ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তুচ্ছ ঘটনায় মা-বাবা হারা কলেজ ছাত্রের গলায় ফাঁস Logo ইবি উপাচার্যকে ১০ লাখ টাকা ঘুষের প্রস্তাব, থানায় জিডি Logo কুষ্টিয়ায় হাসপাতাল কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ Logo সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশন পর্তুগালের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ও ইফতার অনুষ্ঠিত Logo রমজানে পণ্য মূল্য সহনীয় রাখতে চরভদ্রাসনে বাজার মনিটরিং Logo বোয়ালমারীতে ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেল শান্তা Logo গোমস্তাপুরে মেসার্স নজরুল অটো রাইস মিলের উদ্যোগে ইফতার অনুষ্ঠিত Logo নোয়াখালীতে পুকুরে মিলল ১০ কেজি ইলিশ Logo হাতিয়ায় আর্থিক স্বাক্ষরতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রাস্তায় ঘুরে ঘুরে নিম্ন আয়ের লোকেদের ইফতার সামগ্রী দিচ্ছেন সুমন রাফি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ট্রিপল মার্ডারের নৈপথ্যে কাহিনীঃ

কুষ্টিয়ায় আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের আসামী এএসআই সৌমেনকে কোর্টে হাজির, জনতার ভীড়

কুষ্টিয়ার আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় অভিযুক্ত এএসআই সৌমেন কুমার রায়কে আদালতে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে উৎসুক জনতারা কোর্ট প্রাঙ্গনে ভীড় করে।

সোমবার (১৪ জুন) দুপুর সোয়া ১টার সময় তাকে বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করা হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফরহাদ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সৌমেনকে আজ ১৪জুন সোমবার আদালতে হাজির করা হয়েছে।
পরকীয়ার জেরে কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে স্ত্রী, সৎ ছেলে ও এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় গত রোববার রাতে মামলা হয়েছে। এএসআই সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে নিহত শাকিল খানের বাবা মেজবার রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নন্বার ৯ ধারা ৩০২ তাং ১৩/৬/২১।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় নিহত শাকিল হোসেনের বাবা মেজবার রহমান রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।

গত রোববার সকালে কুষ্টিয়ার কাস্টমস মোড় এলাকায় স্ত্রী আসমা খাতুন, ছেলে রবিন ও স্ত্রীর ‘কথিত প্রেমিক’ শাকিল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত এএসআই সৌমেন রায়।
এ হত্যাকান্ডে সৌমেন সরকারি অস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করেছে বলেও নিশ্চিত করেছে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ।

এর আগে রোববার রাতে খুলনার ফুলতলা থানার সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন কুমার রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে খুলনা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া খুলনা রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম জানান, সৌমেনকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে। পুলিশ সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখছে।

কুষ্টিয়ায় তিনজনকে গুলি করে হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একে এম নাহিদুল ইসলাম। রোববার (১৩ জুন) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি।

পরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আজকের এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, সৌমেনের একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে এ হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। এর সঙ্গে পুলিশের ভাবমূর্তির কোনো সম্পর্ক নেই।

কে এই সৌমেনঃ
২০০৪ সালে পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকরি পান সৌমেন। তার বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার কসবা গ্রামে। ২০১৭ সালে কুষ্টিয়ায় সৌমেনের পোস্টিং হয়। এরপর সে উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) পদে পদোন্নতি লাভ করেন। এর মধ্যে আসমার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন সৌমেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা,মিরপুর, ইবি, কুমারখালী থানাসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এর আগে সৌমেন ২০০৫ সালে আথি রায় নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে তার এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তারা খুলনায় বসবাস করে।

সৌমেনের সঙ্গে বিয়ের আগে আসমার আরও দুটি বিয়ে হয়। প্রথম ঘরে এক মেয়ে ও দ্বিতীয় ঘরে রবিনের জন্ম হয়। আসমা পরে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে আঁখি নাম ধারণ করেন।

আসমা খাতুন ওরফে আঁখির গ্রামের বাড়ি বাগুলাটের নাতুড়িয়া গিয়ে কথা বলে প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় তারা থাকেন না। পরিবারসহ কুষ্টিয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আঁখিকে সে শহরে বাসা ভাড়া করে দেয়। মাঝেমধ্যে সে এসে তাদের সঙ্গে থাকতো।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তুচ্ছ ঘটনায় মা-বাবা হারা কলেজ ছাত্রের গলায় ফাঁস

error: Content is protected !!

ট্রিপল মার্ডারের নৈপথ্যে কাহিনীঃ

কুষ্টিয়ায় আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের আসামী এএসআই সৌমেনকে কোর্টে হাজির, জনতার ভীড়

আপডেট টাইম : ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুন ২০২১

কুষ্টিয়ার আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় অভিযুক্ত এএসআই সৌমেন কুমার রায়কে আদালতে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে উৎসুক জনতারা কোর্ট প্রাঙ্গনে ভীড় করে।

সোমবার (১৪ জুন) দুপুর সোয়া ১টার সময় তাকে বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করা হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফরহাদ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সৌমেনকে আজ ১৪জুন সোমবার আদালতে হাজির করা হয়েছে।
পরকীয়ার জেরে কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে স্ত্রী, সৎ ছেলে ও এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় গত রোববার রাতে মামলা হয়েছে। এএসআই সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে নিহত শাকিল খানের বাবা মেজবার রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নন্বার ৯ ধারা ৩০২ তাং ১৩/৬/২১।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় নিহত শাকিল হোসেনের বাবা মেজবার রহমান রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।

গত রোববার সকালে কুষ্টিয়ার কাস্টমস মোড় এলাকায় স্ত্রী আসমা খাতুন, ছেলে রবিন ও স্ত্রীর ‘কথিত প্রেমিক’ শাকিল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত এএসআই সৌমেন রায়।
এ হত্যাকান্ডে সৌমেন সরকারি অস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করেছে বলেও নিশ্চিত করেছে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ।

এর আগে রোববার রাতে খুলনার ফুলতলা থানার সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন কুমার রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে খুলনা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া খুলনা রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম জানান, সৌমেনকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে। পুলিশ সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখছে।

কুষ্টিয়ায় তিনজনকে গুলি করে হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একে এম নাহিদুল ইসলাম। রোববার (১৩ জুন) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি।

পরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আজকের এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, সৌমেনের একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে এ হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। এর সঙ্গে পুলিশের ভাবমূর্তির কোনো সম্পর্ক নেই।

কে এই সৌমেনঃ
২০০৪ সালে পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকরি পান সৌমেন। তার বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার কসবা গ্রামে। ২০১৭ সালে কুষ্টিয়ায় সৌমেনের পোস্টিং হয়। এরপর সে উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) পদে পদোন্নতি লাভ করেন। এর মধ্যে আসমার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন সৌমেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা,মিরপুর, ইবি, কুমারখালী থানাসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এর আগে সৌমেন ২০০৫ সালে আথি রায় নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে তার এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তারা খুলনায় বসবাস করে।

সৌমেনের সঙ্গে বিয়ের আগে আসমার আরও দুটি বিয়ে হয়। প্রথম ঘরে এক মেয়ে ও দ্বিতীয় ঘরে রবিনের জন্ম হয়। আসমা পরে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে আঁখি নাম ধারণ করেন।

আসমা খাতুন ওরফে আঁখির গ্রামের বাড়ি বাগুলাটের নাতুড়িয়া গিয়ে কথা বলে প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় তারা থাকেন না। পরিবারসহ কুষ্টিয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আঁখিকে সে শহরে বাসা ভাড়া করে দেয়। মাঝেমধ্যে সে এসে তাদের সঙ্গে থাকতো।