ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গোপালগঞ্জে সড়কের মরা গাছ এখন মরণ ফাঁদ Logo দুই নম্বর নেতার কাছে দেশ এক নম্বর হতে পারে নাঃ -ফয়জুল করীম Logo রাজশাহী বিভাগীয় প্রেসক্লাব কর্তৃক দুর্গাপুর উপজেলা নতুন কমিটি ঘোষণা Logo দিনাজপুরে ৬০০ পিচ ইয়াবা সহ ২ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার Logo বাঘায় বিদুৎস্পর্শে এক নারীর মৃত্যু ! Logo কুষ্টিয়ায় সন্তান হত্যার হুমকি দিয়ে ভাবিকে ধর্ষণ, কারাগারে দেবর Logo ভেড়ামারায় সেনাবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার Logo যশোরে ভালো কাজে পুরস্কৃত হলেন পুলিশ সদস্য সোহেল রানা Logo সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান দুই ভাইয়ের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের নোটিশ Logo যশোর জেলা স্কুলে দশতলা একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

৫৩ বছরেও নির্মাণ হয়নি আত্রইয়ের মিরাপুর বধ্যভূমিতে নাম ফলক

-ছবিঃ প্রতীকী।

অযন্ত ও অবহেলায় রয়েছে নওগাঁর আত্রাইয়ে মিরপুর বধ্যভুমি।এখানে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও শহীদ দের স্মরণে কোনো রকম বেদি বা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ হয় নি এই বধ্যভুমিতে গণহত্যা দিবস পালন বা এর ইতিহাস সম্পর্কে আজও কেউ খোঁজ খবর রাখে নি। ফলে বর্তমান প্রজম্মের কাছে এর অনেক ইতিহাস আজানা রয়ে গেছে।

জানা গেছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন বৃহত্তর রাজশাহী জেলার সদর মহকুমা, নাটোর মহকুমা সান্তাহার  পার্বতীপুর প্রভূতি স্হান থেকে ট্রেনযোগে বাঙ্গালীদের ধরে আনা হতো এই আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনে। রেলওয়ে স্টেশনে পাশে আত্রাই নদী। নদীর উপর একটি রেল সেতু গুলি করে হত্যার পর নদীতে নিক্ষেপ করা হতো হাজারো মানুষের কঙ্কাল স্বাধীনতার পরবর্তীতে দেখা গেছে এই নদীর ধারে। বর্তমানে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মিরাপুর ও রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর থেকে পাক হানাদার বাহিনীরা ১৯৭১ সালের ১০ শে জুলাই ধরে আনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সহোদর দুই ভাই ফিরোজ ও আলমগীর সহ মমতাজ, ছাত্তার, গফুর, কোফিল, আহাদ, মিহির এবং জলিল নামের ৯ জনকে।

কোফিল, আহাদ, মিহির ও জলিলকে গুলি করে হত্যা করে ওই গ্রামে। বাকি কয়েক জনকে ধরে আনা হলো আত্রাই নদীর ধারে।আবারও গুলি সবাই লুটিয়ে পড়লো নদীর জলে। ভাগ্য ক্রমে মৃত্যুযাত্রা থেকে বেঁচে যান ফিরোজ ও আলমগীর ২৪ বছরের টগবগে যুবক দেশের জন্য সেদিন মা বাবা ভাই বোন ছেড়ে আলমগীর ও ফিরোজ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। তাই তাদের খেতে হয়েছিল পাক হানাদার বাহিনীর রাইফেলের তাজা গুলি। সেদিন রাইফেলের গুলিও এই যুবকের প্রাণ কেড়ে নিতে পারেনি। আহত অবস্হায় তিনি পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল নিজ গ্রাম উপজেলার মহাদীঘি গ্রামের এক কৃষকের ঘরে।

কিন্তু বিশ্বাস ঘাতক রাজাকার জানাসহ অন্যরা জুলাই মাসের শেষের দিকে আলমগীরকে ধরে পাক বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এর পর তার আর কোন হদিস মিলেনি।

প্রণে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী কৃষ্ণপুর গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী মোঃআব্দুস ছাত্তার জানান, সেদিন পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে ৩৫ জন মুক্তিকামী মানুষ। এর মধ্যে অলৌকিক ভাবে ৫ জন বেঁচে যান। ১৯৭১ সালের ১০ শে জুলাই আত্রাই পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২ টি বড় বজরা নৌকা যোগে মিরাপুর ও কৃষ্ণপুর গ্রাম ভোর রাতে ঘিরে ফেলে পাক হানাদাররা। ওই দুই গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামি নিরীহ বাঙালিকে ধরে এনে পাক হানাদাররা ছোট যমুনা নদীর পাশে মিরাপুর বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।

বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় ও শহীদদের মা বাবা স্ত্রী সন্তান সরকারি ভাবে কোন স্বীকৃতি পায় নি। দেশের জন্য হাসি মুখে যারা জীবন উৎসর্গঃ করেছেন সে সব শহীদ দের সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে তাদের পরিবারকে সহযোগিতা এবং মিরাপুর বধ্যভূমিতে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গোপালগঞ্জে সড়কের মরা গাছ এখন মরণ ফাঁদ

error: Content is protected !!

৫৩ বছরেও নির্মাণ হয়নি আত্রইয়ের মিরাপুর বধ্যভূমিতে নাম ফলক

আপডেট টাইম : ০৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
আব্দুল জব্বার ফারুক, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :

অযন্ত ও অবহেলায় রয়েছে নওগাঁর আত্রাইয়ে মিরপুর বধ্যভুমি।এখানে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও শহীদ দের স্মরণে কোনো রকম বেদি বা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ হয় নি এই বধ্যভুমিতে গণহত্যা দিবস পালন বা এর ইতিহাস সম্পর্কে আজও কেউ খোঁজ খবর রাখে নি। ফলে বর্তমান প্রজম্মের কাছে এর অনেক ইতিহাস আজানা রয়ে গেছে।

জানা গেছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন বৃহত্তর রাজশাহী জেলার সদর মহকুমা, নাটোর মহকুমা সান্তাহার  পার্বতীপুর প্রভূতি স্হান থেকে ট্রেনযোগে বাঙ্গালীদের ধরে আনা হতো এই আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনে। রেলওয়ে স্টেশনে পাশে আত্রাই নদী। নদীর উপর একটি রেল সেতু গুলি করে হত্যার পর নদীতে নিক্ষেপ করা হতো হাজারো মানুষের কঙ্কাল স্বাধীনতার পরবর্তীতে দেখা গেছে এই নদীর ধারে। বর্তমানে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মিরাপুর ও রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর থেকে পাক হানাদার বাহিনীরা ১৯৭১ সালের ১০ শে জুলাই ধরে আনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সহোদর দুই ভাই ফিরোজ ও আলমগীর সহ মমতাজ, ছাত্তার, গফুর, কোফিল, আহাদ, মিহির এবং জলিল নামের ৯ জনকে।

কোফিল, আহাদ, মিহির ও জলিলকে গুলি করে হত্যা করে ওই গ্রামে। বাকি কয়েক জনকে ধরে আনা হলো আত্রাই নদীর ধারে।আবারও গুলি সবাই লুটিয়ে পড়লো নদীর জলে। ভাগ্য ক্রমে মৃত্যুযাত্রা থেকে বেঁচে যান ফিরোজ ও আলমগীর ২৪ বছরের টগবগে যুবক দেশের জন্য সেদিন মা বাবা ভাই বোন ছেড়ে আলমগীর ও ফিরোজ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। তাই তাদের খেতে হয়েছিল পাক হানাদার বাহিনীর রাইফেলের তাজা গুলি। সেদিন রাইফেলের গুলিও এই যুবকের প্রাণ কেড়ে নিতে পারেনি। আহত অবস্হায় তিনি পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল নিজ গ্রাম উপজেলার মহাদীঘি গ্রামের এক কৃষকের ঘরে।

কিন্তু বিশ্বাস ঘাতক রাজাকার জানাসহ অন্যরা জুলাই মাসের শেষের দিকে আলমগীরকে ধরে পাক বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এর পর তার আর কোন হদিস মিলেনি।

প্রণে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী কৃষ্ণপুর গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী মোঃআব্দুস ছাত্তার জানান, সেদিন পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে ৩৫ জন মুক্তিকামী মানুষ। এর মধ্যে অলৌকিক ভাবে ৫ জন বেঁচে যান। ১৯৭১ সালের ১০ শে জুলাই আত্রাই পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২ টি বড় বজরা নৌকা যোগে মিরাপুর ও কৃষ্ণপুর গ্রাম ভোর রাতে ঘিরে ফেলে পাক হানাদাররা। ওই দুই গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামি নিরীহ বাঙালিকে ধরে এনে পাক হানাদাররা ছোট যমুনা নদীর পাশে মিরাপুর বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।

বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় ও শহীদদের মা বাবা স্ত্রী সন্তান সরকারি ভাবে কোন স্বীকৃতি পায় নি। দেশের জন্য হাসি মুখে যারা জীবন উৎসর্গঃ করেছেন সে সব শহীদ দের সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে তাদের পরিবারকে সহযোগিতা এবং মিরাপুর বধ্যভূমিতে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি।


প্রিন্ট