ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজ জেলের লাশ ভেসে উঠলো নদীতে Logo চাটমোহরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo মাগুরায় উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত Logo মুকসুদপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ Logo নগরকান্দায় চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার Logo গোমস্তাপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে পালিত হচ্ছে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫ তম তিরোধান উৎসব Logo লালপুরে পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ১ জেলে নিখোঁজ Logo নাটোরে বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর পক্ষ থেকে অসহায় শ্রমিকদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরন Logo রংপুরে তিস্তা নদীতে অজ্ঞাত শিশুর লাশ উদ্ধার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রাজশাহীতে ছাত্রলীগ কর্মী কটা সহ তিনজন আটক

শনিবার দুপুরে ও বিকালে ওই দুই তরুণকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। এদের নাম মো. সনি ও মো. কটা।
দুজনের বাড়িই পঞ্চবটি এলাকায়। তাদের বয়স আনুমানিক ২৫-৩০ বছর। সনি দিনমজুরের কাজ করেন। কটা ভ্যানচালক। তারা ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, এই ছাত্রলীগের কর্মীরা ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল। আটক দুজন ধর্ষণ ও হত্যার কথা তাদের কাছে স্বীকার করেছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদ নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক খরা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্বার জানান, ৫ আগস্ট থেকেই তারা শুনছিলেন যে সেদিন দুপুরে এক ছাত্রীকে মিছিল থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের পর বুক চিরে লাশ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই তারা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। দুপুরে তারা খবর পান, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাতে একজন আটক হয়েছেন যিনি ৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা রেল স্টেশনে গিয়ে সনিকে পান। তখন সনি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কটাকে খুঁজতে থাকেন তারা।
বিকাল ৫টার দিকে নগরের আলুপট্টি পদ্মার পাড় এলাকায় অভিযুক্ত কটাকে খুঁজে পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা তাকে ধরতে গেলেই তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা নদীতে সাঁতরে তাকে ধরে ফেলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন তাকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। সেখানে তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যায় বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়। সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার দাবি করেন, সনি ও কটা দুজনেই তাদের কাছে ধর্ষণ ও হত্যার পর বুক চিরে দিয়ে লাশ পানিতে ভাসানোর কথা স্বীকার করেছেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী কে তা জানেন না জানিয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, হয়তো অভিভাবক লজ্জায় এমন ঘটনা প্রকাশ করেননি। এ জন্য থানায় কোন জিডিও হয়নি। মেয়েটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাত ৮টায় থানায় গিয়ে দেখা গেছে, আহত অবস্থায় সনি ও কটাকে একটি বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
এ সময় পুলিশ আহত দুজনকে হাসপাতালে নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাঁধা দেন। তারা বলেন, ধর্ষকের কোন চিকিৎসা করতে দেওয়া হবে না। একপর্যায়ে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার শিক্ষার্থীদের বোঝালে তারা চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন। থানায় থাকা অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গেই এই প্রতিবেদক কথা বলেন। কিন্তু কেউই ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। তারা নিজেরাও ওই ছাত্রীকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন। থানায় এসেছিলেন মহানগর যুবদলের সদস্য তানভীর আহমেদ সুইট। তিনি দাবি করেন, একজন নয়; পঞ্চবটি শশ্মানঘাটে দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর পেট কেটে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনিও কারও পরিচয় জানেন না। নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ৫ আগস্ট এমন কোন ঘটনা এলাকায় ঘটেছে কি না তা তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে কোন অভিভাবকও কিছু জানাননি।
ওসি জানান, আটক দুজন আহত, তাই তাদের হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ না এলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, যারা ধরে এনেছেন, তাদের কাছ থেকে শুনব। কেউ অভিযোগ করেন কী না দেখব। তারা কোন অভিযোগ না করলে দেখব তাদের নামে অন্য কোন অভিযোগ আছে কী না। সে মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেব।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নিখোঁজ জেলের লাশ ভেসে উঠলো নদীতে

error: Content is protected !!

রাজশাহীতে ছাত্রলীগ কর্মী কটা সহ তিনজন আটক

আপডেট টাইম : ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মোঃ মনোয়ার হোসেন, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি  :
শনিবার দুপুরে ও বিকালে ওই দুই তরুণকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। এদের নাম মো. সনি ও মো. কটা।
দুজনের বাড়িই পঞ্চবটি এলাকায়। তাদের বয়স আনুমানিক ২৫-৩০ বছর। সনি দিনমজুরের কাজ করেন। কটা ভ্যানচালক। তারা ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, এই ছাত্রলীগের কর্মীরা ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল। আটক দুজন ধর্ষণ ও হত্যার কথা তাদের কাছে স্বীকার করেছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদ নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক খরা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্বার জানান, ৫ আগস্ট থেকেই তারা শুনছিলেন যে সেদিন দুপুরে এক ছাত্রীকে মিছিল থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের পর বুক চিরে লাশ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই তারা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। দুপুরে তারা খবর পান, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাতে একজন আটক হয়েছেন যিনি ৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা রেল স্টেশনে গিয়ে সনিকে পান। তখন সনি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কটাকে খুঁজতে থাকেন তারা।
বিকাল ৫টার দিকে নগরের আলুপট্টি পদ্মার পাড় এলাকায় অভিযুক্ত কটাকে খুঁজে পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা তাকে ধরতে গেলেই তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা নদীতে সাঁতরে তাকে ধরে ফেলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন তাকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। সেখানে তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যায় বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়। সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার দাবি করেন, সনি ও কটা দুজনেই তাদের কাছে ধর্ষণ ও হত্যার পর বুক চিরে দিয়ে লাশ পানিতে ভাসানোর কথা স্বীকার করেছেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী কে তা জানেন না জানিয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, হয়তো অভিভাবক লজ্জায় এমন ঘটনা প্রকাশ করেননি। এ জন্য থানায় কোন জিডিও হয়নি। মেয়েটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাত ৮টায় থানায় গিয়ে দেখা গেছে, আহত অবস্থায় সনি ও কটাকে একটি বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
এ সময় পুলিশ আহত দুজনকে হাসপাতালে নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাঁধা দেন। তারা বলেন, ধর্ষকের কোন চিকিৎসা করতে দেওয়া হবে না। একপর্যায়ে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার শিক্ষার্থীদের বোঝালে তারা চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন। থানায় থাকা অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গেই এই প্রতিবেদক কথা বলেন। কিন্তু কেউই ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। তারা নিজেরাও ওই ছাত্রীকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন। থানায় এসেছিলেন মহানগর যুবদলের সদস্য তানভীর আহমেদ সুইট। তিনি দাবি করেন, একজন নয়; পঞ্চবটি শশ্মানঘাটে দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর পেট কেটে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনিও কারও পরিচয় জানেন না। নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ৫ আগস্ট এমন কোন ঘটনা এলাকায় ঘটেছে কি না তা তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে কোন অভিভাবকও কিছু জানাননি।
ওসি জানান, আটক দুজন আহত, তাই তাদের হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ না এলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, যারা ধরে এনেছেন, তাদের কাছ থেকে শুনব। কেউ অভিযোগ করেন কী না দেখব। তারা কোন অভিযোগ না করলে দেখব তাদের নামে অন্য কোন অভিযোগ আছে কী না। সে মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেব।

প্রিন্ট