আব্দুল জব্বার ফারুক, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি
শাহাগোলা রেলওয়ে ষ্টেশনের অবস্থা এক সময় রমরমা ছিল| সেই রেলওয়ে ষ্টেশনের পাশে একটি ছোট ঝুপরি ঘরেই শামীম মিয়া ১৯৮৮ সালে প্রথম লাল চা দিয়েই চায়ের দোকান শুরু করে| সময়টা এখন থেকে প্রায় ৩৮বছর আগে এর পর থেকে সে একটানা ভাবে চা বিক্রি করে যাচ্ছে শামীম মিয়া| শাহাগোলা রেলওয়ে ষ্টেশন আগের মত জমজমাট নেই ষ্টেশন মাষ্টারের অফিস এখন তালা বদ্ধ থাকে|
এক সময় এই ষ্টেশনে ৪/৫ টি লোকাল মেল ট্রেন থামত এখন শুধু একটি রকেট মেল ট্রেন থামে এই ট্রেনটি খুলনা টু চিলাহাটি ২৪ আপ ২৩ ডাউন| আর একটি ট্রেন সরকারি ভাবে চলে সেটি হলো উত্তরা| এই উত্তরা ট্রেনটি শাহাগোলা ষ্টেশনে থামে| উত্তরা ট্রেনটি রাজশাহী টু পার্বতীপুর ৩৪ আপ ৩২ ডাউন| এই দুটি ট্রেন থামলেও টিকেট সংগ্রহের ব্যাবস্হা না থাকাই যাএীদের পদ চারনা কম| এরপর ও শত প্রতিকুলতার মধ্যে ও টিকে আছে শামীম মিয়ার চায়ের দোকানটি।
শামীম মিয়ার বয়স এখন প্রায় ৫৫ বছর। তার বাড়ী আএাই উপজেলার শাহাগোলা গ্রামে ৩৮ বছর ধরে চা বিক্রি করছেন শামীম| ছোট বেলায় তার বাবা মা মারা গেছে | মা বাবা না থাকাই প্রাতিষ্টানিক শিক্ষা আর্জন করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি| শামীম মিয়া তাই আক্ষেপ করেই বললেন আমি চা বিক্রি করে সংসার চালাই তারপরেও আমি আমার সন্তানদের শিক্ষিত করতে চাই| আমার এক ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে ও এক মেয়ে ৫ ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। এখনও তার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি| চা বিক্রি করেই খরচ জোগান।
এখন দোকান থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই সারা বছর চলে তার সংসার খরচ শামীম মিয়ার চায়ের একটা সুনাম রয়েছে শামীম টি ষ্টল শাহাগোলা ষ্টেশনের ঐতিহ্য।নিজ জেলা নওগাঁ, বগুড়া, নাটোর ও জয়পুরহাট এর বিভিন্ন উপজেলা জুরে ট্রেনের যাত্রী না হলেও বিভিন্ন অঞ্চল ও দুর দুরান্ত থেকে আসে চা পিপাসুরা মালাই চা পান করতে,কেউ বা আসে মটরসাইকেল যোগে , কেউ বা ট্রেনে, আবার অনেকে সান্তাহার, রাণীনগর ও আত্রাই থেকে সিএনজি যোগে আসে মালাই চা খাওয়ার জন্য শামীম টি ষ্টলে অপেক্ষা করতে থাকে। গত শুক্রবার শাহাগোলা ষ্টেসনে গিয়ে দেখা যায় শামীম মিয়া চা তৈরিতে ব্যাস্ত সময় পার করছে। সে জানান সকাল ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত বিরামহীন ভাবে তার দোকানে চা বিক্রি করে থাকেন।
সে আরও বলেন প্রতি দিন তার দোকানে দুধ প্রয়োজন হয় ৯০-১১০ কেজি। চা পাতি লাগে দেড় থেকে দুই কেজি। চিনি লাগে ১৬-১৯ কেজি প্রয়োজনীয় দুধ পাশ্ববর্তী গ্রাম পিরপাড়া, খাঁপাড়া, সরদারপাড়া ও মজিদপাড়া থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। শামিম আক্ষেপ করে বলেন জ্বালানির দাম বেশি হওয়ায় লাভের অঙ্কটা কম হয়।
শামিম মিয়া বলেন আমি একজন গরিব মানুষ চা বিক্রি করে স্বচ্ছল ভাবে সংসার চালায়। আমার কোন সহায় সম্পত্তি নেই। আমি সরকারি কোন সাহায্য পাই না। শামিম টি ষ্টলের চায়ের সম্পর্কে তারাটিয়া মাষ্টারমাইন্ড বিয়াম কলেজের অধ্যক্ষ ডি,এস জাহিদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন শামিম মিয়ার দোকানের মালাই চা তৃপ্তি আানে মনে।
তার দোকানের মালাই চায়ের প্রসংশা সর্বজন স্বীকৃত।স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস, এম মামুনুর রশীদ মামুন বলেন শামিম মিয়া দীর্ঘ দিন ধরে মালাই চা বিক্রি করছেন। তার চায়ের সুনাম রয়েছে। সে যদি সরকারি কোন সাহায্য না পেয়ে থাকে তবে তাকে ভবিষ্যতে সহযোগিতার ব্যবস্হা করা হবে।
প্রিন্ট