ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রাজশাহীতে প্রণোদনার পেঁয়াজের ফলন বিপর্যয়

আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

রাজশাহী জেলায় সরকারি প্রণোদনা হিসেবে বিতরিত পেঁয়াজের বীজে ফলন ভালো না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষকরা বিষয়টি কৃষি অফিসে জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি, ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। এ বিষয়ে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

 

জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে লাভজনক ফলন আশা করে অনেক কৃষকই এবার সরকারি প্রণোদনার আওতায় পেঁয়াজের বীজ বপন করেছিলেন। তবে, নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজ বীজে ফলন আশানুরূপ হয়নি। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষি অধিদপ্তর বিএডিসির বীজ বিপণন বিভাগকে বীজের মান নিয়ে চিঠি দিয়েছে।

 

গত বছর রাজশাহী জেলার কৃষকরা সরকারি প্রণোদনার পেঁয়াজ চাষে লাভবান হলেও, এবার তা হয়নি। চলতি অর্থবছরে রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলার ২৮ হাজার কৃষকের মাঝে ২৮ হাজার কেজি পেঁয়াজ বীজ, ৩৬০ টন ডিএপি ও এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছিল। তবে, সঠিক নিয়ম মেনে বীজ রোপন করার পরও পেঁয়াজের গাছ মরতে শুরু করেছে, গাছের শিকড় পচে যাচ্ছে এবং গুটি হয়ে মারা যাচ্ছে। কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহারের পরেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

 

প্রণোদনার পেঁয়াজ চাষে এ ধরনের বিপর্যয়ের কারণে কৃষকরা সরকার থেকে ক্ষতির পরিপূরক সহায়তা চেয়েছেন। চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ হাজার মেট্রিক টন, কিন্তু ফলন ভালো না হওয়ায় সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, “গতবারের তুলনায় এবার বীজের মান অনেক খারাপ। ফলন ভালো না হওয়ায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে।” একই উপজেলার বিহারীপাড়া এলাকার কৃষক আবুল বাসার জানান, “এক একর জমিতে প্রণোদনার বীজ লাগিয়েছিলাম, কিন্তু ফলন ভালো না হওয়ায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।”

 

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা জানান, “এ বছর প্রথম ধাপে ৮ হাজার এবং দ্বিতীয় ধাপে ২০ হাজার কৃষককে বীজ দেওয়া হয়েছে। গত বছর কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছিল এবং এবছরও আমরা আশাবাদী ছিলাম। তবে, এবারের পেঁয়াজের আকৃতি আগের তুলনায় কিছুটা ছোট হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএডিসি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

 

তিনি আরও জানান, “এ বছর তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের কারণে পেঁয়াজের মাঠে কিছু সমস্যা হয়েছে, তবে এখনও কিছু চারা ভালো ফলন দিয়েছে। আমরা আশা করি, আগামীতে এই পেঁয়াজ চাষের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন।”

 

 

এদিকে, কৃষকদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ক্ষতির ক্ষতিপূরণ এবং পরবর্তী চাষের জন্য সহায়তা প্রদান করা উচিত, যাতে তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলন পেতে পারেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরের গোল্লাপাড়া বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন

error: Content is protected !!

রাজশাহীতে প্রণোদনার পেঁয়াজের ফলন বিপর্যয়

আপডেট টাইম : ১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

রাজশাহী জেলায় সরকারি প্রণোদনা হিসেবে বিতরিত পেঁয়াজের বীজে ফলন ভালো না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষকরা বিষয়টি কৃষি অফিসে জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি, ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। এ বিষয়ে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

 

জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে লাভজনক ফলন আশা করে অনেক কৃষকই এবার সরকারি প্রণোদনার আওতায় পেঁয়াজের বীজ বপন করেছিলেন। তবে, নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজ বীজে ফলন আশানুরূপ হয়নি। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষি অধিদপ্তর বিএডিসির বীজ বিপণন বিভাগকে বীজের মান নিয়ে চিঠি দিয়েছে।

 

গত বছর রাজশাহী জেলার কৃষকরা সরকারি প্রণোদনার পেঁয়াজ চাষে লাভবান হলেও, এবার তা হয়নি। চলতি অর্থবছরে রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলার ২৮ হাজার কৃষকের মাঝে ২৮ হাজার কেজি পেঁয়াজ বীজ, ৩৬০ টন ডিএপি ও এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছিল। তবে, সঠিক নিয়ম মেনে বীজ রোপন করার পরও পেঁয়াজের গাছ মরতে শুরু করেছে, গাছের শিকড় পচে যাচ্ছে এবং গুটি হয়ে মারা যাচ্ছে। কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহারের পরেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

 

প্রণোদনার পেঁয়াজ চাষে এ ধরনের বিপর্যয়ের কারণে কৃষকরা সরকার থেকে ক্ষতির পরিপূরক সহায়তা চেয়েছেন। চলতি অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ হাজার মেট্রিক টন, কিন্তু ফলন ভালো না হওয়ায় সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, “গতবারের তুলনায় এবার বীজের মান অনেক খারাপ। ফলন ভালো না হওয়ায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে।” একই উপজেলার বিহারীপাড়া এলাকার কৃষক আবুল বাসার জানান, “এক একর জমিতে প্রণোদনার বীজ লাগিয়েছিলাম, কিন্তু ফলন ভালো না হওয়ায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।”

 

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা জানান, “এ বছর প্রথম ধাপে ৮ হাজার এবং দ্বিতীয় ধাপে ২০ হাজার কৃষককে বীজ দেওয়া হয়েছে। গত বছর কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছিল এবং এবছরও আমরা আশাবাদী ছিলাম। তবে, এবারের পেঁয়াজের আকৃতি আগের তুলনায় কিছুটা ছোট হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএডিসি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

 

তিনি আরও জানান, “এ বছর তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের কারণে পেঁয়াজের মাঠে কিছু সমস্যা হয়েছে, তবে এখনও কিছু চারা ভালো ফলন দিয়েছে। আমরা আশা করি, আগামীতে এই পেঁয়াজ চাষের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন।”

 

 

এদিকে, কৃষকদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ক্ষতির ক্ষতিপূরণ এবং পরবর্তী চাষের জন্য সহায়তা প্রদান করা উচিত, যাতে তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলন পেতে পারেন।


প্রিন্ট