ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাস ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ হাজার ভিসা আবেদন নিষ্পত্তি করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক ভিসা আবেদন আটকে আছে। ২০ হাজার ভিসা কেস রোম থেকে ক্লিয়ার্ড হয়েছে। সে ভিসাগুলো দেয়ার অগ্রগতি খুব কম। ইতালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, উনি আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে এ ভিসাগুলো দিয়ে দিবেন। এছাড়া, ইতালি দূতাবাস অতিরিক্ত ২-৩জন কর্মকর্তা নিয়ে আসছেন কাজ করতে, তারা আসলে কাজের গতি বাড়বে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ইতালি দূতাবাসে প্রায় ৪০ হাজার আবেদন জমা আছে। দীর্ঘদিন যাবত অপেক্ষারত ইতালির ওয়ার্ক ভিসা প্রত্যাশীদের মধ্য হতে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে ভিসা ইস্যুকরণে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে তাদের নানাবিধ ভোগান্তিসহ এ সমস্যার দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার আবেদন করেন ভিসা প্রত্যাশীরা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রতিনিধিদলকে মিছিল-মিটিং ও ঘেরাও কর্মসূচি না করার জন্য বলেছি। এগুলো করলে ভিসা প্রত্যাশীদের কোন লাভ হবে না, দেশেরও কোন লাভ হবে না। কারণ, তারা যদি ভয় পায়, তাহলে বরং অফিসার চলে যাবেন। দেখা যাবে, ভিসা ইস্যু হচ্ছেই না। তিনি বলেন, আমরা ইতালি দূতাবাসকে চাপ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভিসা দেয়া বা না দেয়া একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার। ভিসা কেন দেয়া হয়েছে বা দেয়া হয় নি, সেটা আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি না।
‘বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এসেছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে গেছেন, এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিকট কী তথ্য আছে’-এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারি নি। আমরা দিল্লিতে খোঁজ করেছি, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও খোঁজ করেছি। কনফার্মেশন অফিসিয়ালি কেউ দিতে পারেন নি।
ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং নেতারা ট্র্যাভেল পাস নিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদেরকে ট্র্যাভেল পাস ইস্যু করবে কিনা, প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ মিশন ট্র্যাভেল পাস ইস্যু করতে পারে শুধু দেশে ফেরার জন্য, অন্য দেশে যাওয়ার জন্য নয়। অন্য দেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন পড়ে।
তিনি বলেন, তারা যদি দেশে ফিরতে চান, ট্র্যাভেল পাস ইস্যু করা যেতে পারে এবং তারা দেশে ফিরে আসতে পারেন। এসময় আদালত চাইলে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলেও সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
- আরও পড়ুনঃ কারামুক্ত হলেন সাবের হোসেন চৌধুরী
লেবানন থেকে প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, লেবানন থেকে যারা ফিরে আসতে চান, তাদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তাদের (প্রবাসীদের) বলা হয়েছে, ওয়ার জোন থেকে তারা যেন একটু উত্তরে সরে যায়। আমরা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) অনুরোধ করেছি, তারা যেন ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেয়, যাতে তারা চলে আসতে পারেন।
প্রিন্ট