এবং পৌর প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুল কাদের বিলটি পরিশোধ করার জন্য সচিব মোঃ রেজাউল করিমকে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে ১৭ লাখ টাকার চেকও প্রদান করা হয়। কিন্তু চেক জমা দিলে দেখা যায় ঐ ব্যাংক হিসাবে টাকা নেই। ফলে ঠিকাদার শামীম আবার পৌর প্রশাসকের দ্বারস্থ হন। প্রসাশক মহোদয় ঐ হিসাবে ফান্ড ট্রান্সফার এর নির্দেশ দিলে সচিব মোঃ রেজাউল করিম তালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি ঠিকাদার শামীমকে তার কক্ষে ডেকে বলেন আমাদের অফিসের খরচ বাবদ ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তবেই তিনি ঐ হিসাব ফান্ড ট্রান্সফার করবেন।
ঠিকাদার আশরাফুজ্জামান শামীম এই ঘুস দাবীর বিষয়ে প্রতিবাদ করে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলে জানান। এরপরই সচিব মোঃ রেজাউল করিম সকল পৌর কর্মচারীদেরকে উস্কানী দিয়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য করেন।
উল্লেখ্য যে, সচিব মোঃ রেজাউল করিম এর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। তিন শতভাগ আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন সরকারী কর্মকর্তা। শেখ হাসিনার দোসর হিসাবে তার দাপট রয়েছে। এ জন্য তিনি ঘুস ছাড়া কোন কাজই করেন না। মাগুরা পৌরবাসী বিগত ১৫ বছরের আয় ব্যয়ের তদন্ত ও তার কঠোর বিভাগীয় শাস্তি এবং মাগুরা পৌরসভা থেকে অপসারণের দাবী তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
মাগুরা পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, সাবেক মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আহসান বারী ১৭ লাখ টাকার চেক দিয়েছে। তিনি আরও জানান সিদ্ধান্ত ক্রমে রাষ্ট্রের স্বার্থে পরিষদের সরকারের বরাদ্দ চেক কাটা বা বাতিল করা হয় মিটিং এ গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং। এছাড়াও ৫-৬ জন রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়ছিলো তবে আমার শরীরে কোন আঘাত করে নাই আশরাফুজ্জামান শামীম। কথা বাকবিতন্ডা হয়ে ছিলো তবে ঠিকাদার আশরাফুজ্জামান শামীম তার নায্য টাকা পাই এবং পাবে।
মাগুরা পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আহসান বারী বলেন, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) মোহাম্মদ রেজাউল করিম এই চেক কেটে দিয়েছে এবং আশরাফুজ্জামান শামীম তার নায্য পাওনা ১৭ লাখ টাকা ফেরত পাবে এবং ২০১০ সালের প্রকল্পের ফাইল গুলো তে সমস্ত ডকুমেন্টস আছে। দৈনিক সময়ের প্রত্যাশার প্রতিনিধি পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম এর নিকট ঠিকাদার শামীমের প্রকল্পের তথ্য চাইলে তিনি বলেন পৌরসভার হিসাব রক্ষক প্রদীপ কুমার সরকার এর কাছ থেকে নেন। কিন্তু প্রদীপ কুমার সরকারের কাছে গিয়ে ঠিকাদার শামীমের তথ্য চাইলে, প্রদীপ কুমার সরকার বলেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম উনি নিজে এসে ঠিকাদার শামীমের সমস্ত ফাইল পত্র রেজাউল করিমের রুমে নিয়ে গিয়েছেন। এভাবেই সাংবাদিকদের সঙ্গে মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং প্রদীপ কুমার সরকার বিভিন্ন হয়রানি মূলক কথাবাত্রা তালবাহানা করেন এবং কোন তথ্য দিতে নারাজ।
প্রিন্ট