মোঃ হাসান আলী, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সুষম বন্ধুত্বের সম্পর্ক চাই। তবে কারও প্রভুত্ব মেনে নেওয়া হবে না, এদেশের মানুষ জেগে উঠতে শিখেছে। জেগে ওঠা জনগন কারও প্রভুত্ব মানবে না। গত ১৬ বছরে পূরো বাংলাদেশ একটি বন্দিশালা বানিয়েছিল আওয়ামীলীগ। বিনা দোষে আমাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ডান্ঢা বেরি পরিয়ে আমাদের আদালতে হাজির করা হতো। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে যারাই সংগ্রাম করতে চেয়েছে তাদেরই ত্রুটি চেপে ধরা হয়েছিল। তারা নির্বাচরে মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তুু মানুষ হত্যা করে তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। এদেশের মানুষ গণশত্রুদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ তুলেছিল। জুলাই আগস্টে হাজার হাজার ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। তাদের একজন নেতা আস্ফালন করে বলেছিল ছাত্রদের আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। একজন বিচারপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে ফাঁসি দিয়ে টকশোতে আস্ফালন করে বলেছিলেন “সাঈদিকে ফাঁসি দিয়ে আসলাম”। কিন্তুু তাদের পরিনতি কি হয়েছে তা সারা পৃথিবী দেখেছে। তিনি বলেন, অহংকার ভালো নয়, যারা অহংকার করে কথা বলতেন তারা এখন কোথায়। তারা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কাজিপুর উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে আলমপুর চৌরাস্তা গোলচত্বরে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি রফিকুল ইসলাম খাঁন বলেন, ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি জনগনের বুকে মেরে অবৈধ সরকারকে যারা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। লুটপাটকারী এসব চোরদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঢিলেঢালা ভাবে দেশ চালালে হবে না। শক্ত হাতে দেশ চালানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন আরও বলেন, যে ট্রাইব্যুনালে ইসলামী আন্দোলনের সিফাহী সালার মাওলানা নিজামীকে হত্যা করেছে সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করতে হবে। হঠাৎ সচিবলায়ে আগুন এটা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। পতিত সরকারের মুখ্য সচিবদের দপ্তরে রক্ষিত হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচারের তথ্যবহুল ফাইল ছিল তা নিঃশেষ করতেই এই আগুন।
তিনি বলেন, যে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না। পৃথিবীতে ফিরে আসার নজিরও নাই। জামায়াতী ইসলামী আগামী দিনে এদেশকে একটি মানবিক ইসলামী কল্যান রাষ্ট্র তৈরীতে চেষ্টা চালাচ্ছে। যেখানে চাদাঁবাজী ও দখলদারিত্বের ঠাঁই হবে না। জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায় না কিন্তুু ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে চায়। পৃথিবীতে নবী আম্বিয়া (আঃ) কে ইসলাম বিজয়ী করার দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছিল। আমরা সেই নবী রাসূলদের অনুসরণ করতে চাই। ইসলামী কল্যান রাষ্ট্রে আমরা রাজাও হবো না, জনগণকে প্রজাও বানাবো না। তিনি আরও বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা সব কাজই করতে পারবে। তাদের জন্য আলাদা সুব্যবস্থা থাকবে।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কাজিপুর উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেক্রেটারী অধ্যাপক আরমান আরমান হোসেন ও কাজিপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হাসান মনসুরের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা শাহিনুর আলম, ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবী আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক আব্দুর রহিম।
অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুস ছালাম, পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল লতিফ, রায়গঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুস সাত্তার, শেরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান দবিউর রহমান, শ্রমিক কল্যান জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট ছাইদুল ইসলাম।
প্রিন্ট