রাজশাহীর তানোরেখাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ৮ জন ডিলার এখানো চাল উত্তোলন করেনি। এসব ডিলারের পরিবর্তে এখানো কোনো নতুন ডিলার নিয়োগ করা হয়নি। জানা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচি ঘোষণা করেন। সারা দেশে বছরে তিন মাস দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ১৫ টাকা কেজিতে মাসে ৩০ কেজি চাল বিক্রি করা হয়। কিন্ত্ত তানোরে গত সেপ্টেম্বর মাসে ৭ জন ডিলার চাল উত্তোলন করেনি। এতে এসব স্থানে নতুন ডিলার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ বিগত দিনে আওয়ামী লীগের নেতারা রাজনৈতিক বিবেচনায় ডিলার নিয়োগ করেছিল।
জানা গেছে, বিগত ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গ্রামীণ পর্যায়ে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রথমে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।তবে পরবর্তীতে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। উপজেলায় সাত ইউনিয়নে ডিলারদের মাধ্যমে বিশাল ভর্তুকিতে চালগুলো বিক্রি করা হয়। সাত ইউনিয়নে ১৪ ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। দলীয় বিবেচনায় আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সুবিধাভোগী করা হয়েছিল।উপজেলায় সাত ইউনিয়নে মোট ৯ হাজার ২৫৯ জন উপকার ভোগী রয়েছে।
চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ৭ জন ডিলার চাল উত্তোলন করেননি। তারা হলেন কলমা ইউনিয়ন ইউপির আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রতন, তার পয়েন্ট ছিল বিল্লি বাজারে, আওয়াল হোসেন, তার পয়েন্ট দরগাডাংগা বাজারে, সাবেক মেম্বার আবু সাইদ, তার পয়েন্ট মালবান্ধা বাজার ও রাহিম উদ্দিন, তার পয়েন্ট কন্দপুর কলমা ইউপির এই চারজন ডিলারের কেউ চাল উত্তোলন করেনি। তবে কামারগঁ ইউনিয়নে (ইউপি) সুফি কামাল মিন্টু বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হবার পর তাকে ডিলার ছেড়ে দিতে হয়। এছাড়াও তালন্দ ইউপির যুবলীগ সভাপতি মুকলেস চাল তুলেন নি, তার পয়েন্ট মোহর গ্রামে ও পাঁচন্দর ইউপির সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম চাল তুলেন নি, তার পয়েন্ট ইলামদহী বাজারে। বাকি নয়জন ডিলার চাল উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন।
উপজেলা খাদ্য অফিস জানায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর গাঁ ঢাকা দেয় এসব ডিলার। তবে যে ৯ জন চাল তুলে বিক্রি করেছেন তারা স্থানীয় ভাবে বিএনপির নেতাকর্মী দের সঙ্গে সংখ্যতা গড়ে তুলে বিক্রি করতে পেরেছেন। চলতি মাসের ৮ সেপ্টেম্বর যেই ৭ জন ডিলার চাল তুলেননি তাদের বিপরীতে নতুন ভাবে ডিলার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।এর পর থেকে ডিলার পেতে মরিয়া হয়ে পড়েন বিএনপির নেতারা। ৭ জন ডিলারের বিপরীতে ২৭ জন আবেদন করেছেন এবং ডিলার পেতে নানা ভাবে তদ্বির শুরু হয়েছে।
সুত্র জানায়, দেশ যেহেতু নতুন ভাবে সংস্কার হচ্ছে। একারনে প্রতিটি ডিলার বাতিল করে নতুন ভাবে নিয়োগ এবং নতুন ভাবে উপকার ভোগীর তালিকা তৈরির দাবি তুলেছেন। কারন বিগত সময়ে দলীয় বিবেচনায় ডিলার নিয়োগ ও উপকারভোগীর তালিকা করা হয়েছে। এতে প্রকৃত গরীব অসহায় ব্যক্তিরা বঞ্চিত হয়েছে।অধিকাংশক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে বিত্তমীলদের নামে তালিকা করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মলিউজ্জামান সজিব জানান, ডিলারেরা চাল উত্তোলন না করলে কিছুই করার নাই। নতুন ডিলার নিয়োগের জন্য গত ৮ তারিখে নোটিশ সাটানো হয়েছিল। ৭ জনের বিপরীতে ২৭ জন আবেদন করেছেন। দলীয় বিবেচনায় নাকি ডিলার দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান নিয়মমত ডিলার নিয়োগ হবে আগামী সপ্তাহের দিকে। ইউএনও স্যারের সভাপতিত্বে কমিটি যাচাই বাছাই করে ডিলার নিয়োগ হবে। ডিলার নিয়োগের বিষয়ে জানতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) (চলতি দায়িত্ব) মাসতুরা আমিনার সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।