পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী সুমন শেখকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় অপর আরেকটি ধারায় তাকে আরও ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত সুমন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের ওহাব শেখের ছেলে।
কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাড অনুপ কুমার নন্দী রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার প্রায় ১০ মাস আগে মামলার বাদী সুজন হোসেনের ছোট বোন রেশমা খাতুনের সাথে সুমন শেখ এর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় রেশমার পরিবারের কাছ থেকে যৌতুকের কথা বলে টাকা নেয় সুমন। টাকা চাওয়া নিয়ে রেশমার সাথে সুমনের পারিবারিক কলোহ লেগেই থাকতো। এর জের ধরে গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখ ভোর রাতে রেশমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সুমন। পরে রেশমার লাশ গুম করতে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে খড়কুটা দিয়ে ডেকে রাখে।
পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়ে রেশমার লাশ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে রেশমার ভাই সুজন হোসেন কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে রেশমার স্বামী সুমন শেখকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রেশমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে সুমন।
আসামি দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত এই রায় ঘোষণা করেছেন।
প্রিন্ট