ইসমাইল হােসেন বাবুঃ
সমকামিতা ও শিক্ষার্থী হেনস্তায় অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ।
–
সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হকের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
–
গত ৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (F) ধারা মোতাবেক তাকে আগামী চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
–
অফিস আদেশে বলা হয়, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনাপূর্বক সিন্ডিকেটের ২৬৬তম সভার ৪৪নং প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (4) i (b) ও (৫) ধারা মোতাবেক তাকে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়।
–
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, উক্ত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের ২৬৭ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি সুপারিশে সিন্ডিকেটের ২৬৮তম (সাধারণ) সভার ৭নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে তার এহেন কর্মকাণ্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলাবিধির চরম পরিপন্থি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (F) ধারা মোতাবেক তাকে ৩১ মে থেকে তারিখ থেকে চাকরি হতে অপসারণ করা হলো।
–
বিভাগটির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দীন বলেন, এর আগে প্রশাসন প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে অটল ছিলাম। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন নির্যাতন থেকে রক্ষা পেল। এই সিদ্ধান্তে আমরা অত্যন্ত খুশি। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, হাফিজকে তো আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বহিষ্কার করলো। ক্যাম্পাসে এমন অনেক হাফিজ আছে। আমরা চাইবো প্রশাসন সেগুলো তদন্ত করে খুঁজে বের করে নিজেরা শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবে।
–
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমকামিতা, যৌন হয়রানী, শিক্ষার্থী হেনস্তা, আপত্তিকর মন্তব্য, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া, ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে বাধ্য করা সহ ২৭ দফা অভিযোগ তুলে অব্যাহতির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তার কুশপুত্তলিকায় জুতা নিক্ষেপ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করে শিক্ষার্থীরা। পরে তারা ওই শিক্ষকের স্থায়ী চাকরিচ্যূত করার দাবিতে বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
–
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাকরিচ্যুত হাফিজুল ইসলামকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রিন্ট