ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফরিদপুরে রাত নামলেই শুরু হয় পদ্মা নদী থেকে বালু লুটের উৎসব

দিনের আলোতে আনাগোনা না থাকলেও রাত নামলেই শুরু হয় পদ্মা নদীর বুক থেকে বালু লুটের উৎসব। পদ্মানদী ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলেন প্রভাবশালী কয়েক ব্যাক্তি। অপিরকল্পতভাবে বালু তোলার কারণে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হওয়া নদী ভাঙ্গনে সহায় সম্পদ হারাচ্ছেন এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্তরা অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদপুর নদী বন্দরের কয়েকশ মিটারের মধ্যেই তোলা হচ্ছে বালু। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বন্দরটিও। আর অপর প্রান্তের আইজদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও নাজির বিশ্বাসের ডঙ্গী  গ্রামসহ অন্তত চার-পাঁচটি গ্রামের ফসলী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদী ভেঙ্গে কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে চলে এসেছে। তারা দাবী করেন, নদী ভাঙ্গণে এরই মধ্যে অন্তত তিনটি গ্রান সম্পুর্ণরুপে চলে গেছে নদীর মধ্যে। আরো অন্তত ১০টি গ্রামের অনেকটাই ভেঙ্গে গেছে।
স্থানীয়দের দাবী, সম্প্রতিকালে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রম কিছুটা শিথিল থাকার সুযোগে মরিয়া হয়ে উঠছেন বালু ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তারা বিভিন্ন জেলা থেকে ড্রেজার ভাড়া এনে বালু তুলছেন।
স্থানীয়দের দাবী, মো. আলম শেখ নামের বালু ব্যবসায়ী নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীেেত নির্মিত সেতু সংলগ্ন এলাকায় বালু খালাস করায় সেতুটিও ঝুকিতে পড়বে।
নদীপাড়ের বাসিন্দা নাজির বিশ্বসের ডাঙ্গীর আব্দুর রব ও মো. রনিসহ কয়েকজন জানান, মো. মজিবর শেখ, মো আলম শেখ, মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. শাওন শেখ ও রাজা ফকিরের নেতৃত্বে কয়েকটি ড্রেজার নদী বুকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ওই এলাকার মানুষেরা জানান, বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায়, কেউ বালু তোলার বিষয়ে কথা বলতে গেলেও হেনস্তার শিকার হতে হয়। ফলে ক্ষতির শিকার হয়েও ভয়ে কেউই মুখ খুলতে চান না।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বিকার করেছেন অভিযুক্তরা। তারা দাবী করেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় প্রায়শ ব্যবস্থা নেয়া হয় এসব বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে। যদিও স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ না থাকায় কারা জড়িত রয়েছে তা নিশ্চত হওয়া যাচ্ছেনা। এতে সরাসরি কারো বিরুদ্ধে মামলা করাও যাচ্ছে না।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

ফরিদপুরে রাত নামলেই শুরু হয় পদ্মা নদী থেকে বালু লুটের উৎসব

আপডেট টাইম : ০৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :
দিনের আলোতে আনাগোনা না থাকলেও রাত নামলেই শুরু হয় পদ্মা নদীর বুক থেকে বালু লুটের উৎসব। পদ্মানদী ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলেন প্রভাবশালী কয়েক ব্যাক্তি। অপিরকল্পতভাবে বালু তোলার কারণে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হওয়া নদী ভাঙ্গনে সহায় সম্পদ হারাচ্ছেন এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্তরা অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদপুর নদী বন্দরের কয়েকশ মিটারের মধ্যেই তোলা হচ্ছে বালু। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বন্দরটিও। আর অপর প্রান্তের আইজদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও নাজির বিশ্বাসের ডঙ্গী  গ্রামসহ অন্তত চার-পাঁচটি গ্রামের ফসলী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদী ভেঙ্গে কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে চলে এসেছে। তারা দাবী করেন, নদী ভাঙ্গণে এরই মধ্যে অন্তত তিনটি গ্রান সম্পুর্ণরুপে চলে গেছে নদীর মধ্যে। আরো অন্তত ১০টি গ্রামের অনেকটাই ভেঙ্গে গেছে।
স্থানীয়দের দাবী, সম্প্রতিকালে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রম কিছুটা শিথিল থাকার সুযোগে মরিয়া হয়ে উঠছেন বালু ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তারা বিভিন্ন জেলা থেকে ড্রেজার ভাড়া এনে বালু তুলছেন।
স্থানীয়দের দাবী, মো. আলম শেখ নামের বালু ব্যবসায়ী নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীেেত নির্মিত সেতু সংলগ্ন এলাকায় বালু খালাস করায় সেতুটিও ঝুকিতে পড়বে।
নদীপাড়ের বাসিন্দা নাজির বিশ্বসের ডাঙ্গীর আব্দুর রব ও মো. রনিসহ কয়েকজন জানান, মো. মজিবর শেখ, মো আলম শেখ, মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. শাওন শেখ ও রাজা ফকিরের নেতৃত্বে কয়েকটি ড্রেজার নদী বুকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ওই এলাকার মানুষেরা জানান, বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায়, কেউ বালু তোলার বিষয়ে কথা বলতে গেলেও হেনস্তার শিকার হতে হয়। ফলে ক্ষতির শিকার হয়েও ভয়ে কেউই মুখ খুলতে চান না।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বিকার করেছেন অভিযুক্তরা। তারা দাবী করেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় প্রায়শ ব্যবস্থা নেয়া হয় এসব বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে। যদিও স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ না থাকায় কারা জড়িত রয়েছে তা নিশ্চত হওয়া যাচ্ছেনা। এতে সরাসরি কারো বিরুদ্ধে মামলা করাও যাচ্ছে না।

প্রিন্ট