আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে আলু বীজ রোপণ করে বিভিন্ন এলাকার অনেক আলু চাষি নিঃস্ব হবার পথে। এঘটনায় কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকেরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বীজ ব্যবসায়ীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
জানা গেছে,উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের (ইউপি)শুকদেবপুর গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের পুত্র নছির উদ্দিন আলু বীজ নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নছির উদ্দিন বিভিন্ন কোম্পানির আলু বীজের প্যাকেটে খাবার আলু রিপ্যাক করে বীজ আলু বলে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। নছির উদ্দিন শুধু আলু বীজ নয় বিভিন্ন কোম্পানির নিম্নমানের কীটনাশক এনে কৃষকদের কাছে উচ্চ দামে বিক্রি করেছেন। নছির উদ্দিনের কাছে থেকে আলু বীজ ও কীটনাশক কিনে কৃষকেরা প্রতারিত হয়েছে।
শুকদেবপুর গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম (৪৫) বলেন, তিনি নছির উদ্দিনের কাছে থেকে একশ’ টাকা কেজি দরে আলু বীজ কিনে সাড়ে তিন বিঘা আলু চাষ করেছেন। এতে তার প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে।কিন্ত্ত নকল বীজের কারণে তার আলুখেতে আলু গাছ ভাল হয়নি। যেগুলো গাছ হয়েছে তার সিংহভাগ গাছে হলদে রঙ ধারণ ও গোড়া পচে যাচ্ছে।
একই গ্রামের কৃষক জাইদুর রহমান বলেন, তিনি নছির উদ্দিনের কাছে থেকে আলু বীজ কিনে ৭ বিঘা জমিতে আলু বীজ রোপণ করেছেন। কিন্ত্ত নকল বীজের কারণে আলুখেতে ভালো আলু গাছ গজায়নি। শুধু আশরাফুল ও জাইদুর নয় তাদের মতো অনেক কৃষক নছিরের কাছে থেকে আলু বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন।
কৃষকেরা জানান, আওয়ামী মতাদর্শী নছির উদ্দিন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রায় ১৭ বছর যাবত নকল আলু বীজ ও নকল কীটনাশক বিক্রি করে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা প্রতারক নছিরকে গ্রেফতার,দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এক বিঘা আলু চাষে খরচ হবে প্রায় এক লাখ টাকা। এর মধ্যে জড়ি ভাড়া ৩০ হাজার, বীজ ৩০ হাজার, সার ৭ হাজার,জমি চাষ আড়াই হাজার,রোপণে ৪ হাজার, পানি দেড় হাজার, টব দেয়া ও সার কীটনাশক ৬ হাজারসহ বিবিধ খরচ মিলে প্রায় এক লাখ টাকা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নছির উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আলু বীজের জন্য নয় তারা জমির ভালমতো দেখভাল করতে পারেনি তার জন্য এই সমস্যা হয়েছে।
প্রিন্ট