ফরিদপুরের নগরকান্দায় মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসায় নির্মিত হচ্ছে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ। ৭ তলাবিশিষ্ট মসজিদটিতে একসাথে প্রায় ২১ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। যার পুরোটাই জোগাড় হবে মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় দান-সদকার মাধ্যমে। ইতোমধ্যে মসজিদটির জমি ক্রয় করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। আজ বুধবার বাদ জোহর এই বাবরি মসজিদ নির্মাণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এতে মাদ্রাসার কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের সাথে মোনাজাতে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম আল্লামা কারামত আলী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরকান্দা পৌর সদরের বাজারের পাশেই অবস্থিত মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা। এটি একটি কওমী মাদ্রাসা। যেখানে নুরানি থেকে দাওরায়ে হাদিস তথা মাস্টার্স শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ দান করা হয়। জেলার অন্যতম বৃহৎ হেফজখানাও এটি। এবার হেফজ বিভাগে সারাদেশে মেধার তালিকায় দেশের প্রথম সারিতে স্থান করে নিয়েছে এই মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী। প্রায় ৮শ’ ছাত্রী পড়ালেখা করে মাদ্রাসাটিতে। সবমিলিয়ে প্রায় দুই হাজার ছাত্রছাত্রী এখানে পড়াশোনা করে। মাদ্রাসাটিতে আবাসিক ছাত্র রয়েছে প্রায় ৭শ’ যাদের মধ্যে একশোর বেশি রয়েছে এতিম শিক্ষার্থী। এতো বেশি আবাসিক ব্যবস্থা সংকুলান করাটা অনেক কষ্টসাধ্য। মাদ্রাসার দু’টি তিনতলা ভবনে তাদের ধারন না হওয়ায় কিছু ছাত্রদের মসজিদে গিয়ে থাকতে হয়।
সরকারি কোন সাহায্য বা অনুদান ছাড়াই মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় তিল তিল করে গড়ে ওঠা মাদ্রাসাটি আজ অত্রাঞ্চলের একটি বৃহৎ দ্বিনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ১৯৯১ সালে মাত্র ২০ শতাংশ জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে ৬ একরেরও বেশি জমি রয়েছে যার মধ্যে ১ একর ১০ শতাংশ জমির উপরে নির্মিত হচ্ছে এই বাবরি মসজিদ।
মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মুফতি ইসমাতুল্লাহ কাসেমী বলেন, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পরে সেখানে একটি জামে মসজিদও নির্মাণ করা হয়। তবে এই মসজিদে এখন নামাজের ওয়াক্তে মুসুল্লিদের সংকুলান হচ্ছেনা। এর ফলে হেফজখানার ছাত্রদের তাদের শ্রেণিকক্ষেই আলাদা জামাতে নামাজ আদায় করতে হয়। সেজন্য এখানে এই বাবরি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তিলে তিলে করে মানুষের নিকট থেকে সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে ২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে মসজিদের জমি কেনা হয়েছে। এখন পাইলিংয়ের পিলার তৈরির মাধ্যমে সাততলা মসজিদ ভবন নির্মাণ কাজের সূচনা হলো।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম আল্লামা কারামত আলী বলেন, ৭ তলা বিশিষ্ট মসজিদের নকশা ও পরিকল্পনা অনুমোদনের পর ঐতিহাসিক গুরুত্ব থেকে এর নাম দেওয়া হয় নগরকান্দা বাবরি মসজিদ। মসজিদটি সম্পন্ন করতে ব্যয় হবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। যার পুরোটাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দান-সদগার মাধ্যমে সংগৃহিত হবে। এজন্য তিনি সদকায়ে জারিয়ায় শরিক হতে সকলকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান। দুটি বিকাশ নাম্বার- ০১৭৮৪২৪৮০৮২ এবং ০১৭১৬৯২১১০৪ নম্বর ছাড়াও ইসলামী ব্যাংকের নগরকান্দা শাখার হিসাব নম্বর- ২০৫০৭৭৭০২৯০৮৪৪৭০৩ এ টাকা পাঠানো যাবে।
প্রিন্ট