ঢাকা , বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বিএনপি ক্ষমতায় এলে চেম্বারসহ সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে -আমীর খসরু

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘গত ১৫ বছরে সুবিধাবাদীদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তির মধ্যদিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। এর পুনরুদ্ধারে গণতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করতে হবে। দেশের সব চেম্বার থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিতাড়িত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রেখে চেম্বারের গণতন্ত্রায়ণ হবে না।’

 

তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে চেম্বারসহ সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।

 

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে শহরের একটি অভিজাত হোটেলে “খুলনা বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা অংশ নেয়।

 

সংস্কার অনেকের জন্য নতুন হতে পারে কিন্তু বিএনপির জন্য নয়, উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সংস্কারের জন্য বিএনপির কারও কাছ থেকে ছবক নেওয়ার প্রয়োজন নেই। সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপি সবচেয়ে বেশি উৎসাহী। আমরা জাতীয় সরকার গঠন করে ৩১ দফা সংস্কার করব। সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যের দরকার হয়। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সংস্কার টেকসই ও গ্রহণযোগ্য হবে না। যেসব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য আছে, সে বিষয়গুলো সংস্কার করুন।’

 

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যত সংস্কার হয়েছে তার ৯০ শতাংশ বিএনপিই বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ যেখানে এসেছে, এটা বিএনপির সংস্কারের কারণেই। সেটা শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমানের একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র; সরকার চালিত মুক্ত অর্থনীতি থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি থেকে। প্রতিটি পদক্ষেপে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ এখানে এসেছে। আমরা একটি শক্তিশালী অর্থনীতি করেছিলাম; সেটা অব্যাহত থাকলে অনেক আগেই উন্নতশালী দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ। কিন্তু বিগত সময়ে লুটপাটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ এর মাধ্যমে দেশ সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে ছিলেন। সেখানে দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সবগুলো দেওয়া হয়েছে ছয় বছর আগে। আর দেড় বছর আগে ৩১ দফা তৈরি করেছি, আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দলনে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলো তাদের মতামতের ভিত্তিতে। সকলের মিলেই জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

 

নতুন ভ্যাট ও শুল্কে আরো চাপে পড়বে মানুষ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘মানুষ নিত্যপণ্যে দামে নাকাল হয়ে পড়েছে। দু’বেলা খেতে পারছেনা তারা। টিসিবির ট্রাকের লাইনে মানুষের দীর্ঘ সারি। অনেকের দৈনন্দিন জীবন চালাতে কঠিন হয়ে পড়েছে মূল্যস্ফীতির কারণে। এই কর ভ্যাট দারিদ্র সীমার নিচে যাবে অকল্পনীয়। ফলে এই সরকারকে বলছি, কর- ভ্যাট প্রত্যাহার করেন। আপনাদের এখন করা উচিত, স্বৈরাচার সরকারের বাজেট বাতিল করা। আপনারা এখন অন্তবর্তী বাজেট ঘোষণা করেন। কারণ স্বৈরাচারের বাজেট তো দুর্নীতির আর লুটপাটের বাজেট ছিল।’

 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ ব্যবসায়ীকভাবে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এখানে ব্যবসা করা কঠিন ব্যাপার। সামনে মধ্যম আয়ের দেশে যেতে হলে সব কিছু সহজ ও ব্যবসা বন্ধব আইন করতে হবে। ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুললে কর্মসংস্থান বাড়বে না। ব্যবসায়ীদেরকে সাহস করে শিল্প প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সততা ও দেশেপ্রেম থাকতে হবে।’

 

তিনি বলেন, ‘দেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, বিদ্যুৎ- গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে না। এজন্য আগে দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন। আগামীতে বিএনপি যদি ২০০ আসন পায়, তারপরও জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।’

 

যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী সদস্য শ্যামল দাসের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্প উদ্যোক্তা কাজী সালিমুল হক কামাল, বিজিএমইএ’র সাবেক সহ সভাপতি মাহমুদুল হাসান বাবুল, বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক তানভীরুল ইসলাম সোহান, ব্যবসায়ী চিন্ময় সাহা, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শাহজাহান হোসেন, জ্বালানী তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল, ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান তুহিন, খুলনা চেম্বারের পরিচালক হাফিজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া চেম্বারের পরিচালক খন্দকার জিয়াউল হক, বাগেরহাট চেম্বারের সভাপতি শেখ মঈনুদ্দিন আহমদ প্রমুখ। এ সময় অন্যান্য চেম্বারের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ জেলায় বিভিন্ন সমস্যা, প্রস্তাবনা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, যশোরে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল ও নওয়াপাড়ায় নৌবন্দর রয়েছে। বাগেরহাটে মোংলা সুমদ্র বন্দর ও সাতক্ষীরায় রয়েছে ভোমরা বন্দর। বেনাপোল- ভাঙ্গা সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা গেলে এই অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। নওয়াপাড়া নৌবন্দরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারছেনা। মোংলা বন্দরে রফতানি পণ্য স্প্রিডি মানি দেয়া লাগে। যেখানে ভারত সরকার রফতানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়, সেখানে বাংলাদেশ সরকার দেয় ১২ শতাংশ। বক্তারা আরও বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে ফেসিস্টরা অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে ডলার পাচার করে। খুলনা বিভাগের সব নিউজ প্রিন্ট ও জুটমিলগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে বিগত সরকার। এখনও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ পাচ্ছে না। এর মধ্যে সরকার ভ্যাট বাড়িয়েছে। ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে, এনবিআর যারা ভ্যাট দিচ্ছে তাদেরকেই চেপে ধরছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। নতুন কোনা উদ্যোগ তারা নিচ্ছেনা।

 

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সহ সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দিন টিপু প্রমুখ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

বিএনপি ক্ষমতায় এলে চেম্বারসহ সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে -আমীর খসরু

আপডেট টাইম : ২২ ঘন্টা আগে
কাজী নূর, যশোর জেলা প্রতিনিধি :

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘গত ১৫ বছরে সুবিধাবাদীদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তির মধ্যদিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। এর পুনরুদ্ধারে গণতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করতে হবে। দেশের সব চেম্বার থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিতাড়িত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রেখে চেম্বারের গণতন্ত্রায়ণ হবে না।’

 

তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে চেম্বারসহ সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।

 

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে শহরের একটি অভিজাত হোটেলে “খুলনা বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা অংশ নেয়।

 

সংস্কার অনেকের জন্য নতুন হতে পারে কিন্তু বিএনপির জন্য নয়, উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সংস্কারের জন্য বিএনপির কারও কাছ থেকে ছবক নেওয়ার প্রয়োজন নেই। সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপি সবচেয়ে বেশি উৎসাহী। আমরা জাতীয় সরকার গঠন করে ৩১ দফা সংস্কার করব। সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যের দরকার হয়। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সংস্কার টেকসই ও গ্রহণযোগ্য হবে না। যেসব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য আছে, সে বিষয়গুলো সংস্কার করুন।’

 

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যত সংস্কার হয়েছে তার ৯০ শতাংশ বিএনপিই বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ যেখানে এসেছে, এটা বিএনপির সংস্কারের কারণেই। সেটা শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমানের একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র; সরকার চালিত মুক্ত অর্থনীতি থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি থেকে। প্রতিটি পদক্ষেপে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ এখানে এসেছে। আমরা একটি শক্তিশালী অর্থনীতি করেছিলাম; সেটা অব্যাহত থাকলে অনেক আগেই উন্নতশালী দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ। কিন্তু বিগত সময়ে লুটপাটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ এর মাধ্যমে দেশ সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে ছিলেন। সেখানে দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সবগুলো দেওয়া হয়েছে ছয় বছর আগে। আর দেড় বছর আগে ৩১ দফা তৈরি করেছি, আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দলনে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলো তাদের মতামতের ভিত্তিতে। সকলের মিলেই জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

 

নতুন ভ্যাট ও শুল্কে আরো চাপে পড়বে মানুষ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘মানুষ নিত্যপণ্যে দামে নাকাল হয়ে পড়েছে। দু’বেলা খেতে পারছেনা তারা। টিসিবির ট্রাকের লাইনে মানুষের দীর্ঘ সারি। অনেকের দৈনন্দিন জীবন চালাতে কঠিন হয়ে পড়েছে মূল্যস্ফীতির কারণে। এই কর ভ্যাট দারিদ্র সীমার নিচে যাবে অকল্পনীয়। ফলে এই সরকারকে বলছি, কর- ভ্যাট প্রত্যাহার করেন। আপনাদের এখন করা উচিত, স্বৈরাচার সরকারের বাজেট বাতিল করা। আপনারা এখন অন্তবর্তী বাজেট ঘোষণা করেন। কারণ স্বৈরাচারের বাজেট তো দুর্নীতির আর লুটপাটের বাজেট ছিল।’

 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ ব্যবসায়ীকভাবে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এখানে ব্যবসা করা কঠিন ব্যাপার। সামনে মধ্যম আয়ের দেশে যেতে হলে সব কিছু সহজ ও ব্যবসা বন্ধব আইন করতে হবে। ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুললে কর্মসংস্থান বাড়বে না। ব্যবসায়ীদেরকে সাহস করে শিল্প প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সততা ও দেশেপ্রেম থাকতে হবে।’

 

তিনি বলেন, ‘দেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, বিদ্যুৎ- গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে না। এজন্য আগে দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন। আগামীতে বিএনপি যদি ২০০ আসন পায়, তারপরও জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।’

 

যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী সদস্য শ্যামল দাসের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্প উদ্যোক্তা কাজী সালিমুল হক কামাল, বিজিএমইএ’র সাবেক সহ সভাপতি মাহমুদুল হাসান বাবুল, বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক তানভীরুল ইসলাম সোহান, ব্যবসায়ী চিন্ময় সাহা, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শাহজাহান হোসেন, জ্বালানী তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল, ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান তুহিন, খুলনা চেম্বারের পরিচালক হাফিজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া চেম্বারের পরিচালক খন্দকার জিয়াউল হক, বাগেরহাট চেম্বারের সভাপতি শেখ মঈনুদ্দিন আহমদ প্রমুখ। এ সময় অন্যান্য চেম্বারের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ জেলায় বিভিন্ন সমস্যা, প্রস্তাবনা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, যশোরে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল ও নওয়াপাড়ায় নৌবন্দর রয়েছে। বাগেরহাটে মোংলা সুমদ্র বন্দর ও সাতক্ষীরায় রয়েছে ভোমরা বন্দর। বেনাপোল- ভাঙ্গা সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা গেলে এই অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। নওয়াপাড়া নৌবন্দরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারছেনা। মোংলা বন্দরে রফতানি পণ্য স্প্রিডি মানি দেয়া লাগে। যেখানে ভারত সরকার রফতানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়, সেখানে বাংলাদেশ সরকার দেয় ১২ শতাংশ। বক্তারা আরও বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে ফেসিস্টরা অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে ডলার পাচার করে। খুলনা বিভাগের সব নিউজ প্রিন্ট ও জুটমিলগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে বিগত সরকার। এখনও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ পাচ্ছে না। এর মধ্যে সরকার ভ্যাট বাড়িয়েছে। ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে, এনবিআর যারা ভ্যাট দিচ্ছে তাদেরকেই চেপে ধরছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। নতুন কোনা উদ্যোগ তারা নিচ্ছেনা।

 

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সহ সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দিন টিপু প্রমুখ।


প্রিন্ট