কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় পদ্মা চরে দেখা দিয়েছে কুমির আতঙ্ক। রাতের আঁধারে নদী থেকে তীরবর্তী লোকালয়ে কুমির ওঠে আসায় আতঙ্কে আছে পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা, জেলে ও কৃষকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম।
মুন্সীপাড়ার বাসিন্দা টিক্কা মুন্সী জানান, তার বাড়ির সামনে পদ্মা নদী সংলগ্ন এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে রাতে একাধিক কুমির দেখা গেছে। কুমিরগুলো প্রায় ১০ ফুট লম্বা।
জানা যায়, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির পর বেশ কয়েকদিন থেকেই কুমিরের আনাগোনা বেড়েছে। এর আগে এলাকাবাসী কখনো কুমির দেখেনি। আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে দলবেঁধে কয়েকটা কুমির নদীর কিনারা থেকে উপরে ওঠে আসছে। মানুষ বা আলোর উপস্থিতি টের পেলে আবার নদীতে নেমে যাচ্ছে। কুমিরের একটা ছোট ঝাঁক নদীতে এসেছে বলে এলাকাবাসী ধারণা।
স্থানীয়রা জানান, কুমিরগুলো সাধারণত দিনে নদীতে আর রাতের আঁধারে উপরে ওঠে আসে। এই কারণেই বেশ কয়েকদিন ধরে জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারছেন না। যারা নদীতে গোসল করে তারাও গোসল করতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আরো দুশ্চিন্তার বিষয় হলো কৃষকরা নদীতে পাট জাগ দিতে পারছেন না। আর জাগ দেওয়া হলেও সেটা তুলতে পারছেন না। তবে এর আগে কখনো নদীতে কুমির দেখা যায়নি।
জেলে আশরাফুল প্রামাণিক বলছিলেন, কুমিরের ভয়ে মৎস্য কর্মকর্তা ও ৯৯৯ এ ফোন দিয়েও সুরাহা পাইনি। ১০ দিন হলো নদীতে নামতে পারিনি। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, নদীতে পাট জাগ দিয়েছি। পাট বিনিয়ে শুকাতে দেব। কুমিরের ভয়ে কেউ নামতে সাহস পাচ্ছে না। এদিকে পদ্মা নদী সংলগ্ন সাহেবনগর গ্রামেও কুমিরসহ কুমিরের বাচ্চার দেখা মিলেছে। এ নিয়ে সেখানেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা আনারুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা নির্বাহ করে নদীকেন্দ্রিক। নদীতে কুমির থাকায় প্রত্যাহিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।
বন বিভাগের ভেড়ামারা রেঞ্জের কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পানির সঙ্গে সঙ্গে কুমিরও এসে থাকতে পারে। শুধু ভেড়ামারা নয় দৌলতপুর, মিরপুরের পদ্মা নদীর তীরেও কুমিরের দেখা মিলেছে। নদী তীরবর্তী এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে কুমিরও চলে যাবে।
প্রিন্ট