জয়পুরহাট সদর উপজেলায় মাধাইনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হকের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকাল থেকেই দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী পিয়াস আহমেদ এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানে উপস্হিত সকল শিক্ষার্থী এ কর্মসূচীতে একাত্মতা ঘোষণা করে ক্লাস বর্জন করেন। এনামুল হকের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি, অর্থ আত্মসাত, গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের উপর জুলম, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানান অভিযোগ এনেছে শিক্ষার্থীরা।
১০ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী পিয়াস আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের দাবি নিয়ে হেড স্যারের সাথে বসতে চেয়েছি। তিনি বসেননি। আমাদের মূল্যায়ণ করেননি। তিনি আমাদের অপমানিত করে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ জানিয়েছি। সেই অভিযোগ তুলে নিতে তিনি আমাদের চাপ দেন। আমরা স্যারকে বলেছি, এতো ভয় কেনো স্যার! আপনার স্বচ্ছতা থাকলে কোন অসুবিধা হবে না। অভিযোগগুলো তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
আরেক শিক্ষার্থী মিম জানান, স্যার নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। যে ইভেন্টকে কেন্দ্র করে টাকা উঠান সেটা বাস্তবায়ন না হলেও সেই টাকা আমাদের ফিরিয়ে দেননি। আমাদের মাঝে অনেক গরীব শিক্ষার্থী আছে যারা পরীক্ষার ফি না দিতে পারার কারণে তাদের পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিয়েছেন। পরীক্ষা দিতে দেননি। আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই।
সাবেক শিক্ষার্থী নূর ইসলাম বলেন, বর্তমান শিক্ষার্থীদের ডাকে আজ আমি স্কুলে এসেছি। আওয়ামী দু:শাসনের সময় তিনি দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার আওয়ামীলীগ মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যমে স্কুলের সম্পদ লুটেপুটে খেয়েছেন। স্কুলের নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে তিনি সরাসরি জড়িত। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
আন্দোলন চালাকালীন সময়ের এক পর্যায়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে আসেন। তিনি বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আগামী বুধবার তাঁর তদন্ত কমিটি স্কুলে আসবেন। সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে তারা শিক্ষক-ছাত্র ও অভিভাবকদের সাথে বসবেন। সেই তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত নিবেন। তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহবান জানান। শিক্ষার্থীরা তাঁর কথামতো আপাতত আন্দোলন বন্ধ ঘোষণা করে ক্লাসে ফিরে যান।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছি। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক এনামুল হকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রিন্ট