ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তানোর বিএনপির নেতৃত্বে হযরতকে দেখতে চাই তৃণমুল Logo মোহনপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা Logo ফরিদপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে দুই সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ Logo আজ খোকসা হানাদার মুক্ত দিবসঃ পালিত হবে যথাযজ্ঞ মর্যাদা Logo দৌলতপুরে জাল নোট প্রচলন প্রতিরোধে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত Logo মধুখালীতে নবাগত ইউএনও’র যোগদান Logo বহুলীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বন্যা পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে করনীয় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo শালিখায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৬ দিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক বাংলা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে নাঃ বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে

ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বাতিল নিয়ে কথা বলতে চান না শেখ হাসিনার নিহত দেহরক্ষী মাহাবুব রশিদের বৃদ্ধ মা–বাবা। তবে আক্ষেপ করে বলেন, বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে।

 

আজ রোববার গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আপিলের রায় হয়। রায়ে সব আসামিকে খালাস দেন আদালত। আর সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাহাবুব রশিদ তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়ী গ্রামে।

 

তখন বিকেল ৫টা। বাঁশবাগান পেরিয়ে মাহাবুবের বাড়ি। বাড়িতে সুনসান নীরবতা। মাহাবুবের বাবা হারুন অর রশিদ বাড়ির উঠানে বসেছিলেন। মা হাসিনা খাতুন ছিলেন ঘরে। বাড়িতে আর কেউ নেই। হারুন অর রশিদ বাজারে যেতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু শরীরে জ্বরটা চেপে বসায় আর যাওয়া হয়নি তাঁর।

 

এই প্রতিনিধি গেলে হাসিনা খাতুন বেরিয়ে এসে বসেন স্বামীর পাশে। উচ্চ আদালতে রায় বাতিলের কথা তাঁদের কেউ জানায়নি। এ সময় হাসিনা খাতুন বলেন, ‘বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে? যারা ছাড়া পেয়েছে তারা আবার কিছুদিন ঘুরুক–ফিরুক।

 

৮৫ বছরের বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, আমার নিয়ে যেন মিথ্যা কথা বলা বা লেখা না হয়। আমি বলব এক রকম আর আপনারা লিখবেন অন্য রকম। আগের বিচার “সে” এক রকম করেছে। এখন বিচার হয়েছে অন্য রকম। রায় নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া হ্যাঁ–না কিছুই বলব না। সত্য বলে যদি আমার জেল ফাঁস হয়, হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যা বলব না, তা লিখবেন না।

 

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে না। সে করে গেছে এক রকম, এরা করছে আরেক রকম। এর পরে আর একজন এসে করবে আর এক রকম।’ বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ দম্পতি ভয় আর শঙ্কার কথাও জানান।

 

উল্লেখ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন।

 

রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

 

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোর বিএনপির নেতৃত্বে হযরতকে দেখতে চাই তৃণমুল

error: Content is protected !!

বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে নাঃ বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে

আপডেট টাইম : ১১:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বাতিল নিয়ে কথা বলতে চান না শেখ হাসিনার নিহত দেহরক্ষী মাহাবুব রশিদের বৃদ্ধ মা–বাবা। তবে আক্ষেপ করে বলেন, বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে।

 

আজ রোববার গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আপিলের রায় হয়। রায়ে সব আসামিকে খালাস দেন আদালত। আর সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাহাবুব রশিদ তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়ী গ্রামে।

 

তখন বিকেল ৫টা। বাঁশবাগান পেরিয়ে মাহাবুবের বাড়ি। বাড়িতে সুনসান নীরবতা। মাহাবুবের বাবা হারুন অর রশিদ বাড়ির উঠানে বসেছিলেন। মা হাসিনা খাতুন ছিলেন ঘরে। বাড়িতে আর কেউ নেই। হারুন অর রশিদ বাজারে যেতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু শরীরে জ্বরটা চেপে বসায় আর যাওয়া হয়নি তাঁর।

 

এই প্রতিনিধি গেলে হাসিনা খাতুন বেরিয়ে এসে বসেন স্বামীর পাশে। উচ্চ আদালতে রায় বাতিলের কথা তাঁদের কেউ জানায়নি। এ সময় হাসিনা খাতুন বলেন, ‘বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে? যারা ছাড়া পেয়েছে তারা আবার কিছুদিন ঘুরুক–ফিরুক।

 

৮৫ বছরের বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, আমার নিয়ে যেন মিথ্যা কথা বলা বা লেখা না হয়। আমি বলব এক রকম আর আপনারা লিখবেন অন্য রকম। আগের বিচার “সে” এক রকম করেছে। এখন বিচার হয়েছে অন্য রকম। রায় নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া হ্যাঁ–না কিছুই বলব না। সত্য বলে যদি আমার জেল ফাঁস হয়, হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যা বলব না, তা লিখবেন না।

 

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে না। সে করে গেছে এক রকম, এরা করছে আরেক রকম। এর পরে আর একজন এসে করবে আর এক রকম।’ বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ দম্পতি ভয় আর শঙ্কার কথাও জানান।

 

উল্লেখ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন।

 

রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

 

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।


প্রিন্ট