ইউপি নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রার্থীরা দৌড় ঝাঁপ,রাজনৈতিক লবিং ও ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন ধর্মীয়,সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে। সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিভিন্নভাবে। নির্বাচনী জয়ী হলে এলাকার উন্নয়নের জন্য কি কি করবেন সেই সব প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন। এবারও দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হবে বলে জানা গেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন। ১৭টির মধ্যে ২টি ঝুলে আছে সীমানা জটিলতার মামলায়। বাকী ১৫টিতে স্বাভাবিক নিয়মেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১ নং সাধুহাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শফি উদ্দিন আহমেদ মিন্টু, সাধুহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দিন,বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা সাধুহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুর রহমান কামাল ও সাবেক চেয়ারম্যান (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মিজানুর রহমান মিজান।
তবে এসব প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে-ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শফি উদ্দিন আহম্মেদ মিন্টু। তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। তার দাদা সাধুহাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত মুনসুর আলী বিশ্বাস ওরফে হারান বিশ্বাস। উচ্চ শিক্ষিত মিন্টু ১৯৯১ সালে ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। তাছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের উপকারের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভদ্রতা, পারিবারিক ঐতিহ্য এবং দলের প্রতি অনুগত্যের কারনে আওয়ামী লীগের অন্য প্র্রার্থীদের তুলনায় তিনি অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন বলে জানা যায়।
এবারে মিন্টুর দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধের প্রতিদ্ব›দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন বলে জানা গেছে। তবে কাজী নাজির উদ্দির সব সময় কৌশলী রাজনীতি করে থাকেন। ২০১১ সালে সাধুহাটি ইউনিয়ন নির্বাচনে জামাত নেতা মাওলানা আতিয়ার রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। একই সাথে কাজী নাজির উদ্দিন ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর রাজনৈতিক কারনে জামায়াতের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান এলাকা ছাড়া হয়ে যান।
কাজী নাজির উদ্দীন বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়ে যান। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের সতন্ত্র প্রার্থী হন এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবার নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি দলীয় মনোনয়নের জন্য জেলা নেতাদের সাথে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
অন্যদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল মন্ডল। তিনি ২০০৪ সাল থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ২০১১ সালের নির্বাচন ও ২০১৬ সালের দলীয় প্রতিকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে দলীয় মনোনয়ন পান তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। পর পর ২ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন ও দলীয় মনোনয়ন পেলেও তিনি পাশ করতে পারেননি।
তবে তিনি এবারও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও সাধুহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুর রহমান কামাল ও সাবেক চেয়ারম্যান (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মিজানুর রহমান মিজান এই দুজন বিএনপির টিকিটে নির্বাচন করবেন বলে এলাকায় প্রচার করছেন। গোপনে ও বিভিন্নভাবে ভোটারদের জানান দিচ্ছেন। তারা কেন্দ্রের সিন্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। কেন্দ্র নির্বাচনের জন্য গ্রীন সিগনাল দিলে নির্বাচনী মাঠে ঝঁপিয়ে পড়বেন বলে জানা গেছে।