রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৮ টার দিকে উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুলপুর সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সাব্বির হোসেন জয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় স্থানীয় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সাথে ওই ছাত্রলীগ কর্মীর কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে সাগর নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী রঘুনাথপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে মো: আরাফাত রহমান সেন্টু , মৃত শমসের রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান ও আড়বাব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল বারির ছেলে আব্দুল মান্নানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে টেলিভিশন, ফ্রিজ, ওয়্যারড্রব, মোটরসাইকেল ও আসবাবপত্র সহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
এ সময় এক সেনা সদস্যসহ ৬ জন আহত হন। আহতরা হলেন রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে আব্দুল মান্নান (৬০), আব্দুল মান্নানের ছেলে সোহাগ (৪০), সোহাগের ছেলে সাব্বির হোসেন জয় (২০), আবু খায়েরের ছেলে আবু হুরায়রা (১৭), ছাত্রদল কর্মী সাগর (২১), আব্দুল মান্নানের বাড়িতে বেড়াতে আসা নওগাঁ জেলার মান্দা থানার কদমতলী গ্রামের মমতাজুর রহমানের ছেলে সেনা সদস্য জিহাদ হাসান (২৫)। বাঁশের আঘাতে সেনা সদস্য জিহাদের মাথা ফেটে গেলে তাকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে সেনাসদস্য জিহাদ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঘটনার বিষয়ে আব্দুল মান্নান সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, “আমার নাতি জয়ের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা আমার বাড়ি সহ আরো দুই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।”
এ বিষয়ে আড়বাব ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আলাল সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, “ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে প্রথমে ছাত্রদল ও আ.লীগের নেতাকর্মীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আ.লীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদেরকে মারধর করে। এ ঘটনায় বিএনপি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুরের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বিষয়টি তার জানা নেই বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, “রবিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও লালপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ বিষয়ে থানায় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রিন্ট