ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তানোরে পুকুর ডাকাতি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

রাজশাহীর তানোরের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক মাছ চাষিদের প্রতারণায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পুকুরের পরিবর্তে পতিত বা কৃষি জমির খাজনা দিয়ে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে।

 

জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) শস্য ভান্ডার। হাতিশাইল মাঠে শ্রেণী পরিবর্তন না করেই প্রায় তিনশ’ বিঘা তিন-ফসলী কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করা হয়েছে। এদিকে ইজারা নিয়ে এসব পুকুরে বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরের বার্ষিক ইজারা মুল্য প্রায় লাখ টাকা। কিন্ত্ত পুকুরের পরিবর্তে কৃষি বা পতিত জমি দেখিয়ে এসব পুকুরের খাজনা দেয়া হচ্ছে। এতে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

সুত্র জানায় পৌর এলাকায় পুকুরের বার্ষিক কর ৫০ টাকা শতক, পৌরসভার বাইরে ৪০ টাকা শতক এবং কৃষি ও পতিত জমি ২ টাকা শতক। সেই হিসেবে ৩৩ শতক বা এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরের খাজনা বছরে এক হাজার ৩২০ টাকা।কিন্ত্ত কৃষি জমি দেখিয়ে এক বিঘা আয়তনের পুকুরে তারা খাজনা দিচ্ছে দু’টাকা শতক হিসেবে মাত্র ৬৪ টাকা। অর্থাৎ প্রতি শতকে ৩৮ টাকা করে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের এসব দুর্নীতে সহায়তা করছে ভুমি অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী। অথচ এক বিঘা আয়তনের পুকুরের ইজারা মুল্য প্রায় লাখ টাকা।

 

এদিকে উপজেলার কামারগাঁ ইউপির হাতিশাইল মাঠে গভীর নলকুপের আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন ও স্কীমভুক্ত তিন ফসলী জমি ধ্বংস করে ফের অবৈধ পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে জমি সংকটের কারণে গভীর নলকুপ প্রায় অকেজো হতে চলেছে। এসব জমিতে চাষাবাদের সুবিধার জন্য বিএমডিএ কোটি টাকা খরচ করে গভীর নলকুপ স্থাপন, আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন ও ক্রসড্যাম নির্মাণ করেছে। এমনকি সম্পুরুক সেচের জন্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে মাঠের খাড়ি পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে ।

অথচ এসব অবৈধ পুকুর খননে এলাকার প্রায় সহস্রাধিক কৃষি নির্ভর শ্রমজীবী কর্মহীন ও পরিবার নিয়ে তাদের জীবীকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়াও গোচারণ ভুমি সংকটে গবাদিপশু লালন-পালন বন্ধ হয়ে পড়েছে। আবার অকাল জলাবদ্ধতার কারণে অনেক জমির ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। অনেক শ্রমজীবীদের শ্রমের সন্ধানে এলাকা ছাড়তে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এক সময় শ্রমজীবী পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিরা এসব কৃষি জমিতে শ্রমদিয়ে ও অসময়ে গবাদিপশুর চারণভুমি হিসেবে ব্যবহার করতো। কিন্ত্ত কেশরহাটের জনৈক সাদিকুল ইসলাম ও আব্দুল করিমের পুকুর সন্ত্রাসে সেই সব এখন কেবলই অতীত। তিন ফসলী মাঠ এখন বাণিজ্যিক পুকুরে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগস্টে শহীদদের স্মরণে মহম্মদপুরে বিএনপির মৌন মিছিল

error: Content is protected !!

তানোরে পুকুর ডাকাতি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

আপডেট টাইম : ০৯:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

রাজশাহীর তানোরের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক মাছ চাষিদের প্রতারণায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পুকুরের পরিবর্তে পতিত বা কৃষি জমির খাজনা দিয়ে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে।

 

জানা গেছে, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) শস্য ভান্ডার। হাতিশাইল মাঠে শ্রেণী পরিবর্তন না করেই প্রায় তিনশ’ বিঘা তিন-ফসলী কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করা হয়েছে। এদিকে ইজারা নিয়ে এসব পুকুরে বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরের বার্ষিক ইজারা মুল্য প্রায় লাখ টাকা। কিন্ত্ত পুকুরের পরিবর্তে কৃষি বা পতিত জমি দেখিয়ে এসব পুকুরের খাজনা দেয়া হচ্ছে। এতে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

সুত্র জানায় পৌর এলাকায় পুকুরের বার্ষিক কর ৫০ টাকা শতক, পৌরসভার বাইরে ৪০ টাকা শতক এবং কৃষি ও পতিত জমি ২ টাকা শতক। সেই হিসেবে ৩৩ শতক বা এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরের খাজনা বছরে এক হাজার ৩২০ টাকা।কিন্ত্ত কৃষি জমি দেখিয়ে এক বিঘা আয়তনের পুকুরে তারা খাজনা দিচ্ছে দু’টাকা শতক হিসেবে মাত্র ৬৪ টাকা। অর্থাৎ প্রতি শতকে ৩৮ টাকা করে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের এসব দুর্নীতে সহায়তা করছে ভুমি অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী। অথচ এক বিঘা আয়তনের পুকুরের ইজারা মুল্য প্রায় লাখ টাকা।

 

এদিকে উপজেলার কামারগাঁ ইউপির হাতিশাইল মাঠে গভীর নলকুপের আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন ও স্কীমভুক্ত তিন ফসলী জমি ধ্বংস করে ফের অবৈধ পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে জমি সংকটের কারণে গভীর নলকুপ প্রায় অকেজো হতে চলেছে। এসব জমিতে চাষাবাদের সুবিধার জন্য বিএমডিএ কোটি টাকা খরচ করে গভীর নলকুপ স্থাপন, আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন ও ক্রসড্যাম নির্মাণ করেছে। এমনকি সম্পুরুক সেচের জন্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে মাঠের খাড়ি পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে ।

অথচ এসব অবৈধ পুকুর খননে এলাকার প্রায় সহস্রাধিক কৃষি নির্ভর শ্রমজীবী কর্মহীন ও পরিবার নিয়ে তাদের জীবীকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়াও গোচারণ ভুমি সংকটে গবাদিপশু লালন-পালন বন্ধ হয়ে পড়েছে। আবার অকাল জলাবদ্ধতার কারণে অনেক জমির ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। অনেক শ্রমজীবীদের শ্রমের সন্ধানে এলাকা ছাড়তে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এক সময় শ্রমজীবী পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিরা এসব কৃষি জমিতে শ্রমদিয়ে ও অসময়ে গবাদিপশুর চারণভুমি হিসেবে ব্যবহার করতো। কিন্ত্ত কেশরহাটের জনৈক সাদিকুল ইসলাম ও আব্দুল করিমের পুকুর সন্ত্রাসে সেই সব এখন কেবলই অতীত। তিন ফসলী মাঠ এখন বাণিজ্যিক পুকুরে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।


প্রিন্ট