ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নরসিংদী সিটি হাসপাতালে ১৮ ইঞ্চি ‘মব’ কাপড় পেটে রেখেই সেলাই, সংকটাপন্ন প্রসূতি Logo দৌলতপুরে থানার সামনে স্বর্ণের দোকানে দূর্ধর্ষ চুরি Logo শ্রেণিকক্ষে পানিঃ দৌলতপুরে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা Logo সারাদেশে এনসিপির সাড়া দেখে বলা হচ্ছে নিবন্ধনের কাগজে ঝামেলা আছেঃ -হান্নান মাসউদ Logo মাদারিপুরে দু’টি বাস-পিকআপের ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত ৬ Logo প্রয়াত বিচারক মহম্মদ নুরুল হোদা মোল্লার মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়ার মজলিস Logo ইবি ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ বিক্ষোভ Logo গোমস্তাপুরে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু Logo চরভদ্রাসনে টানা বৃষ্টিতে কর্মহীন ভ্যান-রিকশাচালকদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ Logo বাগাতিপাড়ায় লোকালয়ে দেখা মিললো বিরল কালো মুখ হনুমানের
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

দেশের জন্য গুলিতে হাঁটু ঝাঝরা হয়ে গেছে

বৈষ্যম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে আহত হয়েছেন যুবক আ: আহাদ (২২)। তিনি বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ১ নম্বর ওয়ার্ডে (অর্থপেডিক) চিকিৎসাধীন। গতকাল বৃহস্পতিবার  সন্ধ্যায় হাসপাতালে আলাপকালে তিনি বলেন, আমার মনে কোন কষ্ট নেই। নেই কোন আফসোস। গুলি খেয়েও দেশে স্বাধীন করতে পেরেছি এটাই আমার বড়প্রাপ্তি ।

আহত আ: আহাদ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মোহাম্মদ শহিদ ও রোজিনা বেগম দম্পতির ছেলে। রোজিনা মানুষের বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। আর তাঁর স্বামী মোহাম্মদ শহিদ অসুস্থ হয়ে বাড়িতে থাকেন। এই দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আবদুল আহাদ কুষ্টিয়া শহরে থানা মোড়ে দুই বছর ধরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে আসছিলেন। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। দুই বছর আগে আহাদ বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী রিয়া আক্তার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে গুরুতর আহত আহাদের মা রোজিনা বেগম ও ছোট ভাই নূর ইসলামকে বিছানার পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। তাঁর বিছানার পাশে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে ছোট আকারের বাংলাদেশের পতাকা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্ররা এই পতাকা বেঁধে দিয়ে গেছেন বলে জানালেন আহাদ।

তিনি আরো বলেন, ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়েছিলেন, সেদিন পায়ে ও হাতে হালকা ছররা গুলি লেগেছিল, পরে বাড়িতেই ছিলেন। তবে ৫ আগস্ট দুপুরে জানতে পারেন, শহরে আবার আন্দোলন শুরু হয়েছে, তখন বাড়ি থেকে আবার বের হন। থানা মোড়ে থানার গেটের সামনে পায়ে আবারও ছররা গুলি লেগে তিনি গুরুতর আহত হন।
গত ৫ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরে আন্দোলনে সংঘর্ষ ও সংঘাতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। নিহত হন আটজন। গুলিবিদ্ধ আহাদ সেদিন থেকেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কথা বলার একপর্যায়ে পা দেখিয়ে মৃদু হেসে আহাদ বললেন, ‘দেখছেন, ছররা গুলিতে ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে কীভাবে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। হাসপাতালে ভর্তির পর পাশে থাকা আহত দুজনকে মরতে দেখেছি। আমি তো এখনো বেঁচে আছি। স্ত্রী যে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, সে কথা মনেই ছিল না আমার। দেশ স্বাধীন হয়েছে সব কষ্ট ভুলে গেছি।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদী সিটি হাসপাতালে ১৮ ইঞ্চি ‘মব’ কাপড় পেটে রেখেই সেলাই, সংকটাপন্ন প্রসূতি

error: Content is protected !!

দেশের জন্য গুলিতে হাঁটু ঝাঝরা হয়ে গেছে

আপডেট টাইম : ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
ইসমাইল হােসেন বাবু, ষ্টাফ রিপােটার :
বৈষ্যম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে আহত হয়েছেন যুবক আ: আহাদ (২২)। তিনি বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ১ নম্বর ওয়ার্ডে (অর্থপেডিক) চিকিৎসাধীন। গতকাল বৃহস্পতিবার  সন্ধ্যায় হাসপাতালে আলাপকালে তিনি বলেন, আমার মনে কোন কষ্ট নেই। নেই কোন আফসোস। গুলি খেয়েও দেশে স্বাধীন করতে পেরেছি এটাই আমার বড়প্রাপ্তি ।

আহত আ: আহাদ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মোহাম্মদ শহিদ ও রোজিনা বেগম দম্পতির ছেলে। রোজিনা মানুষের বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। আর তাঁর স্বামী মোহাম্মদ শহিদ অসুস্থ হয়ে বাড়িতে থাকেন। এই দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আবদুল আহাদ কুষ্টিয়া শহরে থানা মোড়ে দুই বছর ধরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে আসছিলেন। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। দুই বছর আগে আহাদ বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী রিয়া আক্তার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে গুরুতর আহত আহাদের মা রোজিনা বেগম ও ছোট ভাই নূর ইসলামকে বিছানার পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। তাঁর বিছানার পাশে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে ছোট আকারের বাংলাদেশের পতাকা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্ররা এই পতাকা বেঁধে দিয়ে গেছেন বলে জানালেন আহাদ।

তিনি আরো বলেন, ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়েছিলেন, সেদিন পায়ে ও হাতে হালকা ছররা গুলি লেগেছিল, পরে বাড়িতেই ছিলেন। তবে ৫ আগস্ট দুপুরে জানতে পারেন, শহরে আবার আন্দোলন শুরু হয়েছে, তখন বাড়ি থেকে আবার বের হন। থানা মোড়ে থানার গেটের সামনে পায়ে আবারও ছররা গুলি লেগে তিনি গুরুতর আহত হন।
গত ৫ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরে আন্দোলনে সংঘর্ষ ও সংঘাতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। নিহত হন আটজন। গুলিবিদ্ধ আহাদ সেদিন থেকেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কথা বলার একপর্যায়ে পা দেখিয়ে মৃদু হেসে আহাদ বললেন, ‘দেখছেন, ছররা গুলিতে ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে কীভাবে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। হাসপাতালে ভর্তির পর পাশে থাকা আহত দুজনকে মরতে দেখেছি। আমি তো এখনো বেঁচে আছি। স্ত্রী যে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, সে কথা মনেই ছিল না আমার। দেশ স্বাধীন হয়েছে সব কষ্ট ভুলে গেছি।

প্রিন্ট