নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীতে দ্বিতীয় দফায় আকস্মিকভাবে ফের পানি বৃদ্ধিতে চরাঞ্চলের সাড়ে ৩ হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঈশ্বরদী হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানির লেভেল ১২ দশমিক ৩২ মিটার। সে অনুযায়ী বর্তমানে লালপুরে পদ্মার পানি বিপদ সীমার দেড় মেটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, আগামী পাঁচ থেকে সাত দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে সরজমিনে পদ্মার চর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত দুইদিন পদ্মা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের নওশারা সুলতানপুর, চাকলা বিনোদপুর, দিয়াড়শংকরপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর ও মোহরকয়া আংশিকসহ প্রায় ১৮টি চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বিলমাড়ীয়া গ্রামের মুনতাজ আলী নামে কৃষক জানান, তার ৩ বিঘা জমিতে মুলা ও বেগুনের আবাদ তলিয়ে গেছে। আরাজি বাকনাই চরের কৃষক আলাল আলী জানান তার মুলা, গাজর বেগুন সহ প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা জমির ফসল ডুবে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার ৪১০ হেক্টর আখ, ৪৫ হেক্টর শাকসবজি, ১০ হেক্টর কলা, ও ১০ হেক্টর মাসকালাই পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গোখাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছে এখানকার গরু মহিষ খামারিরা। ইলশামারী চরের খামারী আরিফ মন্ডল জানান, গরু মহিষ নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছি কোথাও কোন ঘাষ নেই সব তলিয়ে গেছে।
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য লাল মোহম্মদ জানান, গত দুদিন আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে আমার ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফসলি ক্ষেত। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে প্রায় পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার প্রীতম কুমার জানান, নদীর পানি কমে যাওয়ায় কৃষকরা নতুন করে ফসল আবাদ করেছে, হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এগুলো ডুবে গেছে, পানি কমে গেলে ক্ষয় ক্ষতি পরিমাণ জানা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান জানান, আমদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছি সার্বিক খোজখবর রাখার জন্য এবং কৃষি বিভাগ চর এলাকায় গেছে ফসলের ক্ষতির তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।