মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
কেরাম বোর্ডের ভাড়া বাবদ ১০ টাকা না দেয়ায় ফারুক ফকির (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মামুন শিকদার (৩৪) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আদালত তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।
সাজাপ্রাপ্ত মামুন শিকদার গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের বিশারী বাগ বাহারা এলাকার বাসিন্দা । আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মামুন সিকদার পলাতক ছিলেন।
আদালত সুত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে ২০১৫ সালের ১৬ই এপ্রিল জেলার ভাঙ্গা উপজেলার পীরেরচর বাজারে কেরাম বোর্ডের ভাড়া বাবদ ১০ টাকা না দেয়াকে কেন্দ্র করে মামুন শিকদারকে গালিগালাজ করে নিহত ফারুক ফকিরের ভাতিজা আক্তার ফকির। এক পর্যায়ে মামুন শিকদার উত্তেজিত হয়ে আক্তারকে কিল-ঘুষি মারে এবং কোমরে গোজা চাকু দিয়ে কোপ দেয়। বিষয়টি দেখে ভাতিজাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায় ফারুক ফকির। তখন ফারুকের বুকে চাকু দিয়ে কোপ দেয় মামুন। এক পর্যায়ে ফারুক মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে মামুনকে গণপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় ওইদিনই ভাঙ্গা থানায় মামুনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা শাহ জাহান ফকির।
২০১৭ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ওসি মো. এমদাদুল হক মিয়া মামুন শিকদারের আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি মো. রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, এ মামলায় আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। তবে পরে তিনি জামিনে বের হয়ে আত্মগোপন করেন।
তিনি বলেন, এ রায়ে ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এর ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
প্রিন্ট