ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

‘অবৈধভাবে’ নিয়োগে ৩৫ বছর স্কুল শিক্ষকতা

-শিক্ষক ছবি রানী ব্যানার্জী।

নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করে অবৈধ নিয়োগে ৩৫ বছর চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে ছবি রানী ব্যানার্জী নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার তারাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

 

এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

 

অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে তারাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি পদে জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে বিএসসি পদে ৬ জন, ইংরেজী পদে ১১ জন ও বিকম পদে মাত্র একজন প্রার্থী আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে চাকরিপ্রার্থীদের গঠিত নিয়োগ বোর্ডে সাক্ষাৎ গ্রহণের জন্য ডাকা হয়। সেখানে দুটি পদে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তদের বিধিমোতাবেক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বিকম পদে একমাত্র ছবি রানী ব্যানার্জী আবেদন করেন। নিয়োগ কমিটি তাকে যোগ্যতা সম্পন্ন বিবেচিত করে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়।

 

নিয়োগ বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোন পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ পরীক্ষায় কমপক্ষে তিনজন প্রার্থী উপস্থিত থাকতে হবে। কোরাম পূরণ না হলে কোনো অবস্থাতেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে না। কিন্তু ছবি রানী একক প্রার্থী হয়েও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন এবং অবৈধপন্থায় এমপিওভূক্ত হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।

 

অভিযোগ রয়েছে, সবশের্ষ ২০১৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অডিট হয়। অডিটের সময় ওই কর্মকর্তাকে ৯৫ হাজার টাকার বিনিময় ‘ম্যানেজ’ করে স্বপক্ষে প্রতিবেদন করিয়ে নেন শিক্ষক ছবি রানী। সুতরাং ছবি রানী ব্যানার্জীর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি ও বিধিবহির্ভূত বলে দাবি স্থানীয়দের।

 

এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় গত ১ অক্টোবর চাকরি থেকে অব্যহতি নেন ছবি রানী ব্যানার্জী। কয়েকদিন পর পুনরায় সেটি প্রত্যাহারও করে নেন তিনি।

 

অভিযুক্ত শিক্ষক ছবি রানী ব্যানার্জি একক প্রার্থী হিসেবে তার নিয়োগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘একাধিকবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রার্থী না পাওয়া গেলে একক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া যায়। আমি অবসরের জন্য অব্যহতিপত্র জমা দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

 

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘একাধিকবার অডিট হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও অডিট হয়েছে তার পক্ষে। আর তিনি অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছিলেন। আমি গ্রহণ করিনি।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরের গোল্লাপাড়া বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন

error: Content is protected !!

‘অবৈধভাবে’ নিয়োগে ৩৫ বছর স্কুল শিক্ষকতা

আপডেট টাইম : ১১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
লিয়াকত হোসেন লিংকন, স্টাফ রিপোর্টার :

নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করে অবৈধ নিয়োগে ৩৫ বছর চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে ছবি রানী ব্যানার্জী নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার তারাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

 

এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

 

অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে তারাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি পদে জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে বিএসসি পদে ৬ জন, ইংরেজী পদে ১১ জন ও বিকম পদে মাত্র একজন প্রার্থী আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে চাকরিপ্রার্থীদের গঠিত নিয়োগ বোর্ডে সাক্ষাৎ গ্রহণের জন্য ডাকা হয়। সেখানে দুটি পদে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তদের বিধিমোতাবেক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বিকম পদে একমাত্র ছবি রানী ব্যানার্জী আবেদন করেন। নিয়োগ কমিটি তাকে যোগ্যতা সম্পন্ন বিবেচিত করে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়।

 

নিয়োগ বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোন পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ পরীক্ষায় কমপক্ষে তিনজন প্রার্থী উপস্থিত থাকতে হবে। কোরাম পূরণ না হলে কোনো অবস্থাতেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে না। কিন্তু ছবি রানী একক প্রার্থী হয়েও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন এবং অবৈধপন্থায় এমপিওভূক্ত হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।

 

অভিযোগ রয়েছে, সবশের্ষ ২০১৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) অডিট হয়। অডিটের সময় ওই কর্মকর্তাকে ৯৫ হাজার টাকার বিনিময় ‘ম্যানেজ’ করে স্বপক্ষে প্রতিবেদন করিয়ে নেন শিক্ষক ছবি রানী। সুতরাং ছবি রানী ব্যানার্জীর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি ও বিধিবহির্ভূত বলে দাবি স্থানীয়দের।

 

এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় গত ১ অক্টোবর চাকরি থেকে অব্যহতি নেন ছবি রানী ব্যানার্জী। কয়েকদিন পর পুনরায় সেটি প্রত্যাহারও করে নেন তিনি।

 

অভিযুক্ত শিক্ষক ছবি রানী ব্যানার্জি একক প্রার্থী হিসেবে তার নিয়োগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘একাধিকবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রার্থী না পাওয়া গেলে একক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া যায়। আমি অবসরের জন্য অব্যহতিপত্র জমা দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

 

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘একাধিকবার অডিট হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও অডিট হয়েছে তার পক্ষে। আর তিনি অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছিলেন। আমি গ্রহণ করিনি।’


প্রিন্ট