বৈরী আবাহাওয়ার পরও পদ্মার অনাবাদি চরে চিনাবাদাম চাষ করে এ বছরও সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চরাঞ্চলের চাষীরা। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে চাষকরা সোনালী ফসল বাদাম ঘরে তুলে তা বিক্রয় করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
অর্থকারী এ ফসল চাষ করে চরবাসীর আর্থিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে। চলতি রবি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে দৌলতপুরের বিস্তীর্ণ চরে চাষ হয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমিতে।
একসময় পদ্মা নদীতে জেগে উঠা বালুচর পড়ে থাকতো। যা চরবাসীর কোন কাজেই আসতো না। জেগে উঠা পদ্মার চরে চাষীরা চিনা বাদাম চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় প্রতি বছরই চাষীদের বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এ বছরও চরে বাদাম চাষ করে চাষীরা সাফল্য পাচ্ছেন। তবে অতিরিক্ত খরার কারনে সেচ দিয়ে বাদাম চাষ করতে গিয়ে চাষীদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তারপরও খরচ বাদ দিয়ে চাষীদের লাভের অংক দ্বিগুন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিঘা প্রতি চাষীদের খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা ।
প্রতি বিঘায় বাদামের ফলন হচ্ছে ৮ মন থেকে ৯ মন। আর বিক্রয় হচ্ছে প্রতিমন ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা দরে। অল্প পরিশ্রমে মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে লাভ বেশী হওয়ায় চাষীরা বাদাম চাষে চরম খুশি। দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ এলাকার বাদমচাষী আব্দুল জাব্বার জানান, এ বছর চরে বাদাম চাষে খরচ বেড়েছে। অতিরিক্ত খরার কারণে সেচ দিয়ে বাদাম চাষ করতে হয়েছে।
তারপরও বিঘা প্রতি ৮/৯ মন হারে বাদম হচ্ছে। খরচ বাদ দিয়ে লাভ হচ্ছে উৎপাদন খরচের প্রায় দ্বিগুন। ক্ষেতে বাদাম ঝরিয়ে শ্রমজীবীদেরও আয় বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষেত থেকে বাদম ঝরিয়ে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা আয় হচ্ছে শ্রমিকদের। এমনটি জানিয়েছেন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সিরাজ মন্ডল।
কৃষি বিভাগ থেকে বাদামের নতুন জাত সরবরাহ সহ প্রণোদনা ও কারিগরি পরামর্শ প্রদান এবং সব ধরণের সহায়তা দেওয়ার ফলে বৈরী আবহাওয়ার পরও বাদাম চাষে চাষীরা এ বছরও সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম। চরাঞ্চলে পড়ে থাকা অনাবাদি জমিতে অর্থকারী ফসল বাদাম চাষ সম্প্রসারিত হলে চরবাসীর স্বচ্ছলতা বাড়বে এমনটি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।