ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালমারীতে দেউলিয়া মিলটির পাশেই নতুন জুটমিল প্রতিষ্ঠিত করেছেন পরিচালনাকারীরা Logo মাগুরায় শত্রুজিৎপুর নূরুল ইসলাম দাখিল মাদরাসায় জালিয়াতি করে চাকরির অভিযোগ Logo মুকসুদপুরে সাংবাদিক হায়দারের কুশপুত্তলিকা দাহ Logo মুকসুদপুরে যুবদলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ Logo তানোরে সার চোরাচালানের মহোৎসব! Logo ফরিদপুরে ৫ দিনব্যাপী ৮৬১ ও ৮৬২ তম কাব স্কাউট ইউনিট লিডার বেসিক কোর্স উদ্বোধন Logo রূপগঞ্জে ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার Logo বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায় Logo তানোরের নারায়নপুর স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান Logo বাঘায় গলা কেটে হত্যা, নিহতের ভাইরা ভাই রায়হান গ্রেপ্তার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরায় সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহতের ঘটনায় মামলাঃ আসামী সাবেক দুই এমপি

মাগুরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে গুলিতে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) সাইফুজ্জামান শিখর, ও বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের নামের তালিকা পাওয়া গেছে।

 

গত মঙ্গলবার রাতে মাগুরা সদর থানায় মামলাটি করেন নিহত মেহেদীর ভাই ইউনুস আলী। নিহত মেহেদী হাসান জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মাগুরা পৌরসভার বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে।

 

মামলায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের এমপি সদস্য বীরেন শিকদারে বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতাকে হত্যার হুকুম ও মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

হত্যা মামলার অন্য আসামিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমীন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, যুবলীগের কর্মী পারনান্দুয়ালী গ্রামের বাসিন্দা রথী মোল্লা, বরুনাতৈল গ্রামের আজিম, যুবলীগ নেতা মীর রাশেদুল ইসলাম সুমন, পারনান্দুয়ালী গ্রামের হেদায়েত কোরাইশ, বরুনাতৈল গ্রামের আজিজুল, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শিশির অধিকারী, বরুনাতৈল গ্রামের রাকিব ও পারলা গ্রামের তৌহিদ মোল্যা।

 

মামলার আসামিরা সবাই আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে মামলার আভিযোগের বিষয়ে কোনো আসামির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

মামলার এজাহারে বাদী ইউনুস আলী উল্লেখ করেন, তাঁর ভাই জেলা ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। মাগুরার সাবেক দুই এমপির হুকুম ও মদদে ৪ আগস্ট সকালে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হুমকি দিয়ে আসেন। পরে মেহেদী হাসানসহ অন্যরা মিছিল নিয়ে ঢাকা রোড এলাকার যেতে চাইলে আসামিরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। প্রথমে রাস্তায় ফেলে আসামিরা মেহেদী হাসানকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। একই সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম তাঁর হাতে থাকা রিভলবার দিয়ে মেহেদী হাসানের বাঁম পাঁজরে আঘাত করেন।

 

মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, একই দিনে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পাশে ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন পুলিশের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান। তাঁকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

 

 

হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন  বলেন, ওই দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আহত অবস্থায় ২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেহেদী হাসান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন মারা যান। মেহেদীর বুকে ও ফরহাদ হোসেনের মাথায় গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। দুজনই একই এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালমারীতে দেউলিয়া মিলটির পাশেই নতুন জুটমিল প্রতিষ্ঠিত করেছেন পরিচালনাকারীরা

error: Content is protected !!

মাগুরায় সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহতের ঘটনায় মামলাঃ আসামী সাবেক দুই এমপি

আপডেট টাইম : ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪
মোঃ রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি :

মাগুরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে গুলিতে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) সাইফুজ্জামান শিখর, ও বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের নামের তালিকা পাওয়া গেছে।

 

গত মঙ্গলবার রাতে মাগুরা সদর থানায় মামলাটি করেন নিহত মেহেদীর ভাই ইউনুস আলী। নিহত মেহেদী হাসান জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মাগুরা পৌরসভার বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে।

 

মামলায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের এমপি সদস্য বীরেন শিকদারে বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতাকে হত্যার হুকুম ও মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

হত্যা মামলার অন্য আসামিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমীন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, যুবলীগের কর্মী পারনান্দুয়ালী গ্রামের বাসিন্দা রথী মোল্লা, বরুনাতৈল গ্রামের আজিম, যুবলীগ নেতা মীর রাশেদুল ইসলাম সুমন, পারনান্দুয়ালী গ্রামের হেদায়েত কোরাইশ, বরুনাতৈল গ্রামের আজিজুল, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শিশির অধিকারী, বরুনাতৈল গ্রামের রাকিব ও পারলা গ্রামের তৌহিদ মোল্যা।

 

মামলার আসামিরা সবাই আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে মামলার আভিযোগের বিষয়ে কোনো আসামির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

মামলার এজাহারে বাদী ইউনুস আলী উল্লেখ করেন, তাঁর ভাই জেলা ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। মাগুরার সাবেক দুই এমপির হুকুম ও মদদে ৪ আগস্ট সকালে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হুমকি দিয়ে আসেন। পরে মেহেদী হাসানসহ অন্যরা মিছিল নিয়ে ঢাকা রোড এলাকার যেতে চাইলে আসামিরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। প্রথমে রাস্তায় ফেলে আসামিরা মেহেদী হাসানকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। একই সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম তাঁর হাতে থাকা রিভলবার দিয়ে মেহেদী হাসানের বাঁম পাঁজরে আঘাত করেন।

 

মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, একই দিনে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পাশে ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন পুলিশের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান। তাঁকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

 

 

হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন  বলেন, ওই দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আহত অবস্থায় ২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেহেদী হাসান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন মারা যান। মেহেদীর বুকে ও ফরহাদ হোসেনের মাথায় গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। দুজনই একই এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।


প্রিন্ট