বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১১৩ মিলিমিটার। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ বলে কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শনিবার বিকেল থেকে ভারী বৃষ্টিপাতে রূপ নেয়। পরে মধ্যরাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত দমকা ঝড়ো-হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত চলে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, চলতি বছরের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে গত ১২ জুলাই ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আগামী সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে জানান তিনি।
ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো-হাওয়ার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। ঘর থেকে খুব-একটা বের হয়নি স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। বিপাকে পড়েছেন ছোট বড় গো-খামারি, ডুবেছে ফসলের মাঠ।
কুষ্টিয়া শহরের বড় বাজারে অটোরিকশা চালক নবীর উদ্দিন বলেন, রাত থেকে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস হচ্ছে। সকালে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। তবে রাস্তায় মানুষের তেমন দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।
ভেড়ামারা উপজেলার ক্ষেমিরদিয়ার গ্রামের গরু খামারি মাসুদ রানা বলেন, বৃষ্টির কারণে গরু-ছাগলের জন্য কাঁচা খাবার আনতে পারছি না। ঠিকমতো খাবারও দিতে পারছি না। তিনি আরও জানান, তাদের এলাকার ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। মরিচ, টমেটো ও তুলার ক্ষেত ডুবে গেছে।
কৃষির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ৮০ হেক্টর জমিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে কলা, তুলা, মরিচ, সবজি ও কালায়ের হিসাব পেয়েছি।
বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দৌলতপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মির্জা কে ই তুহিন বলেন, রোববার ভোর রাত থেকে উপজেলা পুরো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দমকা হাওয়ার কারণে বেশ কিছু স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। দুটি বৈদ্যুতিক পোল ভেঙে গেছে। তারের ওপর গাছ উপড়ে পড়েছে। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু হবে। তারপরও বিদ্যুতের কর্মীরা মাঠে কাজ করছে।