ঢাকা , রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালমারীতে মডার্ন ক্লিনিকের কিডনি নষ্টের ভুয়া রিপোর্ট; বিপাকে রোগীর পরিবার Logo e-Paper-27.07.2025 Logo দেড়মাস সংসার করার পর জানা গেল নববধু পুরুষ মানুষ Logo গোমস্তাপুর সাপের কামড়ে এক শিশুর মৃত্যু Logo তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে বোয়ালমারীতে বিএনপির আনন্দ র‍্যালি ও আলোচনা সভা Logo কুষ্টিয়ায় আসামির ছুরিকাঘাতে ডিবি পুলিশের এসআই আহত, ২ জন আটক Logo গ্রীনপ্লাজা প্রপার্টিজ”এর মালিকের বিচার দাবি ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মহানগর বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলন Logo গাজীপুরের কাশিমপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি,স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট Logo অভিযানের নামে নির্যাতন শেষে ডিএনসি’র ভুল স্বীকার Logo লালপুরে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠান ও সেবা মেলা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বোয়ালমারীতে মডার্ন ক্লিনিকের কিডনি নষ্টের ভুয়া রিপোর্ট; বিপাকে রোগীর পরিবার

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

 

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত মডার্ন ল্যাবরেটরীর কিডনির ওপরে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে বিপাকে ফেলেছে একটি শিশুর পরিবারকে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন লোকজন বলছে খারাপ এবং নষ্ট মেশিন দিয়ে মডার্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এবং অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে ল্যাবরেটরিটি পরিচালনা করা হচ্ছে। যার কারনে ভুয়া রিপোর্ট তৈরী হচ্ছে।

 

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই উপজেলার হাসামদিয়া গ্রামের জাহিদুল বেগের আড়াই বছরের ছেলে জিহাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এসে বর্হিবিভাগে ৫ টাকার টিকিট কেটে হাসপাতালে কর্মরত ডা: মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিনকে দেখান। তিনি দেখে প্রসাব ও কিডনি পরীক্ষা দেন। জাহিদুল বেগ তার বাচ্চাকে নিয়ে মডার্ন ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করতে দেন। মর্ডান ল্যাবরেটরির লোকজন পরীক্ষার কাগজে লেখে তার কিডনি ড্যামেজ (নষ্ট) হয়ে গেছে। পরে ওই রিপোর্ট ডাক্তারকে দেখালে ডাক্তার দ্রুত ফরিদপুর নিয়ে যেতে বলেন। তারা ওই দিনই ফরিদপুর গিয়ে শিশু টিকে ডা. এসি পালকে দেখান। তিনি নতুন করে পরীক্ষা দেন। ওই পরীক্ষাগুলো ফরিদপুরে অবস্থিত ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতলে পরীক্ষা করান। সেখানে সকল রিপোর্টগুলোই ভালো আসে। প্রসাবে সামান্য একটু সমস্যা পায়। যা ঔষধে ঠিক হয়ে যাবে বলে ডাক্তার জানান।

 

এ ব্যাপারে বুধবার (২৩ জুলাই) ওই শিশু জিহাদের দাদি জবেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বোয়ালমারী হাসপাতালের সামনে মডার্ন ল্যাবরেটরী থেকে পরীক্ষা করানোর পর তাদের রিপোর্টে লেখা হয়েছে শিশুটির কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। পরে সেই রিপোর্ট হাসপাতালে গিয়ে ডা: মফিজ উদ্দিনকে দেখালে তিনি রিপোর্ট অনুযায়ী বলেন বাচ্চার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে তাকে দ্রুত ফরিদপুর নিয়ে যান। এ কথা শুনে পরিবারের সকলের কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। ওই দিনই ফরিদপুর গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে নতুন করে রিপোর্ট করানো হয়। সেখানে রিপোর্টে আসছে কিডনিতে কোন সমস্যা নেই প্রসাবে একটু সমস্যা আছে। তিনি আরও বলেন, এভাবে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলানো ঠিক না।

 

জানতে চাইলে বোয়ালমারী মডার্ন ল্যাবরেটরির মালিক জিয়া বলেন, রিপোর্ট ভূয়া না। রিপোর্টে কমবেশি হতে পারে। আমি আলফাডাঙ্গায় আছি ফ্রি হয়ে পরে কল দিব বলে লাইনটি কেটে দেন।

 

বোয়ালমারী হাসপাতালের কর্মরত ডা: মফিজ উদ্দিন বলেন, পরীক্ষার মানের বিষয়টা আমরা সব সময় ভালো চাই, তাহলে নির্ভুল চিকিৎসা দিতে সমস্যা হয় না।  আর যদি রিপোর্ট ভালো না হয় ওই রিপোর্টের ওপরেই আমাদের ডিসিশন নিতে হয়। আমরা চাই নিয়ম মেনে সঠিক রিপোর্ট প্রদান করুক প্যাথলজীগুলো। যেহেতু রোগীর ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব আসে সেই জন্য ফরিদপুর এসি পাল স্যারের কাছে পাঠিয়েছি।

 

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মাহমুদ বলেন, একই দিনে দুটি রিপোর্ট করা হয়েছে বোয়ালমারীর মডার্ন ল্যাবরেটরির রিপোর্টে আসছে ২.৩৫ আর ফরিদপুরের রিপোর্ট আসছে ০.৩। একই তারিখে রিপোর্ট এত পার্থক্য হওয়া উচিত না। বোয়ালমারী ক্লিনিকদের দেখভাল করা আমাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য। উর্ধতন কর্তৃপক্ষদের দেখা উচিত।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালমারীতে মডার্ন ক্লিনিকের কিডনি নষ্টের ভুয়া রিপোর্ট; বিপাকে রোগীর পরিবার

error: Content is protected !!

বোয়ালমারীতে মডার্ন ক্লিনিকের কিডনি নষ্টের ভুয়া রিপোর্ট; বিপাকে রোগীর পরিবার

আপডেট টাইম : ৪ ঘন্টা আগে
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

 

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত মডার্ন ল্যাবরেটরীর কিডনির ওপরে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে বিপাকে ফেলেছে একটি শিশুর পরিবারকে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন লোকজন বলছে খারাপ এবং নষ্ট মেশিন দিয়ে মডার্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এবং অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে ল্যাবরেটরিটি পরিচালনা করা হচ্ছে। যার কারনে ভুয়া রিপোর্ট তৈরী হচ্ছে।

 

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই উপজেলার হাসামদিয়া গ্রামের জাহিদুল বেগের আড়াই বছরের ছেলে জিহাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এসে বর্হিবিভাগে ৫ টাকার টিকিট কেটে হাসপাতালে কর্মরত ডা: মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিনকে দেখান। তিনি দেখে প্রসাব ও কিডনি পরীক্ষা দেন। জাহিদুল বেগ তার বাচ্চাকে নিয়ে মডার্ন ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করতে দেন। মর্ডান ল্যাবরেটরির লোকজন পরীক্ষার কাগজে লেখে তার কিডনি ড্যামেজ (নষ্ট) হয়ে গেছে। পরে ওই রিপোর্ট ডাক্তারকে দেখালে ডাক্তার দ্রুত ফরিদপুর নিয়ে যেতে বলেন। তারা ওই দিনই ফরিদপুর গিয়ে শিশু টিকে ডা. এসি পালকে দেখান। তিনি নতুন করে পরীক্ষা দেন। ওই পরীক্ষাগুলো ফরিদপুরে অবস্থিত ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতলে পরীক্ষা করান। সেখানে সকল রিপোর্টগুলোই ভালো আসে। প্রসাবে সামান্য একটু সমস্যা পায়। যা ঔষধে ঠিক হয়ে যাবে বলে ডাক্তার জানান।

 

এ ব্যাপারে বুধবার (২৩ জুলাই) ওই শিশু জিহাদের দাদি জবেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বোয়ালমারী হাসপাতালের সামনে মডার্ন ল্যাবরেটরী থেকে পরীক্ষা করানোর পর তাদের রিপোর্টে লেখা হয়েছে শিশুটির কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। পরে সেই রিপোর্ট হাসপাতালে গিয়ে ডা: মফিজ উদ্দিনকে দেখালে তিনি রিপোর্ট অনুযায়ী বলেন বাচ্চার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে তাকে দ্রুত ফরিদপুর নিয়ে যান। এ কথা শুনে পরিবারের সকলের কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। ওই দিনই ফরিদপুর গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে নতুন করে রিপোর্ট করানো হয়। সেখানে রিপোর্টে আসছে কিডনিতে কোন সমস্যা নেই প্রসাবে একটু সমস্যা আছে। তিনি আরও বলেন, এভাবে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলানো ঠিক না।

 

জানতে চাইলে বোয়ালমারী মডার্ন ল্যাবরেটরির মালিক জিয়া বলেন, রিপোর্ট ভূয়া না। রিপোর্টে কমবেশি হতে পারে। আমি আলফাডাঙ্গায় আছি ফ্রি হয়ে পরে কল দিব বলে লাইনটি কেটে দেন।

 

বোয়ালমারী হাসপাতালের কর্মরত ডা: মফিজ উদ্দিন বলেন, পরীক্ষার মানের বিষয়টা আমরা সব সময় ভালো চাই, তাহলে নির্ভুল চিকিৎসা দিতে সমস্যা হয় না।  আর যদি রিপোর্ট ভালো না হয় ওই রিপোর্টের ওপরেই আমাদের ডিসিশন নিতে হয়। আমরা চাই নিয়ম মেনে সঠিক রিপোর্ট প্রদান করুক প্যাথলজীগুলো। যেহেতু রোগীর ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব আসে সেই জন্য ফরিদপুর এসি পাল স্যারের কাছে পাঠিয়েছি।

 

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মাহমুদ বলেন, একই দিনে দুটি রিপোর্ট করা হয়েছে বোয়ালমারীর মডার্ন ল্যাবরেটরির রিপোর্টে আসছে ২.৩৫ আর ফরিদপুরের রিপোর্ট আসছে ০.৩। একই তারিখে রিপোর্ট এত পার্থক্য হওয়া উচিত না। বোয়ালমারী ক্লিনিকদের দেখভাল করা আমাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য। উর্ধতন কর্তৃপক্ষদের দেখা উচিত।


প্রিন্ট