ঢাকা , সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কালুখালীতে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার Logo বাঘায় বিস্ফোরক মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার Logo মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালাল বিরোধী অভিযান অব্যাহতঃ রোগীদের স্বস্তি, পুলিশের কঠোর অবস্থান Logo নড়াইল জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়েকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভা Logo সদরপুরে গাঁজা, ইয়াবা ও হেরোইনসহ ৩জন গ্রেপ্তার Logo রাজশাহীতে জমি দখল করতে না পেরে মিথ্যা মামলা, সংবাদ সম্মেলন Logo ফরিদপুরে পেনশনের টাকা হিসাবে যুক্ত হয়ে আবার ফেরৎ যাওয়ায় বিপাকে ৪৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি Logo ভূরুঙ্গামারীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, দামে হতাশ কৃষক Logo ছোটগল্পঃ জৈষ্ঠ্যের দিনগুলি Logo রাত থেকে নিখোঁজ, ভোরে ডোবায় মিললো কিশোরের দগ্ধ মরদেহ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে নাঃ বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে

ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বাতিল নিয়ে কথা বলতে চান না শেখ হাসিনার নিহত দেহরক্ষী মাহাবুব রশিদের বৃদ্ধ মা–বাবা। তবে আক্ষেপ করে বলেন, বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে।

 

আজ রোববার গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আপিলের রায় হয়। রায়ে সব আসামিকে খালাস দেন আদালত। আর সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাহাবুব রশিদ তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়ী গ্রামে।

 

তখন বিকেল ৫টা। বাঁশবাগান পেরিয়ে মাহাবুবের বাড়ি। বাড়িতে সুনসান নীরবতা। মাহাবুবের বাবা হারুন অর রশিদ বাড়ির উঠানে বসেছিলেন। মা হাসিনা খাতুন ছিলেন ঘরে। বাড়িতে আর কেউ নেই। হারুন অর রশিদ বাজারে যেতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু শরীরে জ্বরটা চেপে বসায় আর যাওয়া হয়নি তাঁর।

 

এই প্রতিনিধি গেলে হাসিনা খাতুন বেরিয়ে এসে বসেন স্বামীর পাশে। উচ্চ আদালতে রায় বাতিলের কথা তাঁদের কেউ জানায়নি। এ সময় হাসিনা খাতুন বলেন, ‘বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে? যারা ছাড়া পেয়েছে তারা আবার কিছুদিন ঘুরুক–ফিরুক।

 

৮৫ বছরের বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, আমার নিয়ে যেন মিথ্যা কথা বলা বা লেখা না হয়। আমি বলব এক রকম আর আপনারা লিখবেন অন্য রকম। আগের বিচার “সে” এক রকম করেছে। এখন বিচার হয়েছে অন্য রকম। রায় নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া হ্যাঁ–না কিছুই বলব না। সত্য বলে যদি আমার জেল ফাঁস হয়, হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যা বলব না, তা লিখবেন না।

 

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে না। সে করে গেছে এক রকম, এরা করছে আরেক রকম। এর পরে আর একজন এসে করবে আর এক রকম।’ বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ দম্পতি ভয় আর শঙ্কার কথাও জানান।

 

উল্লেখ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন।

 

রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

 

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কালুখালীতে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

error: Content is protected !!

বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে নাঃ বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে

আপডেট টাইম : ১১:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বাতিল নিয়ে কথা বলতে চান না শেখ হাসিনার নিহত দেহরক্ষী মাহাবুব রশিদের বৃদ্ধ মা–বাবা। তবে আক্ষেপ করে বলেন, বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে।

 

আজ রোববার গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আপিলের রায় হয়। রায়ে সব আসামিকে খালাস দেন আদালত। আর সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাহাবুব রশিদ তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়ী গ্রামে।

 

তখন বিকেল ৫টা। বাঁশবাগান পেরিয়ে মাহাবুবের বাড়ি। বাড়িতে সুনসান নীরবতা। মাহাবুবের বাবা হারুন অর রশিদ বাড়ির উঠানে বসেছিলেন। মা হাসিনা খাতুন ছিলেন ঘরে। বাড়িতে আর কেউ নেই। হারুন অর রশিদ বাজারে যেতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু শরীরে জ্বরটা চেপে বসায় আর যাওয়া হয়নি তাঁর।

 

এই প্রতিনিধি গেলে হাসিনা খাতুন বেরিয়ে এসে বসেন স্বামীর পাশে। উচ্চ আদালতে রায় বাতিলের কথা তাঁদের কেউ জানায়নি। এ সময় হাসিনা খাতুন বলেন, ‘বেটা মারা গেছে ২০ বছর, এখন আর বলে কী হবে? যারা ছাড়া পেয়েছে তারা আবার কিছুদিন ঘুরুক–ফিরুক।

 

৮৫ বছরের বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, আমার নিয়ে যেন মিথ্যা কথা বলা বা লেখা না হয়। আমি বলব এক রকম আর আপনারা লিখবেন অন্য রকম। আগের বিচার “সে” এক রকম করেছে। এখন বিচার হয়েছে অন্য রকম। রায় নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া হ্যাঁ–না কিছুই বলব না। সত্য বলে যদি আমার জেল ফাঁস হয়, হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যা বলব না, তা লিখবেন না।

 

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, বিচারের রায় দিয়ে আমার কোনো কিছু যায়–আসে না। সে করে গেছে এক রকম, এরা করছে আরেক রকম। এর পরে আর একজন এসে করবে আর এক রকম।’ বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ দম্পতি ভয় আর শঙ্কার কথাও জানান।

 

উল্লেখ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন।

 

রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

 

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।


প্রিন্ট