ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি ৪ তলা ভবন থেকে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করে এর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ওই ছাত্রীর পরিবার স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ি করে এর এর বিচার দাবী করেছেন। স্কুলটির প্রভাতী শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী ওই ছাত্রীর নাম আফিয়া জাহান (১৫), তার শ্রেণি রোল ৫০। সে জেলা শহরের সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ এইচ এম ওবায়দুল্লাহ আমির ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর স্বাস্থ্য সহকারী কুরছিয়া খাতুনের মেয়ে।
ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: মহিতুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির অন্যতম বিদ্যাপীঠ সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী আফিয়া জাহান। প্রতিদিনের মত সোববার ভোরে স্কুলে আসে। সকাল সাড়ে ১০:৩০ টার দিকে টিফিনের সময় শ্রেণিকক্ষের পাশেই স্কুলের একটি চারতলা ভবনের দিকে তকে যেতে দেখে সহপাঠিরা। পরে তাকে খুঁজতে গিয়ে ওই ভবনের চারতলার একটি কক্ষে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে সহপাঠিরা। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্কুলের সহপাঠিরা জানায়, একটি ছেলের সাথে আফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক্য চলছিলো। কিন্তু কিছুদিন ধরে ছেলেটি তাকে এড়িয়ে যাচিছলো। এতে আফিয়া আত্মহত্যা করেছে। তবে মেয়েটির মা তা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করি, দিনের বেলায় বাসা খালিই পড়ে থাকে। আত্মহত্যা বাসায় বসেও করতে পারত। কি কারণে স্কুলে এমন ঘটনা তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। এ ঘটনাকে স্কুল শিক্ষক-ও কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতা বলে অভিযোগ করে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিচার দাবী করেছেন।
ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: মহিতুল ইসলাম জানান, মরদেহের ময়না তদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নথিভূক্ত করে বিষয়টি কারণ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ঘটনার খবর শুনে স্কুল ও সদর হাসপাতালের মর্গে ছুটে যান জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম। তিনি বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। পরিবারকে শান্তনা দেয়ার ভাষা নেই। তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট দেবেন।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি হরচন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দিবা ও প্রভাতী শাখা মিলিয়ে ১৭’শ ছাত্রী লেখাপড়া করে।