ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণা করা সেই ত্রাণ কর্মকর্তার তদন্ত শুরু Logo কুষ্টিয়ায় জেল পলাতক আসামি রুবেল গ্রেফতার Logo আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবসহ সেবাদান প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ালেন আদিত্য ফাউন্ডেশন Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার Logo রাশিয়ার কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন Logo কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে যাওয়ায় ১৫ নেতাকে শোকজ Logo ভিডিও ফুটেজে নারীর ওপর হামলা, পুলিশের প্রতিবেদনে উলটে গেল ঘটনা Logo নতুন নেতৃত্বের আ’লীগ চায় বিএনপি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আপন দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে দাফনঃ কান্না আর আহাজারিতে ভেঙে পড়েন স্বজনরা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত আপন দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাদ আসর জানাজা শেষে ছাতারপাড়া গোরস্তানে তাদের মরদেহ পাশাপাশি দাফন করা হয়। জানাজায় হাজারো মুসল্লি অংশ নেন।

 

দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের সাতারপাড়া গ্রামের রমজান মন্ডলের ছেলে হামিদ (৫০) ও নজরুল ইসলাম মন্ডল (৪৫)। নজরুল ব্যবসা করতেন আর হামিদ কৃষক।

 

ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাড়িতে দুই ভাইয়ের মরদেহ পৌঁছালে কান্না আর আহাজারিতে ভেঙে পড়েন নিহতের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও স্থানীয়রা। শোকার্তদের আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।

 

তাদের মৃত্যু খবর পেয়ে স্বজনরা ও স্থানীয়রা ছুটে আসেন নিহতের বাড়িতে। নিহতের পরিবারের শোকার্তদের কেউ দেন সান্ত্বনা, কেউ ফেলেন চোখের পানি। মৃত্যুর খবর শুনে সবাই যেন বাকরুদ্ধ। দুই ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে কিছুতেই থামছে না শোকার্ত স্বজনদের আহাজারি।

 

স্থানীয়রা বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাদেরকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হলো। একসঙ্গে জানাজা নামাজ হয়েছে। নির্মম নৃশংসভাবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের এমন মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ নির্বাক। পুরো গ্রামে শোকের মাতম চলছে।

 

নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী বলেন, আমি, আমার আব্বা নজরুল ইসলাম ও আমার চাচা আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাতারপাড়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন পিস্তল, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা করে। আমার চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করেছে, আমি বেঁচে গেছি। প্রকাশ্য দিবালোকে তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সবাইকে আমি চিনি। ৫ মিনিটের মধ্যে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। বাজারের সবাই তাদের চেনেন।

 

সুরুজ আলী বলেন, ফরিদের ছেলে র‌্যানিস, মৃত হারান বিশ্বাসের ছেলে মনির উদ্দিন মনো, তার ছেলে ওয়াসিম, মাসুদ, রনির ছেলে রাসেল, আজাবুল, মহাবুলের ছেলে ফারুক, সোহান, সুমন, ইকরামুল, রুবায়ত, আলামিন সহ ও তাদের ১০-১৫ জন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার চোখের সামনে আগে আমার আব্বাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। তারপর আমার চাচাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন।

 

এদিকে দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহতের পরিবার হত্যাকারীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

 

 

কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) আবদুল খালেক বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণা করা সেই ত্রাণ কর্মকর্তার তদন্ত শুরু

error: Content is protected !!

আপন দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে দাফনঃ কান্না আর আহাজারিতে ভেঙে পড়েন স্বজনরা

আপডেট টাইম : ১১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার :

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত আপন দুই ভাইয়ের মরদেহ একসঙ্গে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাদ আসর জানাজা শেষে ছাতারপাড়া গোরস্তানে তাদের মরদেহ পাশাপাশি দাফন করা হয়। জানাজায় হাজারো মুসল্লি অংশ নেন।

 

দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের সাতারপাড়া গ্রামের রমজান মন্ডলের ছেলে হামিদ (৫০) ও নজরুল ইসলাম মন্ডল (৪৫)। নজরুল ব্যবসা করতেন আর হামিদ কৃষক।

 

ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাড়িতে দুই ভাইয়ের মরদেহ পৌঁছালে কান্না আর আহাজারিতে ভেঙে পড়েন নিহতের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও স্থানীয়রা। শোকার্তদের আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।

 

তাদের মৃত্যু খবর পেয়ে স্বজনরা ও স্থানীয়রা ছুটে আসেন নিহতের বাড়িতে। নিহতের পরিবারের শোকার্তদের কেউ দেন সান্ত্বনা, কেউ ফেলেন চোখের পানি। মৃত্যুর খবর শুনে সবাই যেন বাকরুদ্ধ। দুই ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে কিছুতেই থামছে না শোকার্ত স্বজনদের আহাজারি।

 

স্থানীয়রা বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাদেরকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হলো। একসঙ্গে জানাজা নামাজ হয়েছে। নির্মম নৃশংসভাবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের এমন মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ নির্বাক। পুরো গ্রামে শোকের মাতম চলছে।

 

নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী বলেন, আমি, আমার আব্বা নজরুল ইসলাম ও আমার চাচা আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাতারপাড়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন পিস্তল, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা করে। আমার চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করেছে, আমি বেঁচে গেছি। প্রকাশ্য দিবালোকে তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সবাইকে আমি চিনি। ৫ মিনিটের মধ্যে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। বাজারের সবাই তাদের চেনেন।

 

সুরুজ আলী বলেন, ফরিদের ছেলে র‌্যানিস, মৃত হারান বিশ্বাসের ছেলে মনির উদ্দিন মনো, তার ছেলে ওয়াসিম, মাসুদ, রনির ছেলে রাসেল, আজাবুল, মহাবুলের ছেলে ফারুক, সোহান, সুমন, ইকরামুল, রুবায়ত, আলামিন সহ ও তাদের ১০-১৫ জন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার চোখের সামনে আগে আমার আব্বাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। তারপর আমার চাচাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন।

 

এদিকে দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহতের পরিবার হত্যাকারীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

 

 

কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) আবদুল খালেক বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।


প্রিন্ট