রাজশাহীর তানোরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চুক্তিবদ্ধ কৃষক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে নিম্নমাণের ধান বীজ ধান বলে বিএডিসির কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) দুবইল ও যোগীশো মাঠে আলুর জমিতে ধান চাষ করেন গোলাম রাব্বানী। কিন্ত্ত ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পাকামাত্র অপুষ্ট ধান কেটে ভেঁজা ও কাঁচা ধান চাতালে শুকিয়ে বীজ ধান বলে বিএডিসি’র কাছে বিক্রি শুরু করছেন। এদিকে ভেঁজা ও কাঁচা ধান প্রচন্ড রোদে চাতালে শুকানোর সময় অধিকাংশ ধান ফেটে অপুষ্ট সাদা চাল বের গেছে। বিএডিসির একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে গোলাম রাব্বানী এসব নিম্নমাণের ধান বীজ ধান বলে বিএডিসি’র কাছে বিক্রি করছেন বলেও এলাকার কৃষকদের অভিযোগ।
এদিকে কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৩ জুন রোববার সরেজমিন যোগিশো মোড়ের আক্কাস আলীর চাতালে গিয়ে দেখা যায়, গোলাম রাব্বানী আম গাছের নিচে বসে খোশগল্পে ব্যস্ত আছে। আর কয়েকজন শ্রমিক চাতালে জিরা জাতের ধান শুকানোর কাজ করছে। ধান অপুষ্ট হওয়ায় অধিকাংশ শুকানো ধানে সাদা চাল বের হয়ে গেছে।
এসব ধানের ছবি উঠাতেই শ্রমিকেরা বলেন, মেশিনে ধান কাটা-মাড়াই করায় অনেক ধান থেকে চাল বের হয়ে যাচ্ছে, আবার শুকানোর সময়েও চাল বের হচ্ছে। আমাদের ধারণা এসব ধান থেকে মানসম্মত বীজ হবে না।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এই অঞ্চলে বোরো মৌসুমে ঝড় ও শিলা-বৃষ্টির ভয়ে আলুর জমিতে লাগানো ধান ৮০ শতাংশ পাকতেই কাটা-মাড়াই করা হয়। ফলে আলুর জমিতে লাগানো ধান থেকে মানসম্মত বীজ হবার কথা নয়।
তাহলে কি বিবেচনায় এসব ধান বীজ হিসেবে উচ্চ মুল্যে সংগ্রহ করছে বিএডিসি। আবার ধান রোপণ থেকে শুরু করে কাটা, মাড়াই-শুকানো হয়ে ট্রাকে উঠানো পর্যন্ত বিএডিসির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেখভাল করার কথা। কিন্ত্ত সিংহভাগ সময় তাদের কোনো প্রতিনিধি থাকে না।
সুত্র জানায়, বিএডিসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ একজন কৃষক এক একর জমিতে চাষাবাদ করবে। কিন্তু রাব্বানী বিভিন্ন কৃষকের নামে একাই প্রায় ৩০ একর জমির চুক্তিবদ্ধ করেছে। তার কারনে প্রান্তিক কৃষকেরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম রাব্বানী জানান, বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ কৃষক তিনি। যেভাবেই হোক ভাল মাণের ধান বীজ দিতে হবে। এসব চাল বের হওয়া ধান কি ভাবে দিবেন, বরাদ্দ পেয়েছেন কত টন এবং কতো একর জমি চুক্তিবদ্ধ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ধান নিবে কি নিবে না সেটা বিএডিসি আর আমি বুঝবো। আপনি তো ৫০ কেজির ১৮০০ বস্তা ধান দিবেন, কিন্তু আপনি তো এতো পরিমান জিরা ধান চাষ করেননি পেলেন কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, যে পরিমান ধান দেয়া হবে তার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। আমি এত প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য না। আরো কিছু জানতে হলে বিএডিসি অফিস থেকে জানতে হবে বলে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে বিএডিসির উপ-পরিচালক (বীজ) কে এম গোলাম সরওয়ারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব ব্যাপারে ড: নাইমার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
- আরও পড়ুনঃ আমতলীতে সেতু ধসে বিয়ের মাইক্রোবাস খালে
এ বিষয়ে ড: নাইমার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। যার কারনে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
প্রিন্ট