ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্য নিহত Logo হাতিয়ায় নৌবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার Logo তানোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ১৫ হাজার কেজি চাল আত্মসাৎ Logo ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে নড়াইলে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকদের মানববন্ধন Logo সদরপুরে দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি প্রকাশ্যে, পুলিশ খুঁজে পাচ্ছেনা! Logo নড়াইলে উন্নত জাতের করলার মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo বন্যায় ঘর হারাদের ঘর তৈরি করে দিচ্ছে হুয়াওয়ে Logo অবৈধভাবে পলিথিন উৎপাদন, ভ্রাম্যমান অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষের নাম মো. ফরিদ আহমেদ।

 

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে গভর্নিং বডির সদস্য শহীদউদ্দিন মিয়া দীপুর নিকট দুই কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষ ও তার দুর্নীতির দোসর শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফের পদত্যাগের সময় বেঁধে দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও জানান তারা।

 

শিক্ষার্থীরা বলেন, অধ্যক্ষ মো ফরিদ আহমেদ স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কলেজটির শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে অবনতি ঘটেছে। তিনি শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন।

 

জানা যায়, অধ্যক্ষ ও শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে আনীত ১৪ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কলেজটির পরিচালনা পর্ষদ ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গুলোখতিয়ে দেখে। এতে অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদের ব্যাপক অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পরে। এতে গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে নানা প্রকল্প নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ প্রমাণিত হয়।

 

তদন্ত কমিটি গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সভাপতি ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম বরাবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হলেও তা অদ্যাবধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করে। এছাড়া শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে হোস্টেল পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও অধ্যক্ষের দুর্নীতির আপাদমস্তক সহায়তাকারী ও বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে শরীরচর্চা শিক্ষক আ. রউফ খান দুর্নীতিতে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

 

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদ বলেন, এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। আয়-ব্যয় সব ব্যাংকের মাধ্যমে হয় এবং প্রতিটি প্রকল্প কমিটি সম্পাদন করে থাকে। আমি গভর্নিং বডির নিকট লিখিত জবাব দিয়েছি। আমি কোনো প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত নই।

 

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক (সাবেক) মো. আব্দুর রশিদ জানান, ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আনীত অভিযোগ তদন্ত করে আমরা ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাই। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আমাদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। পরবর্তী গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিলো। দীর্ঘদিন সভাপতির ব্যস্ততায় মিটিং হয়নি। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর সাথেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। অচিরেই সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

 

কলেজটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার নিকট এসেছিলো। অচিরেই সভা ডেকে এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হবে, দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের সে সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছি।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

error: Content is protected !!

মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট টাইম : ০৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষের নাম মো. ফরিদ আহমেদ।

 

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে গভর্নিং বডির সদস্য শহীদউদ্দিন মিয়া দীপুর নিকট দুই কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষ ও তার দুর্নীতির দোসর শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফের পদত্যাগের সময় বেঁধে দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও জানান তারা।

 

শিক্ষার্থীরা বলেন, অধ্যক্ষ মো ফরিদ আহমেদ স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কলেজটির শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে অবনতি ঘটেছে। তিনি শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন।

 

জানা যায়, অধ্যক্ষ ও শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে আনীত ১৪ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কলেজটির পরিচালনা পর্ষদ ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গুলোখতিয়ে দেখে। এতে অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদের ব্যাপক অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পরে। এতে গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে নানা প্রকল্প নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ প্রমাণিত হয়।

 

তদন্ত কমিটি গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সভাপতি ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম বরাবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হলেও তা অদ্যাবধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করে। এছাড়া শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে হোস্টেল পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও অধ্যক্ষের দুর্নীতির আপাদমস্তক সহায়তাকারী ও বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে শরীরচর্চা শিক্ষক আ. রউফ খান দুর্নীতিতে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

 

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদ বলেন, এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। আয়-ব্যয় সব ব্যাংকের মাধ্যমে হয় এবং প্রতিটি প্রকল্প কমিটি সম্পাদন করে থাকে। আমি গভর্নিং বডির নিকট লিখিত জবাব দিয়েছি। আমি কোনো প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত নই।

 

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক (সাবেক) মো. আব্দুর রশিদ জানান, ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আনীত অভিযোগ তদন্ত করে আমরা ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাই। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আমাদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। পরবর্তী গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিলো। দীর্ঘদিন সভাপতির ব্যস্ততায় মিটিং হয়নি। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর সাথেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। অচিরেই সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

 

কলেজটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার নিকট এসেছিলো। অচিরেই সভা ডেকে এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হবে, দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের সে সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছি।