ঢাকা , শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কাশিমপুর কারাগারে ঠাঁই হল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী’র Logo চট্টগ্রামের পটিয়ার পাহাড়ি এলাকা থেকে ৭ শিক্ষার্থী অপহ্রতঃ মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্ত Logo নড়াইলের লোহাগড়ার কাউলিডাঙ্গা বিলে যুবক খুন Logo অভিযুক্ত দুইজনের মধ্যে গ্রেপ্তার এক Logo হত্যা মামলায় কারাগারে আইভী Logo রাজবাড়ীতে পুড়ে গেছে ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার Logo গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মহোদয়ের দিনাজপুর জেলায় আগমন Logo নানান নাটকীয়তার পর ভোরে আ.লীগ নেত্রী আইভি গ্রেফতার Logo তানোরে ফসলী জমি হ্রাস খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে আইনজীবীর গলিত মরদেহ উদ্ধার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

অদম্য মেধাবী প্রান্তি মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত

রবিউল ইসলাম রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার

অদম্য মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাসের পিতা পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রী। মা গৃহিণী। এক ভাইসহ চারজনের পরিবার। বড় ভাই একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে বেকার রয়েছে। বাবার একার আয়ে দু’ভাই বোনের পড়া লেখা ও পরিবারে খরচ চলে। পাশা পাশি মা মুড়ি ভেজে বাবাকে একটু সহযোগীতা করছেন। ধারদেনা করে দু’ভাইবোনকে পড়াশোনা করিয়েছেন রমেন চন্দ্র বিশ্বাস ও চঞ্চলা বিশ্বাস দম্পতি । অভাব ও টানাপোড়েনের সংসার থাকার পরেও মেয়ে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে এই মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাস মেডিকেলে চান্স পেয়েও তার পরিবার ভর্তির টাকা জোগাড় করতে হিমশিম হয়ে পড়ছে।

 

অদম্য মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাস ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলা কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর উত্তরপাড়া গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী রমেন চন্দ্র বিশ্বাস ও চঞ্চলা বিশ্বাস দম্পতির মেয়ে। নিন্ম পরিবারের সন্তান হয়েও আকাশ সমান সপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন এ অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী। হাট গোবিন্দপুর প্রাইমারি স্কুল থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হোন। ২০২২ সালে কানাইপুর বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরিক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য অর্জন করে। ফরিদপুর সারদা সুন্দরী কলেজ থেকে ইন্টার মিডিয়েটেও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। প্রান্তি বিশ্বাস অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় কানাইপুর বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল দত্ত তার নিজেস্ব অর্থদিয়ে ফরিদপুর উন্মেষ নামে একটি কচিং সেন্টারে ভর্তি করান। সেখানে পাঠদান করে প্রথম বারেই ফরিদপুর মেডিকেলে পরিক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়। তবে মেধাবী শিক্ষার্থীর সপ্ন বাঁধা গ্রস্থে টাকায় যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তিনি ও তার পরিবার সরকারি সুযোগসুবিধা ও বিত্তবানদের এগিয়ে এসে সহযোগীতার হাত বাড়ানোর আহবান জানান।

 

মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাস বলেন, মা বাবার অভাবের সংসারে আমাকে তারা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে মানুষ করেছেন। আমার বাবা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা ধারদেনা করে পড়া লেখা চালাচ্ছেন। এমনকি টাকার অভাবে বাবা ও মা’র নামে পাওনাদার মামলাও দায়ের করেছেন। এখন এত কষ্ট করে স্বপ্নের দিগন্তে পা ফেলেও অনিশ্চিত ভবিষ্যতে দিন পার করছি। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা আমাদের। বাবা মাত্র ৫শ টাকা দিন আয় করেন। আবার কোন দিন কাজ বন্ধও থাকে। বাবার টাকা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। আমার পড়ালেখার খরচ কেমনে দিবে!

 

মা চঞ্চলা বিশ্বাস বলেন, আমার মেয়ে ছোট সময় থেকে পড়াশোনায় ভালো। সকল শ্রেণীতে ফাস্ট হয়েছেন। বর্তমানে সে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। অভাবের সংসার থাকার পরও অভাব আমার মেয়েকে মেডিকেলে চান্স পাওয়া আটকাতে পারেনি। তবে ভর্তির টাকা ও সামনের পড়ালেখা খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

 

ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বলেন, প্রান্তি বিশ্বাসের পরিবার অভাবে থাকার পরেও মেডিকেলে চান্স পাওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য এটি অনুপ্রেরণার উদাহরণ। তার প্রতিভা সে বিকশিত ঘটিয়ে মেধার সাক্ষর রেখেছে। আমি আমার উপজেলা থেকে তার জন্য চেষ্টা করবো আর্থিক সহযোগীতা করার। তার ভর্তি ও পড়াশোনার কোন ধরণের সমস্যা না হয় সেদিকেও আমরা লক্ষ রাখবো।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কাশিমপুর কারাগারে ঠাঁই হল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী’র

error: Content is protected !!

অদম্য মেধাবী প্রান্তি মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত

আপডেট টাইম : ১২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
রবিউল ইসলাম রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার :

রবিউল ইসলাম রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার

অদম্য মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাসের পিতা পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রী। মা গৃহিণী। এক ভাইসহ চারজনের পরিবার। বড় ভাই একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে বেকার রয়েছে। বাবার একার আয়ে দু’ভাই বোনের পড়া লেখা ও পরিবারে খরচ চলে। পাশা পাশি মা মুড়ি ভেজে বাবাকে একটু সহযোগীতা করছেন। ধারদেনা করে দু’ভাইবোনকে পড়াশোনা করিয়েছেন রমেন চন্দ্র বিশ্বাস ও চঞ্চলা বিশ্বাস দম্পতি । অভাব ও টানাপোড়েনের সংসার থাকার পরেও মেয়ে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে এই মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাস মেডিকেলে চান্স পেয়েও তার পরিবার ভর্তির টাকা জোগাড় করতে হিমশিম হয়ে পড়ছে।

 

অদম্য মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাস ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলা কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর উত্তরপাড়া গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী রমেন চন্দ্র বিশ্বাস ও চঞ্চলা বিশ্বাস দম্পতির মেয়ে। নিন্ম পরিবারের সন্তান হয়েও আকাশ সমান সপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন এ অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী। হাট গোবিন্দপুর প্রাইমারি স্কুল থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হোন। ২০২২ সালে কানাইপুর বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরিক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য অর্জন করে। ফরিদপুর সারদা সুন্দরী কলেজ থেকে ইন্টার মিডিয়েটেও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। প্রান্তি বিশ্বাস অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় কানাইপুর বেগম রোকেয়া কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল দত্ত তার নিজেস্ব অর্থদিয়ে ফরিদপুর উন্মেষ নামে একটি কচিং সেন্টারে ভর্তি করান। সেখানে পাঠদান করে প্রথম বারেই ফরিদপুর মেডিকেলে পরিক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়। তবে মেধাবী শিক্ষার্থীর সপ্ন বাঁধা গ্রস্থে টাকায় যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তিনি ও তার পরিবার সরকারি সুযোগসুবিধা ও বিত্তবানদের এগিয়ে এসে সহযোগীতার হাত বাড়ানোর আহবান জানান।

 

মেধাবী প্রান্তি বিশ্বাস বলেন, মা বাবার অভাবের সংসারে আমাকে তারা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে মানুষ করেছেন। আমার বাবা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা ধারদেনা করে পড়া লেখা চালাচ্ছেন। এমনকি টাকার অভাবে বাবা ও মা’র নামে পাওনাদার মামলাও দায়ের করেছেন। এখন এত কষ্ট করে স্বপ্নের দিগন্তে পা ফেলেও অনিশ্চিত ভবিষ্যতে দিন পার করছি। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা আমাদের। বাবা মাত্র ৫শ টাকা দিন আয় করেন। আবার কোন দিন কাজ বন্ধও থাকে। বাবার টাকা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। আমার পড়ালেখার খরচ কেমনে দিবে!

 

মা চঞ্চলা বিশ্বাস বলেন, আমার মেয়ে ছোট সময় থেকে পড়াশোনায় ভালো। সকল শ্রেণীতে ফাস্ট হয়েছেন। বর্তমানে সে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। অভাবের সংসার থাকার পরও অভাব আমার মেয়েকে মেডিকেলে চান্স পাওয়া আটকাতে পারেনি। তবে ভর্তির টাকা ও সামনের পড়ালেখা খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

 

ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বলেন, প্রান্তি বিশ্বাসের পরিবার অভাবে থাকার পরেও মেডিকেলে চান্স পাওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য এটি অনুপ্রেরণার উদাহরণ। তার প্রতিভা সে বিকশিত ঘটিয়ে মেধার সাক্ষর রেখেছে। আমি আমার উপজেলা থেকে তার জন্য চেষ্টা করবো আর্থিক সহযোগীতা করার। তার ভর্তি ও পড়াশোনার কোন ধরণের সমস্যা না হয় সেদিকেও আমরা লক্ষ রাখবো।


প্রিন্ট