রাজশাহীর তানোরে গ্রেফতার আতঙ্ক ও জনরোষ এড়াতে একশ্রেণীর বিতর্কিত অধ্যক্ষ এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক আত্মগোপণে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের কেউ একাধিক মামলার আসামি, আবার কেউ আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি ও নিয়োগ বাণিজ্যে করে সাধারণের চোখে অনেকটা গণদুশমনে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দেশে “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে একশ্রেণীর অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক আত্মগোপণে রয়েছে। এতে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী সচেতন মহলের মাঝে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্ষোভ অসন্তোষ।
স্থানীয়রা জানান, কালিগঞ্জহাট ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ সফিউজ্জামান খোকন, কারিগরী কলেজ অধ্যক্ষ অসিম কুমার, তানোর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও চাপড়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও পাড়িশো হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাম কমল সাহা, সাবেক এমপির কথিত ভাই তানোর মডেল পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সেলিম ও সহকারী অধ্যাপক মুন্সেফ আলীপ্রমুখ। এরা মামলায় গ্রেফতারে আতঙ্কে শিক্ষা প্রতিস্ঠানে আসছে না।এসব শিক্ষকের দাবি তারা ছুটি নিয়েছেন। একই সঙ্গে এতো শিক্ষককে কারা এতো লম্বা ছুটি দিয়েছে ? তারও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবিতে পরিনত হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত প্রায় ১৫ বছর যাবত একশ্রেণীর শিক্ষক আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিয়োগ বাণিজ্যে করেছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে নগদ-বিকাশ একাউন্ট খুলতে মাথাপিছু ১৫০ টাকা, বিদ্যুৎ বিলের জন্য প্রতি মাসে মাথা পিছু ২০ টাকা,পাবলিক পরীক্ষার ফরম পুরুণে অতিরিক্ত টাকা ও পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকিয়ে টাকা আদায়, সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের টাকা কেটে নেয়া ও স্কুলের বিভিন্ন অনুদানের টাকা নয়ছয় করেছে।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক আত্মগোপণে আছেন কেন ? জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, যারা আত্মগোপনে আছেন সবাই ছুটি নিয়েছে। কতদিনের ছুটি কবে যোগ দিবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদোত্তর না দিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এবিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের গণছুটি দেয়ার কোনো সুযোগ নাই।তিনি বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে, অভিযোগের সত্যতা পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট